সামনের নির্বাচনে বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভবনা প্রবল। আশংকা হল এরা ক্ষমতায় গিয়ে আওয়ামীলীগের কাছ থেকে টাকা খেয়ে মামলাগুলি তুলে নিবে বা গতি কমিয়ে দেবে। এখনই মামলা নিয়ে বাণিজ্য চলছে পূর্ণ গতিতে। আওয়ামীলীগের যে কোন চাকর বাকরের কাছেও ৪০০ কোটি টাকা আছে। তাই টাকা খরচ করতে তাদের কোন সমস্যা নাই। বিএনপি বা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতার কাছে রাজনীতি হল একটা ব্যবসার মত। বিএনপির লোকেরা ১৫ বছর রাজনীতি করে কোন আয় করতে পারেনি বরং জান বাঁচাতে ব্যয় হয়েছে ব্যাপক। এখন আওয়ামীলীগ টাকা দিতে চাইলে তাদের অনেকেই নিবে এবং ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হবে।
বিএনপি এই ধরণের কাজ করতে পারে। সেই ধরণের সম্ভবনাই বেশী। যদি তা-ই ঘটে সেই ক্ষেত্রে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ ছাত্রদের জীবন নিয়ে পৃথিবীতে বাঁচা কঠিন হয়ে যাবে। নেতাদের গলায় ফাঁসির দড়ি ঝুলবে। আর সাধারণ ছাত্রদের খুন হওয়া বা গুম হওয়া শুরু হয়ে যাবে। বিএনপি ক্ষমতায় আসার আগেই যে দাপট দেখানো শুরু করেছে ক্ষমতায় গেলে কী করবে সেটা অনুমান করা যায়। ওনাদের বড় নেতারা এখন ভারত প্রেম প্রদর্শন করার চেষ্টা করছে। অথচ ওনারা বুঝতে পাড়ছে না যে এখন বরং ভারত বিদ্বেষ প্রদর্শন করলে ভোট বাড়বে। ভারত প্রেম দেখালে ভোট কমে যাবে। বাংলাদেশে কিছু আওয়ামীলীগার ছাড়া কোন মানুষ ভারতের আধিপত্য প্রদর্শনের চেষ্টাকে সমর্থন করে না। আমার ধারণা সেনাবাহিনীর ৯৯।৯৯% সদস্য এই আধিপত্য প্রদর্শনকে সমর্থন করে না।
এই সব কারণে জুলাইয়ের গণ আন্দোলনের ছাত্রদের উচিত রাজনৈতিক দল গঠন করা। নইলে সামনে তাদের জন্য কঠিন দিন অপেক্ষা করছে। সময়ের কাজ সময়ে করতে হয়। তখন কিছু করার থাকবে না। এছাড়া এই দেশের অধিকাংশ জনগণ প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলির উপরে অতিষ্ঠ। তারা চায় ভালো মানুষ রাজনীতিতে আসুক। ছাত্ররা জীবন দিয়ে এবং নির্যাতিত হয়ে প্রমাণ করেছে যে তারা সৎ এবং যোগ্য। সম্মিলিত ছাত্র জোট তৈরি করে রাজনৈতিক অঙ্গনে তাদেরকে পা দিতে হবে। এছাড়া কোন বিকল্প নাই। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে সমন্বয়কদের দুই পয়সা দাম তারা দিবে না বরং তাদের জীবন নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে যাবে। তখন আওয়ামীলীগ রাস্তায় প্রকাশ্যে আসবে বিএনপির সহায়তায়।
আগের পোস্টে আমি চিন্ময় ব্রহ্মচারীকে নিয়ে সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছিলাম। কিন্তু সরকারের পরবর্তী কয়েক দিনের কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে সরকার বুঝে শুনে এবং পরিকল্পিতভাবে চিন্ময়কে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার পরবর্তী পরিস্থিতি তারা মনে হচ্ছে সামাল দিতে পেড়েছে। ভারতকেও কড়া বার্তা দিয়েছে। গোয়েন্দারা চিন্ময়ের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেছিল এবং আরও বড় কিছু সে করার পরিকল্পনা করছিল সেটা তারা জানতে পেড়েছিল। যে কারণে ঝুকি থাকলেও তারা চিন্ময়কে গ্রেফতার করেছে এবং মনে হচ্ছে পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা পারবে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলেই মনে হচ্ছে। সরকারকে এতো দিন দুর্বল মনে হলেও মনে হচ্ছে চিন্ময়ের ব্যাপারে তারা শক্ত অবস্থানে আছে।
বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ কখনও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বিশ্বাস করে না। তাই ভারত এবং আওয়ামী লীগের যৌথ প্রচেষ্টায় দাঙ্গা বাঁধানোর যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল সেটাও ভেস্তে গেছে বা যাবে। আসলে আওয়ামী লীগ বারবার ভুল করছে এবং গত কয়েক মাসে তারা অরাজকতা সৃষ্টির যে প্রচেষ্টাগুলি করেছে সেগুলির কারণে আওয়ামী লীগ নিজেকে আরও ছোট করছে। শেখ হাসিনার উসকানি মুলক ফোন কলের কারণে আওয়ামীলীগ সম্পর্কে মানুষের ধারণা আরও খারাপ হবে এবং শেখ হাসিনার প্রকৃত রূপ মানুষের কাছে প্রকাশ পাবে।
বিঃ দ্রঃ - পোস্টে ছাত্র বলতে ছাত্র এবং ছাত্রী উভয়কেই বুঝানো হচ্ছে।