হজরত মুসা (আঃ) অত্যধিক বলশালী একজন মানুষ ছিলেন। ওনার শরীরের শক্তি সম্পর্কে কোরআনে উল্লেখ আছে। সুরা আল কাসাসের ২৮ নং আয়াতে আছে;
নারীদ্বয়ের একজন বলল, হে আমার পিতা! আপনি একে মজুর নিযুক্ত করুন, কারণ আপনার মজুর হিসেবে উত্তম হবে সে ব্যক্তি, যে শক্তিশালী, বিশ্বস্ত।
এই আয়াতে হজরত শোয়াইবের (আঃ) দুই মেয়ের মধ্যে একজনের কথা বলা হয়েছে, যিনি বলেছেন যে, হজরত মুসা (আঃ) শক্তিশালী ছিলেন।
হজরত আজরাইল (আঃ) ওরফে মালাকুল মউত মানুষের বেশে হজরত মুসার (আঃ) কাছে গিয়েছিলেন তাঁর জান কবচের জন্য। তখন হজরত মুসা (আঃ) হজরত আজরাইলের (সাঃ) গালে এতো জোরে থাপ্পড় দেন যে আজরাইলের (সাঃ) একটা চোখ কানা হয়ে যায়। আজরাইল (আঃ) তখন আল্লাহর কাছে ফিরে যান এবং আল্লাহকে বলেন যে আপনি আমাকে এমন এক বান্দার নিকট পাঠিয়েছেন, যিনি মরতে চান না। আল্লাহতায়ালা তখন আজরাইলের (আঃ) চোখ ভালো করে দেন এবং বলেন যে তুমি আবার ওনার কাছে যাও এবং ওনাকে বল যে, আপনি কতদিন বাঁচতে চান? তারপরে তুমি একটি ষাঁড়ের দেহে হাত রেখে বলবে, এর মধ্যে যত লোম আছে ততদিন আপনার হায়াত বৃদ্ধি করা হবে। আল্লাহর নির্দেশে আজরাইল (আঃ) হজরত মুসার (আঃ) কাছে গিয়ে তাই করলেন। মুসা (আঃ) আজরাইলকে (আঃ) বললেন, তারপরে কী হবে? তিনি বললেন, আপনি মৃত্যুবরণ করবেন। তখন মূসা বললেন, তাহলে এখুনি হউক। (সূত্র - বুখারী হা/৩৪০৭; মুসলিম হা/২৩৭২; মিশকাত হা/৫৭১। তবে ঘটনাটা এই হাদিসের আলোকে নিজের মত করে বর্ণনা করেছি)
হজরত মুসার (আঃ) ঘুষি খেয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল। একদম শিশুকালে হজরত মুসা (আঃ) ফেরাউনকে চড় মেরেছিলেন কিংবা কোন কিছু দিয়ে আঘাত করেছিলেন। ফেরাউন ভীষণ ক্ষেপে গিয়েছিলেন শিশু মুসার (আঃ) উপরে। আসলে হজরত মুসা (আঃ) এর জীবনটা অনেক বেশী ঘটনাবহুল চাঞ্চল্যকর ছিল। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর জীবনে অনেক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। মাত্র ৩ জন পয়গম্বরের সাথে আল্লাহ সরাসরি কথা বলেছেন। তারা হলেন রসুলে করিম হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ), হজরত আদম আঃ এবং হজরত মুসা (আঃ)। কিন্তু একমাত্র হজরত মুসা (আঃ) পৃথিবীতে অবস্থান করে আল্লাহর সাথে কথা বলেছেন। যে কারণে ওনার উপাধি হল 'কলিমুল্লাহ'। 'কলিমুল্লাহ' অর্থ হল যিনি আল্লাহর সাথে কথা বলেন। পবিত্র কোরআনে সকল নবী এবং রসূলের মধ্যে হজরত মুসা (আঃ) এবং তাঁর কউম বনি ইসরাইল সম্পর্কে সবচেয়ে বেশী আয়াত আছে। কোরআনে ১৩৬ বার হজরত মুসার (আঃ) নাম এসেছে। চেষ্টা করবো পরবর্তী কোন পোস্টে/ পোস্ট সমুহে হজরত মুসার (আঃ) জীবনের এই সব ঘটনা নিয়ে লিখতে।
হজরত মুসা (আঃ) আজরাইলকে থাপ্পড় দিয়ে কানা করে দিয়েছিলেন। তাই বলে এই ঘটনার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের উচিত হবে না মৃত্যুকালে আজরাইলের (আঃ) সাথে তর্ক বা মারামারির চেষ্টা করা। কারণ হজরত মুসা আল্লাহর প্রিয় নবী ছিলেন। আমরা সাধারণ মানুষ মাত্র।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:৪৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


