জীবন-কথাঃ ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার
ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁর উপজেলার পাঁচুয়া গ্রামে ১৩২৬ বঙ্গাব্দের ২৬ আশ্বিন আবদুল জব্বার জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম শেখ হাছেন আলী ও মাতা সাফাতুন্নেসা। জব্বার ছিলেন পিতামাতার প্রথম সন্তান। স্থানিয় ধোপাঘাট কৃষ্ট বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন।পরিবারের দারিদ্রতার কারনে তাঁর লেখাপড়ার পরিসমাপ্তি ঘটে। পিতাকে কৃষি কাজে সহায়তা করার জন্য তাঁকে লাঙ্গল নিয়ে মাঠে যেতে হয়। তাঁর স্বভাবের মধ্যে হেঁয়ালি ভাব ছিল। পিতামাতার শাসেেনর ভয়ে মাঝেমাঝে তিনি বাড়ি ছেড়ে উধাও হয়ে যেতেন।একবার তিনি ঘর থেকে পালিয়ে ট্রেনে চড়ে নারায়নগঞ্জ চলে যান। নারায়নগঞ্জ জাহাজ ঘাটে এক জন ইংরেজের সাথে পরিচয় হয়। ঐ ইংরেজের সহায়তায় একটি কাজ নিয়ে তিনি বার্মা চলে যান। এজন্য তিনি দীর্ঘকাল বার্মায় আবস্থান করেন। ঐ সময় তিনি ইংরেজী ভাষা শিখেন। এক নাগারে দশ-বারো বছর বার্মায় কাটানোর পর একদিন তাঁর জন্মভূমির কথা ও মায়ের কথা মনে পড়ে। মায়ের স্নেহের প্রবল টানে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। নিখোঁজ পুত্রকে পেয়ে মা সাফাতুন্নেসা আনন্দে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। প্রিয় পুত্রকে তিনি বুকে টেনে নেন। ইতিমধ্যে আবদুল জব্বার এর পিতার মৃত্যু হয়েছিল। দেশে ফিরে তিনি ন্যাশনাল গার্ড বাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি ছোট-খাটো ব্যবসা-বানিজ্য করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ১৯৪৯ সালে পাঁচুয়া গ্রামের আমেনা খাতুন এর সাথে সাফাতুন্নেসা পুত্রের বিবাহ দেন। তাদের একজন পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহন করেন। পুত্রের নাম রাখা হয় নূরুল ইসলাম বাদল। এর কিছু কাল পর শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন। পাকিস্তানের প্রতি আবদুল জব্বার এর আস্থা ছিলনা। বন্ধু-বান্ধব, আত্মিয়-স্বজন, পরিচিতজন ও গ্রামবাসীদের সাথে আলোচনার সময় পাকিস্তানকে তিনি ফাহিস্তান বলে উপহাস করতেন।
১৯৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গনে হাজার-হাজর সংগ্রামী জনতার সমাবেশে আবদুল জব্বার যোগদান করেন। আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশ গুলি চালায়। বুলেট বিদ্ধ হয়ে আবদুল জব্বার গুরুতর আহত হন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঐ দিন রাতে হাসপাতালে তিনি ইহকাল ত্যাগ করেন। তাঁকে আজিমপুর গোরস্থানে আফন করা হয়।
আবদুল জব্বার ১৯৫২-র গৌরবময় ভাষা আন্দোলনের একজন অমর শহীদ। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের অন্যতম ভাষা হিসাবে বাংলা শাসনতান্ত্রিক স্বীকৃতি লাভ করে। বাংলাদেশ সরকার ২০০০ সালে তাঁকে মরনোত্তর একুশে পদক প্রদান করেন।
আলোচিত ব্লগ
ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।
ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন
সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।
সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা
সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন
...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না
...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না
ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়
প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন