এক বুক আশা আর দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে যেদিন প্রথম ফার্মগেট ওভারব্রিজের উপর দিয়ে কোচিং অভিমুখে যাচ্ছিলাম, সেদিন নিজের মধ্যে কিছু একটা অনুভব করছিলাম। এটাকেই সম্ভবত দৃঢ়প্রত্যয় বলে। ওই অচিন শহরের বুকে নিজের একটা পরিচয় খুঁজে পাওয়ার প্রত্যয়। এই গল্প একটি স্বপ্নবাজ ছেলের সংগ্রামের। সেই ছেলেটির ভুমিকায় অভিনয় করেছি আমি, আমার বন্ধুরা, আমার সকল সহপাঠীরা।
কলেজ জীবনের দুটো বছর কিছু একটা (সেটাকে লেখাপড়া বলতে লজ্জা লাগছে) করার পর আমাদের কোচিং অভিমুখী হওয়ার প্রধান কারন হচ্ছে আমরা একটা দিক নির্দেশনা চাই, যা অবশ্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমি সবচেয়ে বেশি সমস্যা বোধ করেছি এই দিকনির্দেশনা নিয়ে। প্রথম দিন কোচিং এ যাওয়ার সাথে সাথেই আমাকে কেজি দশেক গাইড দেওয়া হল। সেগুলো বাসায় টেনে সেই যে এনেছিলাম, আজও সেগুলো অমনই আছে। তবে সেগুলো আমার ঘরের কিছু তেলাপোকা আর নোংরা কাপড়ের সঙ্গ পেয়েছে অবশ্য। কোচিং এ বিভিন্ন দিন বিভিন্ন ভাইয়ার আগমনের সাথে উদ্ভুত হতো কিছু মতাদর্শ যা আমাদের আশার সাম্পানে তেল না দিয়ে ফুটোয় করতো বেশি। আর সেই মতাদর্শ গুলো বাড়ি ফেরার পথে বাসের মধ্যে ঝুলন্ত বান্দর স্বরূপ আমাদের মস্তিষ্কে বিবর্তিত হয়ে যে মহৎ এবং অপ্রতিরোধ্য যুদ্ধ পরিকল্পনায় পরিনত হতো তার ফলাফল আমি আগের লেখায় আপনাদের জানিয়েছি। আমি এখনও আমার এমন কোন বন্ধুকে পাইনি যে ঠিক করে বলতে পেরেছে যে আসলে এই তিন মাসে কিভাবে পড়াশুনা করা উচিত!
একটু ঠাণ্ডা মাথায় ভাবলেই আমরা বুঝতে পারবো, যে বই দুই বছরেও আমরা স্যারদের লেকচার, প্রাইভেট টিউটরদের লেকচার শুনেও শেষ করতে পারিনি তা কিভাবে তিন মাসে সপ্তাহে তিন দিন তিন ঘণ্টার লেকচার (প্রতি লেকচারে তিনটা অধ্যায় !!!! )শুনে শেষ করে ফেলবো। কিন্তু তবুও আমরা এটা বুঝবোনা। আমিও আমার সময় বুঝিনি, আমার পূর্ববর্তীরাও বুঝিনি, সম্ভবত পরবর্তীরাও বুঝবেনা। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, “ তাইলে ভাইজান আপনি আজাইরা প্যাঁচাল পারতাছেন কান? ভাগেন মিয়া।” ভাইরে, বুঝবার দরকার না মনে করলে বুইঝবেন না, তয় মিলাইয়া দেইখেন। সুকি থাকতি বুতি কিলেয়।
আজ এখানেই শেষ করছি। পরবর্তী লেখায় আপনাদের জানাবো আমার মেসে থাকার, খাওয়ার এবং পড়াশুনা করার অভিজ্ঞতা। ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। মনে রাইখেন, আমি কিন্তু উনিবারচিটি কুচিং করেছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



