ঘটনাটি ২০০৯ সালের। বাসে করে ফার্মগেট থেকে উত্তরা যাচ্ছি। আমার সামনের সিটে দুইজন ভদ্রলোক বেশ উচ্চস্বরেই গল্প করতে করতে যাচ্ছিলেন, বাসে লোক কম থাকায় তাদের কথা বেশ পরিষ্কারই শুনতে পাচ্ছিলাম। একজন আরেকজনকে বললেন, ‘আপনার মেয়েকে কোন মেডিকেলে ভর্তি করাবেন বলে ঠিক করলেন’? অন্যজন বললেন, ‘আরে ভাই, মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট আছে না, যেখানে যাব, সেখানেই তো আমার মেয়েকে নিয়ে নিবে’। ঘটনাটা এখানেই থেমে গেলে হয়ত আমি আর লিখতাম না এই গল্পটা। বাস আরও কিছুদূর এগোনোর পরে তাদের পরে যখন তাদের কাছে ভাড়া চাওয়া হল, তারা জবাব দিলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধা। কথাটি শোনার পরে খুব বলতে ইচ্ছে হচ্ছিল, “আঙ্কেল, ২০ লাখ টাকা দিয়ে মেয়েকে মেডিকেলে পড়াতে পারছেন। আর মাত্র ২০ টাকার জন্য এত সম্মানিত একটা অর্জনকে লোকের হাসিঠাট্টার বস্তুতে পরিণত করছেন!”
জানি, আমার এই লেখা অনেকেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে করবেন। তবে আমার বাবাও একজন মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু ‘সার্টিফিকেট’ধারী না হওয়ায় এতটা প্রিভিলেজ আমরা পাইনি। তবে প্রিভিলেজ পাওয়া না পাওয়া নিয়েও কোন আক্ষেপ নাই, আক্ষেপটা শুধুমাত্র এসব ‘সার্টিফিকেট’ ধারী মুক্তিযোদ্ধাদের দাম্ভিকতায়। এনাদের সনদের অপব্যবহারে কারণে তরুণদের অনেকেই আজ বিরক্ত। কারণ যোগ্য হওয়ার পরেও শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট তাদেরকে বঞ্চিত করছে অনেক কিছু থেকেই। মুক্তিযুদ্ধ তো সমানাধিকারের জন্যই হয়েছিল, তবে আজ কেন পদে পদে এত বিভাজন, এত বৈষম্য!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



