somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

স্বাগত অথবা কুশল-প্রশ্ন
ফিল্ম দেখি অনেক, গান শুনি অনেক, পাঠক হিসেবে একদমই নতুন, তেমন পড়তে জানি না আর লেখক হিসেবে তো একদমই শিশু। তবুও পড়তে চাই, জানতে চাই, লিখতে চাই, জানাতে চাই, বানাতে চাই, দেখাতে চাই; চাইতে তো আর ক্ষতি নাই!

আমাদের দেশের নাৎসি পার্টি ছিলো আওয়ামী লীগ

১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার দেখা সবচেয়ে বর্বর ফিল্ম হলো রাশিয়ান ফিল্ম Come and See.
আজ মেজর বজলুল হুদাকে হত্যার বিবরণ যখন সামুতে পড়লাম, আমার গায়ের সবগুলো লোম দাঁড়িয়ে গিয়েছিলো। শেখ হাসিনা নিজে উনার বুকে পা দিয়ে ধরে জবাই করিয়েছিলো, রক্ত তার শাড়িতে এসে লেগেছিলো, সেটা হাসিনা উপভোগ করছিলো, শুধু কল্পনা করেছি চোখ বন্ধ করে, গা হিম হয়ে গেসে এটা ভাবতে যে এই সাইকোপ্যাথ মহিলা ১৫ বছর আমাদের দেশ চালাইসে।
পিলখানা হত্যার একটা ইনসাইড আউট পড়ছিলাম আজকে সামুতে, ওখানে পড়লাম কত্ত গভীর নীল নকশা করে ভারতবিরোধী যত উচ্চপদস্থ অফিসার ছিলো, তাদের মারা হইসিলো এবং ভারতকে কিভাবে ২০০১ এর সীমান্তযুদ্ধে ১৫০ বিএসএফ নিহতের প্রতিশোধ নিতে সাহায্য করেছিলো হাসিনা। সেই প্রতিশোধ নেয়ার মাধ্যমে হাসিনা বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে পঙ্গু করে দেয়, যেন ভারতের সাথে তার লিয়াজুতে কেও আর সমস্যা না করে। এটা ক্লিন একটা ডিল ছিলো, Give Some, Take Some টাইপের ডিল।
১৯৮৬ এর নির্বাচন এর আগেও, এরশাদ এর পাতানো নির্বাচন বিএনপি আর আওয়ামী লীগ দুই দলই বয়কট করলেও আওয়ামী লীগ মাত্র ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে এরশাদের কাছে বিক্রি হয়ে যায় এবং সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেই নির্বাচনকে বৈধ বানায়। এগুলো কোনো রিউমার নয়, ওবায়দুল কাদের নিজে সেনাবাহিনীর ইন্টারোগেশন এ এগুলো কথা বলসে, বলসে এটা নাকি সামান্য লোভ আর দলের স্বার্থে করা। অথচ এই দল ঐদিন গণতন্ত্র বিক্রি না করে দিলে ১৯৯১ অব্দি অপেক্ষা করা লাগতো না গণতান্ত্রিক নির্বাচন এর জন্য, ১৯৯০ এ শতাধিক মানুষ মারা যেতো না।
২০০৯ এর পর থেকে বাংলাদেশে যতোটা বাকস্বাধীনতা মরে গিয়েছিলো ততোটা ১৯৭৫ এর পরে আর কখনো হয়েছে বলে আমার জানা নাই। ২০০৯ এর পরে কত পরিমাণ মানুষ যে গুম হইসে, কতজনকে যে মিথ্যা মামলায় জেলে ঢুকানো হইসে, কত মানুষকে যে মেরে ফেলসে রাতের অন্ধকারে এটার কোনো হিসাব নাই। এখন আয়নাঘরের যেসব ঘটনা উঠে আসছে, গুম থেকে ফিরে আসা মানুষরা যেসব ঘটনা বলতেসে, হত্যাকাহিনী আমরা যেগুলো শুনতেসি এগুলো জাস্ট Tip of The Iceberg, যেগুলো আমরা কোনোদিনই জানতে পারবো না ঐ ঘটনার সংখ্যা যেগুলো আমরা জেনেছি এবং জানবো সে ঘটনার সংখ্যা থেকে অনেক অনেক বেশি।
২০০৯ থেকে স্কুলে পড়সি, কলেজে পড়সি, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি, কোনোদিন জানি নাই ১৯৭৪ এ নাকি এত ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হইসিলো যেটার সরকারি হিসেবে মৃত্যু ৫০,০০০ আর বেসরকারি হিসেবে মৃত্যু ১৫ লক্ষেরও বেশি। কোনোদিন জানিই নাই ২০০৬ অব্দি বাংলাদেশে কি পরিমাণ বাকস্বাধীনতা ছিলো যে ক্ষমতাসীন দল বিএনপির নেতা তারেক জিয়াকে টক শো তে প্রেজেন্টার ১ ঘন্টা জেরা করতে পারতো এবং সেগুলোর জবাব দিতেও সরকার অপারগ ছিলো। কল্পনাই করা যায় না এভাবে কোনো টক শোতে আওয়ামী লীগ কোনো নেতাকে প্রশ্ন করছে কেও। কোনোদিন জানতামই না যে দেলোয়ার হোসেন এরশাদ মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলসেন, মেয়েরা যেন নিরাপদ এ পড়াশোনা করতে পারে, চাকরি বাকরি করতে পারে এগুলো নিয়ে কথা বলসেন। অথচ দেখানো হতো উনার মতো লোক বেঁচে থাকলেই দেশ জঙ্গিদেশ হয়ে যাবে। উনার নামে যত ক্লেইম, যত কেইস, ঘাটতে গিয়ে দেখলাম সবগুলায় প্রমাণ আর সাক্ষী সব আওয়ামী লীগ এরই দালালরা। অথচ উনার নিজের এলাকা, পিরোজপুর এর লোকেরাই এসকল অভিযোগ অস্বীকার করসে। কোনোদিনই জানতাম না যে বাংলাদেশে কিভাবে ইসলামোফোবিয়া ছড়ানো হইসে, কিভাবে দাড়ি টুপি পড়াকেই জঙ্গি আর শিবির ট্যাগ দেয়াকে মানুষের মগজে ঢুকানো হইসে। ২০১৩ এর শাপলা চত্ত্বর হত্যাকে সরাসরি অস্বীকার করসে শেখ হাসিনা সংসদ এ দাঁড়িয়ে, যেভাবে ২৪ এর আন্দোলন এর শহীদদেরকে অস্বীকার করসে।
যে দল এতকিছু মুছে ফেলতে পারে, সেই দল কি গুম আর হত্যার ইতিহাস মুছতে বাকী রাখসে? পিলখানা হত্যার পরে ৩০ ঘন্টা ঐ জায়গাটা পুলিশের দখলে ছিলো, ৩০ ঘন্টা কি যেকোনো প্রমাণ লোপাটের জন্য কাফি না? আমরা যেগুলো জানতে পারছি, এসব হলো খুচরা বেঁচে যাওয়া প্রমাণ। সব আসল প্রমাণ লোপাট হয়ে গেসে, আমরা কোনোদিনই জানতে পারবো না এমন ঘটনা সহস্রাধিক।
৭২-৭৫, ৮৬, ৯৬-০১ এ ওদের কালো হাতের কাজ, ২০০৯-২০২৩ অব্দি ওদের করা বর্বরতা, তনু হত্যা থেকে সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রলীগ নেতার করা ধর্ষণ এবং তাদের অতি সহজেই বেঁচে যাওয়া, অসংখ্য মানুষকে গুম আর বিচ্ছিন্ন হত্যা, বেশ অনেকগুলো গণহত্যা, আয়নাঘর, ২০২৪ এর গণহত্যা সব মিলিয়ে এগুলো আমার কাছে Come and See মুভির চেয়ে বেশি বর্বর লেগেছে। মনে হয়েছে শেখ হাসিনার রেজিম Come and See মুভিরই একটা সিরিজ আকারে এডাপটেশন যার ৪ টা সিজন আছে।
শেখ হাসিনা এমন একটা স্বৈরাচার ছিলো যার মধ্যে আপনি হিটলার, কিম জং উন,স্টালিন মুসোলিনি সবারই ছায়া পাবেন। সবচেয়ে বেশি পাবেন তার বাবার ছায়া।
শেখ হাসিনা শুধু সুযোগ পায় নি ইন্টারনেট আর আধুনিক যুগ হবার কারণে, পেলে সে হিটলারের চেয়ে বেশি হত্যা করতো। আর কিম জং উনের মতো তো বানিয়েই ফেলেছিলো দেশকে, মোড়ে মোড়ে বাবার মূর্তি, শেখ মুজিবের পায়ের স্পর্শওয়ালা পবিত্র মাটি দিয়ে সংগ্রহশালা বানাইসিলো, এগুলোর সাথে কিম জং উনের নর্থ কোরিয়ার তফাৎ আর কতটুকুই বা?
আমাদের দেশের নাৎসি পার্টি ছিলো আওয়ামী লীগ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কথা: দাদার কাছে—একজন বাবার কিছু প্রশ্ন

লিখেছেন সুম১৪৩২, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৫



দাদা,
কেমন আছেন? আশা করি খুবই ভালো আছেন। দিন দিন আপনার ভাই–ব্রাদারের সংখ্যা বাড়ছে—ভালো তো থাকারই কথা।
আমি একজন খুবই সাধারণ নাগরিক। ছোটখাটো একটা চাকরি করি, আর নিজের ছেলে–মেয়ে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×