১৯৪১ সালের ১১ই অক্টোবর বাংলায় ১৫ মিনিটের সাপ্তাহিক সম্প্রচার শুরুর মাধ্যমে যাত্রা হয়েছিল বিবিসি বাংলার রেডিও কার্যক্রমের। পরে পর্যায়ক্রমে সংবাদ সম্প্রচার শুরু হয় ১৯৬৫ সালে। ১৯৭১ সালে মুলত আমি বিবিসি বাংলা শুনতে শুরু করি । সিরাজুর রহমান আর আলেয়া রহমান একে একে সংবাদ পড়তেন । কণ্ঠ গুলো এত বেশি পরিচিত যে তারা আমাদের মস্তিস্কে গেথে আছেন । ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের রনাংগনের খবর দিতেন তারা । এর কিছু আগে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র দিয়ে আমাদের সান্ধ্যকালিন গুপ্ত জীবন শুরু হত কারন পাক হানাদার সেনা , তাদের দালাল , রাজাকারদের চোখে রেডিওতে বাংলাদেশ সম্পর্কিত খবর শোনাই অপরাধ ছিল । একারনে আমরা রেডিও টুলের উপর রেখে গোল হয়ে ঘিরে প্রায় কান লাগিয়ে শুনতাম নিষিদ্ধ সব রেডিও ষ্টেশনের খবর । কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত ?
বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের ৩৮২টি পদ শূন্য করার প্রস্তাব করেছে, যার উদ্দেশ্য ২৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ড (৩২০ কোটি টাকার বেশি) সঞ্চয় করা। এটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বটে । তবে বার্ষিক মোট ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ড সঞ্চয়ের অংশ হিসেবে সিবিবিসি ও বিবিসি ফোরকেও অনলাইনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিবিসি বলছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সমন্বিত চাপই 'তাদের এ কঠিন সিদ্ধান্তের' দিকে নিয়ে গেছে। তারা আরও বলেছে যে ওয়ার্ল্ড সার্ভিসকে আরও আধুনিক, ডিজিটাল ও সুবিন্যস্ত করার কৌশলকে সমর্থন করতে এ পরিকল্পনা সহায়তা করবে।
বিবিসি রেডিওতে শোনা বন্ধ হলেও অনলাইনের ছাপার অক্ষর এখনও পড়ি নিয়মিত । রেডিওর জায়গা দখল করেছে পি সি আর বড় স্ক্রিনের টি ভি । সুবিধা হয়েছে এখন সচিত্র দেখতে পাই সব কিছু । বিবিসি বাংলা ছাড়াও আরও যেসব ভাষার রেডিও সম্প্রচার বন্ধ হচ্ছে তার মধ্যে আছে আরবি, পার্সিয়ান, চীনা, কিরগিজ, উজবেক, হিন্দি, ইন্দোনেশিয়ান, তামিল ও উর্দু। আমাদের স্মৃতিবহুল একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি আমরা দেখে যেতে পারলাম এতেই আনন্দ , দুঃখ সবকিছু ।