বেশ কিছুদিন আগেই দৈনিক পত্রিকায় ঢাকা শহরের কবরস্থানের কবরের জায়গার মুল্য এবং চলতি বর্ধিত মুল্য দেখে বেশ হতবাক হলাম । কোটি টাকায় একটি মৃতদেহ ধীরে ধীরে মাটির সাথে মিশে যাবার জন্য কবরখানা নামের ব্যয়বহুল প্রকল্প বানানো হয়েছে । নিচে যে ছবি দিলাম তা বাদে দাম দেয়ায় সমর্থ নয় এমন মৃতদেহ বিনামুল্যে অস্থায়ী গোর ব্যাবস্থার সন্ধান পেলাম না । মোহাম্মাদপুরের তাজমহল রোডে একটি কবরখানা আছে যেখানে ৭৯ সালে আমেরিকায় নিহত এক বন্ধুর দাফনে গিয়েছিলাম । খোলামেলা মাঠের পাশে বেশ নিরালায় বন্ধুকে শুইয়ে দিলাম । প্রায় চার দশক বাদে আরেক বন্ধুর মাকে কবর দিতে গিয়ে স্তম্ভিত আমি । এক হাত বাই পাচ হাতের কবরে বন্ধু মাশুকের ওপর আরও ৯ জন শুয়েছেন । দুটি কবরের পাশ দিয়ে কোন দেয়াল নেই । পিচ্চি সাইনবোর্ড দেখে শনাক্ত করতে হয় কে কোন লেয়ার মানে কার ওপরে কে অবস্থান নিয়েছে । ব্যাপারটি আমার ভাল না লাগলেও এটাই বাস্তব । এরপর সরকারের সংস্কার কাজে একটি কবরের ছোট জায়গা এখন প্রায় ২ কোটি টাকা । মক্কাশরীফে আমার ভাবীর বাবা শুয়ে আছেন । তার পুত্ররা দেখে এসেছেন বাবার কবর । কাছ থেকে নয় । গেট থেকে একজন স্থানটি দেখিয়ে দিল । ওরা গোটা কবরের হিসাব রাখে অফিসের খাতায় , এখন তো কম্পিউটারাইজড ব্যাবস্থা । সেখানেও দুই বছরের বেশি সময় নেয় না একটি মুর্দার দেহ বিলীন হতে । দুবছর বাদে আবার নতুন মুর্দা দাফন হবে । পিকিং এ এরকম একজনের কবর দিতে গিয়ে শুনলাম এই চুক্তি ২৫ বছর মেয়াদি । ২৫ বছর পর আবারো নবায়ন করা যাবে । বিদেশি বলে টাকার পরিমান বেশি । ওখানে অল্প খরচে স্বল্প মেয়াদি কবর আছে ।
বর্তমান সরকারের আমলে দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে মুর্দার দাফন মুল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ।
এর থেকে যারা দেহ পুড়িয়ে ছাই বানিয়ে নিষ্কৃতি পাচ্ছে তারা একদিক দিয়ে বেচে গেলেন ।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:১৯