somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কলাপাতায় খাবার খাওয়া কি স্বাস্থ্যের জন্য ভাল? [/sb

০৮ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ১২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




কলাপাতায় খাবার খাওয়া কি স্বাস্থ্যের জন্য ভাল? খেলে কী কী উপকার মিলতে পারে?


গাছের পাতাকে থালা বানিয়ে তাতে খাবার বেড়ে দেওয়ার চল এ দেশে নতুন নয়। বিয়েবাড়িতে যখন হাতে কাচের থালা ধরে ঘুরেফিরে খাবার খাওয়ার প্রচলন হয়নি, তখন অতিথিকে চেয়ারে বসিয়ে পাতপেড়ে খাওয়ানোই ছিল খাতির-যত্নের আদর্শ নমুনা, আর সেই পাত তৈরি হয় পাতা দিয়েই। হয় শালপাতা, নয়তো কলাপাতার উপর পড়ত গরমাগরম লুচি-ছোলার ডাল কিংবা পোলাও-মাংস। এ যুগে শালপাতার থালার দেখা মেলে কালে ভদ্রে। কোনও কোনও গ্রামীণ পরিবেশবান্ধব রিসর্টে গেলে দেখা যায় ধোঁয়া ওঠা গরম ভাত বেড়ে দেওয়া হচ্ছে শালপাতা, পদ্মপাতা কিংবা কলাপাতায়। এর মধ্যে কলাপাতার ব্যবহার বহুল প্রচলিত এবং সম্ভবত খাবার পরিবেশনের জন্য এর ব্যবহার সব থেকে পুরনোও।

ইতিহাস বিষয়ক নানা গবেষণাজাত তথ্য মানলে কলাপাতার ব্যবহার হচ্ছে খ্রীষ্টপূর্ব ২০০০ সাল থেকে। অর্থাৎ আজ থেকে ৪০০০ বছর আগেও মানুষ কলাপাতায় খাবার খেতেন। আর এখনও দক্ষিণ ভারত, পশ্চিমবাংলা-সহ পূর্বভারতের বহু রাজ্যে সেই কলাপাতাতেই খাবার খাওয়ার চল রয়েছে। কালের নিয়মে নষ্ট হয়ে যায় অনেক কিছুই। কলাপাতা কোনও কারণে টিকে গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, কলাপাতা নতুন করে ফিরেও আসছে। খাবার পরিবেশন থেকে শুরু করে পরিবেশ বান্ধব প্যাকেজিং কলাপাতা ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে বিদেশ বিভুঁইয়েও।





কেউ কলাপাতা দিয়ে বিশেষ ধরনের কাগজ বানিয়ে প্যাকেজিং করছেন। তাইল্যান্ডের বাজারে আবার কলাপাতাতেই মুড়ে বিক্রি হচ্ছে শাক-সব্জি-ফলমূল। কলাপাতাতে মুড়ে ফাস্ট ফুড বিক্রি করা হচ্ছে মেক্সিকোয়। ফিনল্যান্ডে বহু বছর ধরে এক বিশেষ ধরনের খাবার প্রথা চালু আছে। যেখানে গোটা টেবিলে একটি বড় কলাপাতা পেতে দেওয়া টেবিল ক্লথের মতো করে। তার পরে তার উপরেই সাজিয়ে দেওয়া হয় নানা ধরনের খাবার। টেবিলের চারপাশে ঘিরে বসে সেই কলাপাতার উপরেই মহাভোজ সারেন এক দল মানুষ। এতো নয় সংস্কৃতির কথা। কলকাতার পুষ্টিবিদ শ্রেয়া চক্রবর্তী বলছেন কলাপাতায় খাবার খাওয়ার অনেক উপকারিতাও রয়েছে। এটি যেমন পরিবেশের জন্য ভাল তেমনই স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।

কলাপাতায় খাওয়া উপকারী কেন?

প্লাস্টিকে ছেয়ে গিয়েছে বাজার। বাড়িতে নিয়মিত ব্যবহারের জন্য আগে যেখানে স্টিল বা কাঁসার বাসনকোসন ব্যবহার করা হত, সেখানে এখন প্লাস্টিকের থালা-বাটি-গ্লাস-বোতল ব্যবহার হচ্ছে। এক বার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়ার জন্যও ব্যবহার করা হচ্ছে সিন্থেটিক পাত্র। পুষ্টিবিদ শ্রেয়া বলছেন, তার বদলে কলাপাতার ব্যবহারে অনেক নিরাপদ। কারণ—

১। কলাপাতায় খাবার খেলে শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক যাওয়ার ঝুঁকি তো থাকছেই না, থাকছে না রাসায়নিক বিক্রিয়ার আশঙ্কাও। ফলে কলাপাতা ক্ষতিকর তো নয়ই, বরং প্লাস্টিক বা সিন্থেটিক পাত্রে খাওয়ার থেকে উপকারী।



২। কলাপাতায় রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল অর্থাৎ জীবাণুরোধক উপাদান। যা খাবারে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমিত হতে দেয় না।

৩। গরম খাবার কলাপাতায় পরিবেশন করা হলে কলাপাতার সুগন্ধ খাবারের সঙ্গে মিলেমিশে একটা সুন্দর গন্ধ তৈরি করে যা খেতে ভাল লাগে।

৪। কলাপাতায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং ক্লোরোফিল। পুষ্টিবিদ বলছেন, অনেকেই মনে করেন, কলাপাতায় গরম খাবার পরিবেশন করা হলে সেই সব গুণ খাবারেও মিশতে পারে। যদিও এর কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অবশ্য ভারতের প্রাচীনতম চিকিৎসা শাস্ত্র আয়ুর্বেদে এর গুণের কথা বলা আছে।

৫। পুষ্টিবিদ বলছেন, কলাপাতায় খাবার খেলে নিজের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের সঙ্গেও জুড়ে থাকা যায়। মাটির টান অনুভব করা যায়। যা আর কিছু না হোক মন ভাল করতে বাধ্য।

৬। তা ছাড়া কলাপাতা সহজলভ্যও। গ্রামে, শহরতলিতে এটি বিনামূল্যেই পাওয়া যায়। শহরেও খুব বেশি দাম দিতে হয় না। তাই এটি ব্যবহারে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে পুষ্টিবিদের পরামর্শ। কলাপাতা ব্যবহার করার আগে সব সময় ভাল ভাবে ধুয়ে নিন।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ১২:১২
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×