বিএনপি দুই বছর আগে রাষ্ট্র সংস্কারের যে ৩১ দফা প্রকাশ করেছে তা সত্যিই আশা জাগানিয়া, আমি সব সময় আশিবাদী তাই বিএনপির এই ৩১ দফা নিয়ে জনাব তারেক রহমানের বক্তব্যগুলো শুনি, ৩১ দফা নিয়ে বিএনপির তৎপরতা বেশ ভাল লাগে আমার কিন্তু আমার সংশয় এক জায়গায় ৩১ দফা কি শুধু ভোটের রাজনীতি নাকি বাস্তবে তারা করতে ইচ্ছুক, আমার সংশয়ের মূল কারণ হচ্ছে বিএনপির তূণমূল বিএনপির অধিকাংশ নেতা-কর্মী জানেই না বিএনপির ৩১ দফায় আসলে কি আছে, বিশাল একটি অংশ এখনো আগের মতই হাট-ঘাট, বাজার দখল রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত বা এই ধারার রাজনীতি বিশ্বাসী। উদাহরণসরুপ, আমি যে জায়গায় থাকি তার নাম কাঁচপুর, এখানে ফুটে এখনো আগের হারেই চাঁদা উত্তোলন হচ্ছে শুধু লীগের জায়গায় বিএনপি অবশ্য সপ্তাহখানিক বন্ধ ছিল ছাত্রদের তৎপরতায় তার পর শুধু হাত বদল, সবচেয়ে মজার হচ্ছে মাদক ব্যবসা স্পট আগের স্থানই আছে শুধু হাত বদল হয়েছে মালিকানা, উল্লেখ্য কাঁচপুর নতুন বাসষ্টান্ড (সায়েদাবাদ বাস স্টান্ড সে জায়গায় নেওয়া হবে) পাশেই দিনে প্রকাশ্যে ইয়াবা বিক্রি হয় অথচ হাইওয়ে থানা মাত্র ২০০ মিটার দূরে হবে। তবু্ও আমি আশাবাদী মানুষ, বিশ্বাস করি বিএনপি ক্ষমতায় এলে এসব কর্মকান্ডে যারা জড়িত তাদেরকে শাস্তি আওতায় আনবে।
চলুন ৩১ দফা কিছু ভাল মন্দ নিয়ে কথা বলি--
২. বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এবং স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে স্থায়ী সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে একটি ‘নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে।
এটি খুবই ভাল প্রস্তাব, এই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা নিয়ে কম রক্ত ঝরেনি এই দেশে।
৩. সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীসভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা হবে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচারবিভাগের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যের সুসমন্বয় করা হবে।
এটা বাস্তবিক রুপ দেওয়ার জন্য যে ধরনের ব্যক্তিত্ববোধ থাকা দরকার তা আমাদের রাজনীতিবিদদের মধ্যে এখনো অনুপস্থিত বলে আমার বিশ্বাস। তবুও চমৎকার শব্দমালা যদি হয় আলহামদুল্লিাহ।
৪. পরপর দুই টার্মের অতিরিক্ত কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।
এখানে আমার একটি প্রস্তাব হলো পরপর শব্দটি বাদ দিয়ে দুই বারের বেশি কেউ নির্বাহী প্রধানের দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। পরপর শব্দ থাকলে শুভংকারের ফাঁকির বহু পথ খোলা থাকে।
৫. বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের সমন্বয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সংসদে ‘উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা’ প্রবর্তন করা হবে।
এটি খুবই ভাল প্রস্তাব, আমাদের সমাজের অনেক সজ্জন শিক্ষিত মানুষ রাজনীতি করতে চায় না কিন্তু তাদের জ্ঞান দেশের জন্য প্রয়োজন এই ব্যবস্থা চালু হলে তাদেরকে পাওয়া যাবে। এটি সংস্কার হলে বিএনপি করলে মানুষের ভালবাসার দলটি আরো আরো একধাপ এগিয়ে যাবে।
৬. আস্থাভোট, অর্থবিল, সংবিধান সংশোধনী বিল এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত এমন সব বিষয় ব্যতীত অন্যসব বিষয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মতামত প্রদানের সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করার বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে (দেখা হবে) বিবেচনা করা হবে।
বিবেচনা করা হবে, দেখা হবে এই শব্দটি গুলি বেশ ফাাঁকিবাজী ফাঁকিবাজী মনে হয়, যা বলতে হবে তা স্পষ্ট করে বলতে হবে যদি গবেষণা করার প্রয়োজন হয় প্রচুর সময় পড়ে আছে।
বাদবাকি দফাগুলি গতানুগতিক শব্দমালা যা গত দুই যুগ ধরে এ দেশের মানুষ শুনে আসছে।
বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার সংস্কার কমিশন করেছে ইতিমধ্যে সব কমিশন কাজ শুরু করে দিয়েছে বিএনপি চাইলে তাদের এসব সংস্কার বর্তমানে সংস্কারে যুক্ত করতে পারে তাহলে তাদের পরবর্তীতে আর এই নিয়ে কষ্ট করে কাজ করতে হবে না নাকি নাম কামানোর পথ বন্ধ হয়ে যাবে বলে নির্বাচন দিন নির্বাচন দিন তসবী পাঠ?
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬