স্কুলের গণ্ডি পেরুনোর পরই হাতে পাই মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক কিছু বই যা আমাকে মুক্তিযুদ্ধকে জানতে, সেই সময়কে অনুধাবন করতে সহায়তা করে। সেই সময়ের আবেগময় মনে গেঁথে গিয়েছিলো সেই চেতনা। মুক্তিযুদ্ধ না দেখা সত্তেও প্রবল ভাবে অনুভব করতাম। তখন থেকেই পাকিস্তানের প্রতি তীব্র আক্রোশ নিয়ে বড় হতে থাকি যার প্রভাব বেশ খানিকটা ক্রিকেটের মাঝেও পড়েছে। আজও আমি পাকি খেলোয়াড় কিমবা তাদেরই পা চাটা বাঙ্গালী পাখা (ফ্যান) দের ঘৃণা করি। আমি এই ব্যাপারে ভীষণ রকম গোঁড়া!! উদারতা দেখিয়ে বলতে পারিনা 'আরে খেলা হল খেলা, এর মাঝে মুক্তিযুদ্ধ টেনে আনার দরকার টা কি!!!'
মাঝে মাঝে মনে হতো এই যুদ্ধ যদি যুগ ব্যাপী চলতো তইলে হয়ত মানুষ আজীবন মুক্তিযুদ্ধকে বুকে লালন করত। আমরা বাঙ্গালিরা অসম্ভব সহজ সরল রূপী বোকা যার ফলশ্রুতিতে এইসব ঘৃণ্য রাজাকারেরা এই বাংলাদেশে দাপিয়ে বেড়াতে পারছে, ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করতে পারছে।
যাই হোক, আমার এই আলোচনার কারণ হল সেই সময়ে আমি আমার খুব কাছের কোন বন্ধু কিমবা আত্মীয় স্বজন কাউকে পাইনি যে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভেবেছে, সবার মাঝেই দেখেছিলাম এড়িয়ে চলার প্রবণতা, হয়তবা তা ছিল নিতান্তই আগ্রহের কমতি। কিছু মানুষের মুক্তিযুদ্ধকে হেয় করার জন্য ঝোলায় ভরা ছিল দুর্গন্ধময় কুযুক্তি। রাজাকার কুলাঙ্গারগুলি যখন প্রথম স্মৃতিসৌধতে ফুল দিতে যায় ইচ্ছে হচ্ছিলো উটপাখির মত মাটিতে মুখ লুকাই। সেই থেকে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে খুব কমই বাৎচিত করেছি।
কিন্তু আজ কয়েক বছর যাবত দেখছি ব্লগ কিমবা ফেবুতে অন্য যুদ্ধ। নাহ যুদ্ধ তো শেষ হয়নি।
সবে তো শুরু!! তারুণ্যের এক বিশাল শক্তি এখান থেকেই জেগে উঠেছে, মানুষ জানছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আবারো তারা দৃপ্ত হচ্ছে। অনেককেই দেখছি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তথ্যবহুল সুন্দর সুন্দর পোস্ট দিতে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখায় লেখায় ভরে যাক ফেবুর দেয়াল!! স্নায়ুতে স্নায়ুতে আবারো বেজে উঠুক যুদ্ধের দামামা!! আবর্জনা?? এইতো পরিষ্কার হলো বলে!!
ইতিহাস বিকৃত হয়ে বেশিদিন টিকে থাকতে পারেনা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং তার পরবর্তী সময় হল তার প্রমান।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৯