
আজ আমি আপনাদের একটি গল্প বলবো। এই গল্পটি একজন রাজা, তাঁর সভাসদ এবং রাজার ভৃত্যকে নিয়ে। এ যেমন-তেমন ভৃত্য নয়! আমাদের রান্নাঘরে বা খাবার রুমে রাতে বিছানা পেতে শোওয়া ভৃত্যটির মতো তো নয়ই! বরং, সে ছিলো এমন এক ভৃত্য যাকে রাজা নিজ রাজ দরবারের সিংহাসনের পাশে বসার অনুমতি দিয়েছিলেন! বুঝুন কি ছিলো তার মহিমা!
অবশ্য এই নিয়ে রাজ দরবারের সভাসদের গাই-গুই তো লেগেই ছিলো! সেটা যখন অসন্তোষে রূপ নিলো,রাজা করলেন কি একদিন সবাইকে একটি বিশেষ সময়ে আসতে বললেন। নির্দিষ্ট দিনে সবাই এসে উপস্থিত হলেন। সেখানে রাজার ভৃত্যটিও ছিলো।
রাজা তখন নিজের মুকুট মাটিতে নামিয়ে সভাসদদের একে একে ডাক দিয়ে বললেন যে, তারা যেন তাঁর মুকুটটি পা দিয়ে পিষিয়ে ভেঙ্গে ফেলে। রাজার কথায় সবাই খুব অবাক হলেন! কেউই সেই কাজটি করতে রাজি হলেন না।
এবারে, রাজা তাঁর ভৃত্যকে ডাকলেন। বললেন, সে যেন মুকুটটি পা দিয়ে মাড়িয়ে ভেঙ্গে ফেলে। ভৃত্যটি নিজের জুতাটি শক্ত করে বেধে মুকুটটি ভাঙতে যাবে, সেই মুহুর্তে, সভাসদ-কোটাল-সেনাপতি সবাই তলোয়ার বের করে ভৃত্যকে ঘিরে ফেলে বললেন- "ওরে হতভাগা! নিমকহারাম! তুই আমাদের রাজার মুকুটকে পায়ে দলে অসম্মান করতে যাচ্ছিস, সামান্য ভৃত্য হয়ে তোর এত্তো বড় সাহস!"
এই বলে তারা যখন ভৃত্যকে মেরে ফেলতে যাবে, তখন রাজা হুংকার দিলেন- "খামোশ! কেউ আমার ভৃত্যকে একটি আঘাতও করবে না।"
সভাসদরা তখন খুব অবাক হলেন। বললেন- "হুজুর, এই হতাভাগা আপনার নিমক খেয়ে নিমক হারামী করতে যাচ্ছিলো! আমরা না থামালে তো সে আপনার মুকুটটাই ভেঙ্গে ফেলতো!"
তখন রাজা বললেন - "সে কোন নিমক হারামি করে নাই! তোমরা এতো দিন ধরে আমার পাশে থেকেও আমার হুকুমের অমান্য করলে! মুকুটটি ভাঙতে অস্বীকৃতি জানালে! আরে, তোমরা তো শ্রদ্ধা করো আমার মুকুটকে! আর, সে? আমার ভৃত্যটি তার প্রভুর মুখ নিঃসরিত বাণীকে অনুসরণ করেছে। অর্থাৎ সে আমাকে ভালবেসেছে, আমার মুকুটকে নয়।"
"এখন বলো, নিমক হারাম কে বা কারা?"

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


