ফ্রীলেন্সিং নামটার সাথে প্রথম পরিচয় সম্ভবত ২০০৮ এর মাঝামাঝিতে। কাজ খুঁজছিলাম হাত খরচ চালানোর জন্য। আমি কিছুটা আত্মকেন্দ্রিক হওয়ায় মানুষের সাথে আমার ওঠাবসা কম। আর এটার কারণে সম্ভবত টিউশনি পেতাম না। ১টাই করতাম, আমার বন্ধুর ছোটো ভাইকে পড়াতাম। ছাত্র হিসেবে বেশ ভাল ছিলাম, আমার বন্ধুর বাসায় গুড স্টুডেন্ট হিসেবেই পরিচিত ছিলাম। এজন্যই টিউশনিটা পেয়েছিলাম। এরপর দীর্ঘ ৩-৪ বছরে আর মাত্র ২,৩ টি টিউশনি পেয়েছিলাম। এদিকে টাকার ভীষণ দরকার। কিন্তু..............
যাক আপাতত এই প্যাঁচাল বাদ দেই। ৮ এর শেষের দিকে একটা ফ্রীলেন্সিং উপর ওয়ার্কশপ এ অংশ নিয়েছিলাম। প্রতিষ্ঠানটা ছিল মিরপুর-১১ তে। হয়তো অনেকেই গিয়ে থাকতে পারেন। অন্যতম ভুয়া প্রতিষ্ঠান যারা ফ্রীলেন্সিং এর নামে প্রতারণা করে। ১০০০ টাকা ফী দিয়েছিলাম মনে আছে। ফ্রীলেন্সিং এর উপর একদম বেসিক কিছু বিষয় শেখানো হয়েছিল। যেগুলো আদৌ কোনো কাজে লাগে না। তারা একটা শিট দিয়েছিল যেটা জাকারিয়া ভাইয়ের সাইট থেকে কপি পেষ্ট করা (যেটা বছর খানেক পরে বুঝতে পারি, সাইটটা দেখার পরে)।
২০১০ এ সামুতে ব্লগিং করা শুরু করি। তখন থেকেই মূলত এই বিষয়ের উপর ভালভাবে জানতে ও বুঝতে শুরু করি। freelancer, oDesk,vworker, scriptlance ইত্যাদি সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলি ও বিড করা শুরু করি। মূলত freelancerও oDesk এই বিড করি। যেহেতু আমার প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, নেটওয়ার্কিং এর উপর কোনো পড়াশোনা নেই তাই ডাটা এন্ট্রি, আরটিক্যাল রাইটিং তথা আডমিনিস্ট্র্যাটিভ সাপোর্ট এর উপর বিড করা শুরু করি। তখন চার পাঁচ মাস চেষ্টা করেছিলাম। যে দুই একটা কাজ পেয়েছিলাম তা ছিল ক্যাপচার কাজ। এই কাজ করতে গিয়ে মনে হলো সারাদিন কাজ করেও মাসে ১০০ ডলার কামানোটা বোধহয় সম্ভব না। আর আমার নেট স্পিডও অনেক কম ছিল। আশা ছেড়ে দিলাম। নাহ আর সম্ভব না। পড়ালেখায় ভালোভাবে মনোনিবেশ করলাম। আর পাশাপাশি একটা চাকরি খুঁজতে লাগলাম। ২০১১ এর জুলাইতে একটা চাকরি পেলাম।
২০১০, ২০১১ গেল। ১২ এর শুরুতে আবার এই পোকা মাথায় ঢুকলো। গত মাসে বাংলা বিলাই কানেকশন নিলাম। oDesk প্রফাইল ১০০% কমপ্লিট করলাম। বিড করা শুরু করলাম। অ্যাকাউন্টিং ছাত্র হওয়ায় ভাব্লাম ডাটা এন্ট্রি, আরটিক্যাল রাইটিং ছাড়াও বিসনেস সেকশনে বিড করি। করলাম। আর এও বুঝলাম এইখানে স্কোপ অনেক কম অর্থ্যাৎ কাজের সংখ্যা কম আবার অনেক বিশেষজ্ঞ লোকও এখানে ঘুরাফেরা করেন। তাদের কাছে আমাকে নিতান্তই দুধের শিশু মনে হইত (যদিওঅ্যাকাউন্টিং বেশ ভালো পারি ও সফটওয়্যারের উপরও হাল্কা পাতলা জ্ঞান আছে)। অলরেডি ৩০ টাতে বিড করেছি। নো রিপ্লাই। এক চান্দু রিপ্লাই দিল। আমি মহা আনন্দে মেসেজটা দেখলাম। সেখানে লেখল সে একজনকে হায়ার করেছে আর এখন অন্য একটা প্রজেক্টে লোক নিবে। একটা লিংক দিল এবং রেজিস্ট্রেশন করে সেখান থাকা অ্যাড দেখতে বলল। আমি লিংকে গেলাম, দেখলাম clicksence. ক্লিকাইয়া টেকা আয়। ভালো কথা, আমি তারে বললাম তুমার স্কাইপ আইডি দাও তুমার সাথে চ্যাট করবো। টাকা কে দিবে, কখন টাকা পাবো এই নিয়ে আরকি। তারপর থেকে চান্দু উধাও।
এখন আবার খেই হারিয়ে ফেলেছি। আর ভালো লাগে না। টিভিতে প্রায়ই শুনি সম্ভাবনার ফ্রীলেন্সিং এর কথা। কিন্তু আমার কপাল আর খুলে না। মাঝে মধ্যে মনে হয় চিচিং ফাঁক বলার সাথে সাথেই যদি ভাগ্যের দরজা খুলে যেত।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০১২ রাত ৮:১১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




