সময়ের কাজ সময়ে করতে হয়।সময় বুঝে কর্ম না করলে পস্তাতে হয়।ইংরেজদের হাতে ক্ষমতা হারিয়ে মুসলমানরা যখন হায় হায় করছিলো তখন সনতন ধর্মানুসারীরা ইংরেজদের পাশাপাশি চলতে লাগলো,ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত হতে থাকলো,অফিস আদালতে চাকরি করতে শুরু করলো।তার অবশ্য কারণও ছিলো।তারা ভাবলো শাসন ক্ষমতা মুসলমানদের হাত থেকে শুধুমাত্র খ্রিষ্ট্রানদের হাতে গেলো।অর্থাৎ শাসন ক্ষমতার ধর্মান্তর ঘটলো শুধু।তাই পক্ষাবলম্বন করতে হলে পাজামাওয়াদের পক্ষ ছেড়ে প্যান্ট পরিহিতদেরই করা ভালো।তলোয়ারওয়ালাদের ছেড়ে বন্দুকধারীদের পক্ষ নেওয়াই ভালো।টিকে থাকার আপ্ত কথাটা তারা ভালো ভাবেই বুঝতে পেরেছিলো।মুসলমানেরা, দিনেরবেলা স্বামী স্ত্রীকে 'পাজুনপেটা' করলে রাতে যেমন বিছানায় পাছা ঘুরিয়ে শুয়ে থাকে,তেমনি অবস্থায় ছিলো।এতে যে তাদের ক্ষতি হবে একথা বুঝতে পারেনি।যখন বুঝতে পারল তখন অনেক বেলা হয়ে গেছে।
তাই বলছি সময়ের কাজ সময়ে করতে হয়।
আমাদের দেশের মানুষ ভাগ্যবঞ্চিত মানুষ।বারবার চেষ্টা করেছে ভাগ্য ফেরাবার কিন্ত্ত সফল হয়নি।প্রথম বিফল হয় বৃটিশ ভারতে।কলকাতার বাবু মশাইয়রা পূর্ববঙ্গের মানুষকে চাষাভূষা বলতো।এ অঞ্চলকে বলতো ধীবরদের দেশ ,কলেরার দেশ,ভাটির দেশ।সর্বোপরি মুসলমানের দেশ।
এ দর্নাম ঘুচাবার জন্য মুসলমান নেতারা ইংরেজদের সাথে একটু খাটির টাথির করে দূরবস্থার কথা বর্ণনা করে।তখন ইংরেজদের মনেও একটু দয়ার উদয় হয়।তারা ভাবলো পূর্ববঙ্গ ও আসামকে নিয়ে আলাদা প্রদেশ করলে অত্র অঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে।দেখভাল করার ব্যাপারটাও সহজ হবে।আর চাষাভূষারা সুসময়ের স্বপ্ন দেখে বগল বাজাতে শুরু করলো।ঢাকা নতুন প্রদেশের রাজধানী হলে কলকাতার কর্তৃত্ব চলে যায়!সেই সাথে মা দূর্গার দেহের সাথে তুলনীয় বাংলা ও দ্বিখন্ডিত হয়ে যায়।সর্বনাশ! মা দূর্গাকে দু'ভাগ করা যাবে না। আমাদের রবি ঠাকুর এগিয়ে এলেন।অখন্ড বাংলা চাই।অনেক হাঙ্গামা।১৯০৬ এ ভাগ হয়ে ১৯১১ তে আবার জোড়া লাগলো।মা দূর্গা দ্বিখন্ডিত হবার হাত থেকে বেঁচে গেলেন।চাষাদের আশা ভঙ্গ হলো।তাদের দুঃখ বুঝি আর গেলোই না।এদেশের মানুষ প্রথম বারের মত খোঁচট খেল।রবিঠাকুর বাংলা মায়ের শোভাটাই দেখলেন।এদেশের মানুষের হৃদয়ের যন্ত্রণা,জঠর জ্বালা অনুধাবন করেতে পারলেন না।
তারপর ১৯৪৭।অসাম্প্রদায়িক,চাষাভূষা,ধীবর, কামার ,কুমার,মুচি,চামার,আওল-বাউল ফকিরের দেশের মানুষসাম্প্রদায়িক চিন্তার ফসল দ্বিজাতি তত্ত্বকে কে সমর্থন করলো।পাকিস্তান হলো।চাষারা ভাবলো কপাল ফিরলোই বুঝি।কিন্ত্ত যেই লাউ সেই কদু।দীর্ঘ তেইশ বছরে কেবল লাথিই জুটলো।
আবার ১৯৭১।ভয়াল দিন।হত্যা,গুম, লাশের মিছিল।শরণার্থীদের মিছিল।যুদ্ধ।অতঃপর স্বাধীনতা।'পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে' রক্ত লালা রক্ত লাল রক্ত লাল'।
দেশে গড়ে উঠলো একশ্রেণীর চাটুকার ,স্মাগলার, মজুদদার।দূর্ভিক্ষ।মা তার সন্তানকে ফেলে পালিয়েছে।একজন বমি করলে তার উপর হামলে পড়েছে ক্ষুধার্ত মানুষ।
তারপরের ইতিহাস আরো কলঙ্কের।অনেক বেদনার।
মানুষের কপাল ফেরেনি।হাল আমলে ডেশটিনি,নিউওয়ে,ইউনিপেটুইউ গঙ্গরা যাও একটু ফেরাতে চেয়েছিলো তা আর সরকার হতে দিলো কৈ?
কিন্ত্ত রাজনৈতিক অঙ্গনের ঘটনা বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায় নতুন একটি দিগন্তের উদয় হতে চলেছে।
একজন আলেম একসময় রাজনীতি করা হারাম বলতেন।তিনি সাংবাদিকদের ছবি তোলার ভয়ে ঘোমটা টেনে চলতেন।তিনিও একসময় রাজনীতিতে এলেন।(বুঝুন)
নারী নেতৃত্ব হারাম হারাম করে যারা গলা ফাটাতো তারা নারী নেতৃত্ব মেনে নিয়ে জোট গঠন করলো।নিজেদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করেছেন।অবশ্য কিছুটা কালো করেছেন বলা চলে!এটুকু বাদ।
জোটবদ্ধ রাজনীতির পুরো কৃতিত্বটা তারাই নিতে চাইবে যদি আমেনিরা তাতে বাঁধা না দেয়।
শুরু হলো দলে ভেড়ানোর জোর প্রচেষ্টা।১৪ দলীয় মহাজোট।যোগ দিলো ভূখাভাখা মানুষের প্রতিনিধিত্বের দাবিদার বামজোট।নিজেরা এক টেবিলে বসলে ঢিল ছুরাছুরি করলেও আওয়ামী ছাতার নিচে খুব একটা সমস্যা দেখা দিলো না।বাম ধারার লোকদের প্রতি আমার একটা সফট কর্ণার কাজ করে। কারণ অন্যায় অনাচারের বিরুদ্ধে, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে তারাই ক্ষীণ গলায় হলেও কিছু না কিছু বলতে চেষ্টা করেন।কিন্ত্ত মোল্লাদের গাড়িতে চড়তে দেখে তাদের আর মাথা ঠিক থাকলো না।তাদেরই বা কী দোষ বলেন ?খালি পেটে আর কত রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করা যায়?মিছিলে স্লোগান দিতে হলেও গলায় জোর লাগে।হালুয়া রুটি লাগে।
আমাদের এক মন্ত্রী মহোদয় একদিন দেখি কূল খানি না কি যনে একটা অরাজনৈনিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গেলেন।ড. ইউনুছকে নিয়ে দিলেন এক কড়া রাজনৈতিক বক্তব্য।আমি রাজনীতির এদিকটা অবশ্য এখনো বুঝতে পারি না।কূলখানির অনুষ্ঠানে গিয়ে তারা প্রায়ই দেখি কয়লাখনির কথা বলেন।যাই হোক মন্ত্রী মহোদয় বক্তব্য দিচ্ছিলেন আর বেতালে মাথা দোলাচ্ছিলেন।তাঁর চোখও দেখি বন্ধ হয়ে আসছে।আধ্যাত্ত্বিক মানুষেরা যেমন গুরুবাক্য বলার সময় চোখ বন্ধ করে বলেন তেমনি।আমি এর কারণ খুঁজে পাচ্ছিলাম না।বাম ঘরানার মানুষ ।সাহিত্য সংস্কৃতিতে পারদর্শী হবারই কথা।কিন্তু বক্তৃতার পারফরমেন্স এত খারাপ ক্যান?কারণটা অবশ্য বের করলো পত্রিকাওয়ালারা।খবরে প্রকাশ মন্ত্রী মহোদয় একাই ততোধিক ফ্লাট -প্লট নিয়েছেন।আমি অবশ্য তেমন জানি না। সব জানে পত্রিকাওয়ালারা।লোকে বলে আঙ্গুল ফুলে কারো যদি কলাগাছ হয় তারা নাকি ধরাকে সরা জ্ঞান করেন।কী বলতে কী বলে ফেলেন।আবোল-তাবোল।(ধ্যাৎ! এমন মনে হচ্ছে কেনো? আবোল>আবুল হয় নাকি? যাক আরেকদিন আবুল কথন হবে)
এদিকে মহাজোটের দাপটের কাছে ৪ দলীয়দের মার খেতে খেতে তারা জোটকে আরো সম্প্রসারিত করলো ।গঠন করলো ১৮ দলীয় মহাজোট মহাজোট।চিপায় চাপায় যেখানে যে যারা জার-ফুৎকার করছিলো।দাওয়াত খাচ্ছিলো পরের বাড়ি।তারাও এসে যোগ দিলো।
এখন নতুন দলের বড় ঘাটতি দেখা দিয়েছে দেশে।দুই বড় দলের সাদর আমন্ত্রণে তারা আর বাইরে থাকতে পারলো না।ভালই হলো পরের বাড়ি আর কতদিন খাওয়া চলে!
সুতরাং যারা নতুন ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্নে বিভোর।তারা এদিকটা ভেবে দেখতে পারেন।এগিয়ে আসুন নতুন রাজনৈনিক দল নিয়ে।নাম ঠিক করার জন্য কিছু প্রতিষ্ঠান ও চালু করতে পারেন যারা রাজনৈতিক দলের নামকরণ করে দেবেন। সেখানে কর্মসংস্থান হবে।ফলে বেকারত্ব দূর হবে। নতুন দল গঠন করে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে এগিয়ে আসুন।নতুন নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে ঝাপিয়ে পড়ুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৪০