গত পোস্টের পর-
সিভিল সার্ভিস কমিশনার্স ১৮-২৩ বছরের বয়সের মধ্যে যারা আগ্রহী তাদের ১২৫০ নম্বরে পরীক্ষা নিতো; কৃতকার্য হলেই অক্সফোর্ড ২ বছরের কঠোর প্রশিক্ষণ ; সিলেবাস ছিল ভারতীয় সংস্কৃতি, সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি, ভূগোল, আইন ও তাদের ভাষা সহ অন্য দুই ভারতীয় ভাষা। ভারতীয়করণ শুরুর পরও প্রার্থী নিয়োগে পক্ষপাতিত্ব অবলম্বন করায় কমিশনের সুপারিশ মোতাবেক ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস গঠিত হয়ে নতুন যুগ শুরু করে ;পরীক্ষা লন্ডন থেকে এলাহাবাদে চালু হয়। বিশ্বকবির পরিবারের সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম অফিসার হয়ে রোল মডেল স্থাপন করেন। দিন যেতে থাকলে বৈষম্যভেদ সঠিক ভাবে না হওয়ায় সম্প্রদায়গতভাবে ইসলিংটন কমিশন, মন্টেগু-চেমসফোর্ড কমিশন এবং লী কমিশন(১৯২৪) গঠন করে সরকার।১৯৩৫ এর ভারত শাসন আইনে কয়েকটি সুপিরিয়র সার্ভিসকে প্রাদেশিক সার্ভিসের এখতিয়ারে প্রদান করা হয়। ব্রিটিশ ভারতে সর্বশেষ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১৯৪৩-এ।
ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য বাঙালী নেতাজী সুবাস চন্দ্র বোস ঠিক করলেন ব্রিটিশদের চাকুরী না করে কীভাবে খেদানো যায় ; সেই ধারাবাহিকতায় ৪৭এ দেশ ভাগ হয়ে ভারত ও পাকিস্তান আইসিএস রেডীমেড অফিসারদের ৭০০ জন ভারতে ও ৯২ জন পাকিস্তানে যোগ দান করে ও নাম দেয় সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি)। ১৯৭১ সালে আমরা দেশ পেয়ে সেই সিএসপি থেকে রেডীমেড ২০৯ জন অফিসার যোগ দেয় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস।
আমলাদের ভাগ করলে মাঠ পর্যায়ের আমলা( সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও), জেলা প্রশাসক বা ডেপুটি কমিশনার (ডিসি), বিভাগীয় কমিশনার চোখে পড়ার কারণ হলো অতীতের বৈষম্যতা; অন্যভাগ কেন্দ্রীয় পর্যায়ের আমলারা বাসা থেকে গাড়ী নিয়ে বের হয়, এসি রুমে বসে কাজ করে, গাড়ী করে বাসায় ফিরে বিধায় অমাবস্যার চাঁদ হয়ে যায়। র্যাংকিং মূলত- সহকারী সচিব → সিনিয়র সহকারী সচিব → উপ-সচিব → যুগ্ম-সচিব → অতিরিক্ত সচিব → সচিব/সিনিয়র সচিব।
বাংলাদেশের তরুনসমাজ আমলাতন্ত্রে ঢুকার লোভ কখন থেকে আরম্ভ করলো কে জানে; হয়তো যখন জেনেছে পদমর্যাদায় দেশের ১২তম ব্যক্তি একজন সচিব। আমলাদের লেভেল অনেক উপরে এরা অফিসে বাসার কাজ করে; চুরি করে; ঘুষ খায়; মামলা খেলে হাসে ; বিদেশে গিয়ে কিভাবে কাশি দিতে হয় সেই ট্রেনিং শিখে আসে। মজার ব্যাপার হল ফাইল অনেক সময় স্ট্যাচু অব লিবার্টির মত টেবিলে স্থির থাকে; অনেক সময় আলোর গতিতে দোড়ায়; ফাইলের উপর ফাইল রেখে পিরামিড, তাজিংঢং ও এভারেস্ট বানায়।
দেশের ৩০ ভাগ নাম লিখতে পারে না ;নিজের পরিবারকে ঠিকমত চিনে না ;আমলা চিনবে কীভাবে। দেশের অরাজকতায় সব রাগ, ক্ষোভ, অভিমান গিয়ে পড়ে শেখ কন্যা হাসিনার উপর। তবে আমি এখন
"শেখ হাসিনা ও আমলাতন্ত্র" টপিক নিয়ে সব ব্লগারদের ফিডব্যাক আশা করছি।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০২১ সকাল ৮:৫৩