মাইকেল ফ্যারাডের বাবা অনেক সন্তানের জনক ছিলেন,পেশা ছিলো কামার। সতেরশো শতকের লন্ডনের সামাজিক স্ট্যাটাসে একেবারেই তলানীতে ছিলো, কামার পেশায় সংসারে অভাব-অনটন লেগে ছিলো ;তাই ফ্যারাডে বাধ্য হয়ে বই বাইন্ডিং 'এর কাজ নেন।ফ্যারাডের ভাবনায় কাজ করতো তখন 'ধর্মীয় উম্মাদনা ও আশেপাশের সবকিছুকে সৃষ্টিকর্তার শক্তি হিসেবে মনে করতেন এবং তেমন পুঁথিগতবিদ্যা না থাকাতে সঠিকভাবে বুঝতে পারতেন না। বই বাইন্ডিং 'এর সুবাধে তিনি সৃষ্টিকর্তার শক্তিকে ভালোমত বুঝতে সায়েন্সের বইকে টুল হিসেবে নেন। পরবর্তীতে সেই টুল ও নিজের ওয়ার্ক এথিকস তাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়, বিভিন্ন বিখ্যাত মানুষের সাহচর্যে এসে। উনার আবিস্কার উনাকে বুঝতে সুযোগ করে দিয়েছে সৃষ্টিকর্তার শক্তি ও রহস্য।
ছোট আইনস্টাইন হাতে কম্পাস পেয়ে যে ফ্যান্টাসিতে পড়ে গিয়েছিলেন, কারণ উনার বাবা বলেছিলেন কম্পাসের কাটা ঘুরছে অদৃশ্য এক শক্তির কারণে। সেই বাচ্চা ছেলে অদৃশ্য শক্তির খোজে পচিশ বছরের আগে বিশ্বজোড়া খ্যাতি পেয়েছিলেন,জিনিয়াস ট্যাগ জুড়েছে। উনি হয়তো ভিতরে ভিতরে সেই বাচ্চাকালের ফ্যান্টাসি লালন-পালন করে গেছেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত,যা বুঝা যায় উনার জীবনীতে, ক্লার্কের চাকুরী থেকে ডিরেক্ট নিয়ে যায় ম্যাক্সোয়েলের ডেস্কে।উনার মনের দেয়াল ও স্টাডি দেয়ালে নিউটন, ফ্যারাডের ছবি ঝুলতো সবসময়।
দ্যা ভিন্চি পড়াশোনা করেনি, ছোটবেলায় একা একা থেকে প্রকৃতিকে অর্বজারবেশনে রাখতো এবং ক্যানভাসে এটা সেটা আকাবুকির চেষ্টা করতো ;পরে উনার এক আত্নীয় এক আর্ট স্কুলে ভর্তি করে দেয়, যা ধীরে ধীরে উনার সত্তা আসল রুপ নেয় ; আর্ট থেকে বিজ্ঞান, কলা,প্রকৌশলে রুপ নিয়ে জিনিয়াসদের গুরুতে রুপ নেয়।উনি উড়োজাহাজের মডেল একেছেন, যা উনার ফ্যান্টাসি বাস্তবতায় ধরা পড়ে।
বাচ্চাকালেই প্রতিটি শিশুর ভেতরে রহস্যময় সত্তা কাজ করে, সময়ের বিবর্তনে সেই সত্তা আবর্জনায় রুপ নিলে আর কখনো হয়ে উঠে না আবর্জনা মুক্ত করা। ফ্যারাডের বুঝতে চাওয়ার আগ্রহ কখনো অন্য কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়নি,নিজেই সায়েন্সকে বেছে নিয়েছে। আইনস্টাইনের কম্পাস প্রীতিতে যে উৎসুক মন কাজ করেছে, সেখান থেকে শুরু করে মোনালিসার জনক ভিন্চির নিজস্ব পর্যবেক্ষণে কেউ কখনো প্রভাব ফেলতে পারেনি, যা সভ্যতার চাকা দ্রুত ঘুরিয়ে উনারা আজও ঘুরছেন আমাদের ভাবনায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:২৩