
লালনের দর্শন বাঙালীর মধ্যে গানেই সীমাবদ্ধ, লালন অশিক্ষিত, আশেপাশে যা দেখেছে তাই বলেছে, সুর করে গেয়েছে ; আশপাশের মানুষ ভালো অনুভব করেছে এটুকুই।লালনের ভাবনা ঠিক দর্শন নয়, তবে দিব্যজ্ঞানের খোজ পায় অনেকে। বাকির লোভে নগদ পাওনা ককে ছেড়েছে এ ভুবনে?লালন মাদকের আশ্রয় নিয়ে এসব গানের সুর করেছিলো কিনা জানা নেই, কিন্তু বর্তমানে লালন মেলায় ভালোই মাদকের আসর জমিয়ে লালনকে স্মরণ করা হয় ।কিন্তু লালনের গুরুর কি খবর? শুধু নামটাই জানে,লালনের উপর উনার প্রভাব কেউ হয়তো জানবেও না কখনো। সিরাজ সাঁই পেছনেই রইলো।
আহমেদ ছফা লিখতে পারতো তাই নিজের গুরু নিয়ে বই লিখে গেছে ' যদ্যপি আমার গুরু'। গুরুর পোর্স্টমর্টেম করা হয়েছে উক্ত বইতে,বইয়ের পাঠকদের কেউ কেউ সেই গুরুকে ভিন্ন গ্রহের বাসিন্দা হিসেবে ভেবেছে।ছফার উপর উনার প্রভাব বুঝেছে; ছফা না লিখে গেলে রাজ্জাক সাহেব কোথায় কি অবস্থায় থাকতো!
পারস্যের রুমী ২১ বছর বয়সে শামস তাবরেজীকে খুজে পেয়ে নিজের ভেতরের সব আমিত্ব বিসর্জন দিয়ে স্পিরিচুয়ালীলির ভিন্ন পথ রচনা করে ; কিন্তু গুরুর সাথে অন্তরঙ্গতার অভাবে লুকোচুরি চলায়,এক পর্যায়ে যখন জানতে পারে গুরু মারা গেছে, তখন রুমী শোক কাটিয়ে আজকের রুমী হয়ে উঠে।রুমী নিজের মত করে অনেক লেখাই উৎসর্গ করেছে গুরুকে। শামস তাবরেজ রুমীকে খুজে না পেলে, ইতিহাসে কোথায় কিভাবে থাকতো? আমি, আপনি জানার কথাও নেই।
গৌতম বুদ্ধ নিজের সাম্রাজ্য ছেড়ে বিভিন্ন গুরুর কাছে গিয়ে তৃষ্ণা না মেটাতে,নিজেই গাছের নিচে বসে যে দর্শনের জন্ম দেয়, তা পরে ধর্মে রুপে জনপ্রিয়তা পায়। বুদ্ধত্ব লাভের পর ধর্মের কাঠামোতে আসতে গুরু পরিবর্তিত করার ব্যাপারটা তেমন আলোচনায় কখনো ছিলো না, এখন তো তেমন আলোচনার প্রশ্নও আসে না। এখানেও গুরুরা পেছনের সিটে,প্রভাবের কেমন রকমফের তা বুঝার উপায় নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



