২০২৪ সালে বিপ্লব হয়েছিল না অভ্যুত্থান হয়েছিল, যারা এ বিষয়ে কনফিউশান তৈরি করছেন বা বিতর্ক তুলছেন, তাদের উদ্দ্যেশ্য একটাই, আর তা হল রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক সংস্কার করতে না দিয়ে ক্ষমতা দখল করে লুটপাট করা। বিপ্লব সামগ্রিক পরিবর্তন আনে, আর গণঅভ্যুত্থান শুধু সরকার পরিবর্তন করে। স্বৈরাচারী এরশাদের বিরুদ্ধে ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল - শুধু সরকারের পরিবর্তন হয়েছিল, কেউ পালিয়ে যায়নি।
বাংলাদেশে ২৪শে কেন এটি বিপ্লব?
একটি দেশের পুরো সরকার পালিয়ে গিয়েছে। সরকারের একটি পুরো বাহিনী পরাজয় মেনে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। বিচারপতি, সাংবাদিক, শিক্ষক, ছাত্র, রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, আমলা, মন্ত্রী সবাই পালিয়ে গিয়েছে। কে পালায়নি? আপনি এটি দেখতে পাবেন শুধু মাত্র একটি সফল বিপ্লবের পর। এ বিপ্লব শুধু সরকার পরিবর্তনের জন্য নয়, বরং রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে বৈষম্যের অবসান করা, রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান সমূহ থেকে দুর্নীতি দূর করে বৈষম্যহীন সমাজ গড়া।
কিন্ত কেন সফল বিপ্লবের একটি পক্ষ এটিকে বিপ্লব না বলে অভ্যুত্থান বলতে চান?
কারণ, তারাও সুযোগের অভাবে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে পারেনি। যেহেতু বর্তমানে, তারাই বৃহত্তর রাজনৈতিক শক্তি, তাই তারা মনে করছে, বর্তমান ব্যবস্থায় ক্ষমতায় যেতে পারলে তারা কয়েক মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারবে, লুটপাট করতে সহজ হবে। এখানে গণমানুষের চাওয়া পাওয়ার কোন মুল্য নেই, মুল্য নেই যারা শহীদ হয়েছেন, যারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন , এদের কাছে ক্ষমতাই সব।
কিন্ত তাদের বুঝা উচিৎ, জেন-জেড তাদের থেকেও অনেক বেশী রাজনীতি সচেতন। জেন-জেডের রাজনীতি ভবিষ্যতমুখি, এরা অতীতমুখি না। গত ৫৩ বছরের অতীতমুখী রাজনীতি ছিল শুধুমাত্র জনগণকে শোষনের একটি সফল মাধ্যম। ইতিহাস গুরুত্বপুর্ণ, কিন্তু, ইতিহাসকেই রাজনীতির প্রধান উপাদান বানালে, এবং এর মাধ্যমে জনগণকে শোষণ করলে, যে কোন রাজনৈতিক দলের অবস্থা পলাতক ফ্যাসিস্টের মতই হবে। বাংলাদেশের বর্তমান বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি এ বাস্তবতা বুঝতে না পারলে, তাদেরকে আরেকটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মুখোমুখি হতে হবে। আর তার ফল হতে পারে ভয়ানক।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৭:১৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


