প্রতিটি ঘটনার পেছনে মানুষের জন্য একটা শিক্ষনীয় বিষয় থাকে।
কেউ সেটাকে পজেটিভলি গ্রহণ করে। আবার কেউ গ্রহণ করে নেগেটিভলি।
সিনেমায় সন্ত্রাসীদের অভিনয় দেখে তাদের প্রতি কারো ঘৃনা জন্মে। আবার কারো জন্য সেটা হয় হাতে অস্ত্র তুলে নেয়ার অনুপ্রেরণা।
একটি হত্যা কিংবা ধর্ষনের ঘটনা মিডিয়ায় প্রকাশিত হবার পর সারাদেশে সেটা নিয়ে আলোচনা চলে... প্রতিবাদ হয়। আসামীদের ধরার তাগাদা থাকে আইনশৃংখলা কর্মীদেরও।
অভিযুক্ত ব্যক্তি ধরা না পড়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে।
একসময় আসামী ধরা পড়ে। অতঃপর যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয় কিংবা ফাঁসির দন্ডাদেশ দেয়া হয়।
এসব দেখে সন্ত্রাসীরা আরো সচেতন হয়। ধরা খাওয়া আসামীদের দেখে তারা ভবিষ্যত অপরাধকর্মে নিজেদের রক্ষা করার শিক্ষা গ্রহণ করে।
বনানীতে ধর্ষন ঘটনার পজেটিভ দিকটি হলো,
এটি ছিলো দেশবাসীর জন্য একটি সতর্কবার্তা।
যেসব অত্যাধুনিক মুক্তমনা মেয়েরা রাত বিরাতে পার্টিতে আড্ডা দিতে যায়, বিশেষ করে তাদের জন্য। সেসব মেয়েদের পরিবারের জন্য এটা একটা ম্যাসেজ।
পত্রিকা সাক্ষাতকারে এক ধর্ষিতার মায়ের বক্তব্য দেখেই বোঝা যায় তিনি নিজের মেয়ের জন্য কতটা বেখেয়ালী।
তিনি জানান মেয়ের পার্টিতে যোগদানের বিষয়ে তিনি পুর্বেই অবগত ছিলেন।
এবং তাঁর মেয়ে মাঝেমধ্যে পার্টি-টার্টিতে যায়, সেজন্য তিনি মেয়েকে কখনো বাধা দেন না। কিন্ত এবার এমন কিছু ঘটবে জানা ছিলোনা...
ব্যাপারটা এমনই। সো-কল্ড স্মার্ট ফ্যামিলি বলে কথা।
আপনার মেয়ে/ আপনার স্ত্রী/ আপনার বোন রাত বিরাতে কোথায় যাচ্ছে, কি করছে; অভিভাবক হিসেবে সেটা অবশ্যই আপনার/আপনাদের জানা উচিত।
আমি মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ঘুরেছি। কোনোদিন সেখানে ধর্ষনের ঘটনার কথা শুনিনি (বিচিত্রভাবে হতেও পারে, কিন্ত আমি দেখিনি)।
সেখানেও তো রাত বিরাতে যুবতী মেয়েরা ছেলেদের ন্যয় স্বাধীনমনে ঘোরাফেরা করে থাকে। তাদের কেনো ধর্ষনভীতি নেই?
সেখানেও তো পুরুষ আছে !
একই প্লাটফর্মে নারীপুরুষ অবাধে চলাফেরা করছে। মেট্রো ট্রেনে পাশাপাশি সিটে বসছে। পার্ক, সমুদ্র সৈকতে আড্ডা দিচ্ছে। নামাজ পড়তে মসজিদে যাচ্ছে। একসাথে একই গেইট দিয়ে প্রস্থান করছে।
কোনো মেয়েকে কেউ প্রশ্নও করছেনা সে একা এসেছে নাকি সাথে কেউ আছে !
আসলে তারা জন্মের পর থেকেই পারিবারিক শিক্ষায় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
সেজন্য এমন নোংরা অপকর্মের কথা তারা কল্পনাতেও আনেনা।
কিন্ত আমাদের পারিবারিকভাবে এই শিক্ষাগুলো দেয়া হয়না।
সত্য, ন্যয় আর আদর্শের শিক্ষা দেয়া হয়না। অন্যায় অপরাধ সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয়না।
আইন কানুন বোঝানো হয়না। সন্তান কোথাও অন্যায় করলে তাকে কোনো শাস্তি না দিয়ে বরং সেই অন্যায়কে সমর্থন করে তার অন্যায়কাজের প্রতি আরও উৎসাহ দেন অভিভাবকরা। অর্থাৎ সন্তানের কৃতকর্মের পক্ষপাতিত্ব করেন পিতামাতা।
পিতামাতার উদাসীনতার কারনেই সন্তান বিপথগামী হয়। প্রশ্রয় পেয়ে বড়সড় অন্যায় করতেও কুন্ঠাবোধ করেনা। সেটা শুধু ছেলেসন্তানের বেলায় না, মেয়েসন্তানের বেলাতেও। সন্তানের কৃতকর্ম সমাজে পিতামাতার মুখ উজ্জ্বল করে।
আবার সন্তানের কৃতকর্ম পিতামাতাকে লজ্জিতও করে।
স্কুল কলেজে মলাটবাঁধা পাঠ্যবইয়ের বিদ্যা শেখানো হয়। কিন্ত চরিত্র আর ভদ্রতার শিক্ষা আসে পরিবার থেকে...