বৈশ্বিক করোনা দূর্যোগের কবলে বাংলাদেশ। বিরাট জনগোষ্ঠীর এইদেশে দীর্ঘ লকডাউনের ফলে কর্মহীন পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। সরকার রাষ্ট্রের সামর্থ্য অনুযায়ী জনগণের জন্য খাদ্য বরাদ্দ ঘোষণা করেছে।
পাশাপাশি ক্বওমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মুয়াল্লিমদের জন্য মোটামুটি অংকের একটা অনুদানের ব্যবস্থা করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। প্রয়োজনের তুলনায় যা নেহায়েত অপ্রতুল।
কিন্ত বাধ সাধলো সমসাময়িক কালে মন্দির মেরামতের জন্য ২২৮ কোটি ৬৯ লাখের অনুদানের খবরটি৷
১৮১২টি মন্দিরে অনুদান ২২৮ কোটি ৬৯ লাখ।
আর ৬৯৯৫টি ক্বওমি মাদ্রাসার জন্য বরাদ্দ মাত্র ৮ কোটি ৩১ লাখ!
জননেত্রীর অনুদান ব্যালান্সটা বড়ই বেমানান হয়ে গেল।
এবার একটু বিশ্লেষণে আসা যাক।
বাংলাদেশে ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের জন্য ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। মন্দির একটি প্রার্থনালয়।
মসজিদও একটি প্রার্থনালয়। মন্দিরের সাথে তুলনা হবে মসজিদের; শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নয়।
সরকার ২০১৯-২০২১ অর্থবছরে মসজিদের জন্য কি বরাদ্দ দিয়েছে সেটা দেখার বিষয়।
দৈনিক ইনকিলাবের তথ্য সুত্র মোতাবেক ইসলামিক ফাউন্ডেশন কতৃক সারা দেশে ৫৬০ টি চারতলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রত্যেকটি মসজিদের জন্য সর্বনিম্ন ৪০ শতাংশ জমিন নির্ধারণ করা হয়েছে এবং এর নির্মাণ ব্যয় কমপক্ষে ১৫ কোটি টাকা। তন্মধ্যে ৪৮২ টি মসজিদের জন্য ইতোমধ্যে ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দেশব্যাপী ৩১০ টি মসজিদের কাজ গণফুর্ত অধিদপ্তরের অধীনে চলমান রয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৬ টি মসজিদের জন্য ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
ধীরে ধীরে প্রত্যেক জেলায় বরাদ্দকৃত মসজিদগুলো নির্মাণ হবে। মসজিদে পুরুষ এবং নারীদের সালাত আদায়ের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে। লাইব্রেরি থাকবে। হজ্বযাত্রী ও ইমামদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। মৃতদেহের গোসলের ব্যবস্থা থাকবে। দাওয়াতী কাজ ও ধর্মীয় আলোচনার জন্য হলরুম থাকবে। শিশুদের জন্য দ্বীনি শিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।
এই হচ্ছে মন্দির বনাম সরকারের মসজিদ প্রকল্পের বাজেট বৈষম্য। তবুও খুঁত খুঁজে সরকারের সমালোচনা না করলে আমাদের পেটের ভাত হজম হয়না।
ক্বওমি প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকদের জন্য শেখ হাসিনার প্রণোদনা প্রস্তাবটি একান্তই ব্যক্তিগত ভাবনা থেকে ঘোষণা করেছিলেন তিনি। মন্দির মেরামতের বরাদ্দের তুলনায় অনেকাংশে কম হওয়ায় ক্বওমি আলেমরা অভিমান করে সেটা গ্রহণ করেন নি...