গত দুই দিনে বাংলাদেশে যা ঘটে গেলো কেমন যেনো পরিচিত মনে হচ্ছে।
২০০৭ সালের মার্চ মাসঃ
আজম জে চৌধুরী নামে এক ব্যবসায়ীকে আটক করেছিল সেনা বাহিনী। আগেই বলে রাখা ভালো তখন দেশ চালাচ্ছিল জেনারেল মইন ও তার পারিষদ আর ঐ পুতুল সরকারের প্রধান ছিলো ফখরুদ্দিন আহমেদ। আজম চৌধুরীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে কিছু কাগজে দস্তখত নেয় সামরিক গোয়েন্দারা। ওই কাগজ দিয়ে থানায় মামলা হয় গোপনে এবং ৭ মার্চ রাতে আওয়ামীলীগ প্রধান শেখ হাসিনাকে আটক করে টেনে হিচড়ে কোর্টে তোলে সরকার। একই রাতে লক্ষীপুর বিএনপি-র সংসদ সদস্য প্রার্থী আমিন আহমেদ চৌধুরীকে আটক করে তার কাছ থেকে জোর করে নেয়া কাগজ দিয়ে এজাহার বানিয়ে গুলশান থানায় মামলা করা হয়। আর এ মামলার ওপর ভিত্তি করেই বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানকে আটক করা হয়। এর পরের কাহিনী সবার জানা। পরে অবশ্য আজম জে চৌধুরী এবং আমিন আহমেদ চৌধুরী দু’জনেই এসব গোমর ফাক করে দিয়েছেন এবং মামলাগুলো অকার্যকর হয়ে যায়।
এবার আসা যাক নগদ ঘটনায়ঃ
১ জুন ২০১০: দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার প্রকাশক (যদিও পত্রিকা কতৃপক্ষ প্রকাশক পাল্টেছেন, কিন্তু সরকারের খাতায় নাম বদল হয় নি) আলহাজ্ব হাসমত আলীকে আটক করে নিয়ে যায় এনএসআই। আটঘন্টা পরে তাকে ছেড়ে দিলেও ভয়ভীতি দেখিয়ে ২ টি কাগজে সই রেখে দেয়। এ কাগজ দিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার ব্যবস্থাপনায় একটি প্রতারনার মামলা দায়ের হয় আর আমার দেশের ডিক্লারেশন বাতিল করে ঢাকার জিলা প্রশাসক। এর পরে রাত ১১টায় আমারে দেশের প্রেস সিলগালা করা হয়। সম্পদক মাহমুদুর রহমানকে ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে ভোর পৌনে চারটায় আটক করে পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে অসংখ্য সেনা ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিল এ অভিযানে।
১৯৭৫ সালের ১৬ জুনঃ
বাকস্বাধীনতা হরনের কালো দিন এটি। বাকশাল আইনের অধীনে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মজিবুর রহমান দেশের ৪ টি পত্রিকা বাদে সকল পত্রিকার ডিকলারেশন বাতিল করেন। এর পরে জীবিকা নির্বাহের জন্য অনেক খ্যাতিমান সাংবাদিকও ঢাকা স্টেডিয়াম, গুলিস্তান ও প্রেসক্লাবের সামনে বাদাম বিক্রি করেছে। খাবার না পেয়ে অসুস্থ হয়ে বিনা চিকিৎসায় অনেকে মৃত্যুবরন করেছে।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারীঃ
সেনাপ্রধান লেঃ জেঃ মইন তার দলবলসহ প্রবেশ করেন বঙ্গভবনে এবং প্রেসিডেন্ট ডঃ ইয়াজউদ্দিন আহমদকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জারী করেন জরুরী অবস্থা। এ ফরমানের ওপর ভিত্তি করে সারা দেশে সেনা বাহিনী নামানো হয় চালায় অপারেশন। হাজার হাজার মানুষকে আটক করে অত্যাচার নির্যাতন চালানো হয়। তাদের সহায় সম্পদ নিয়ে নেয়া হয়, নির্য়াতন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে নানা রকম স্বীকারোক্তি ও অন্যের বিরূদ্ধে বানোয়াট মামলা দেয়া হয়।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরঃ
দাবী করা হয় একটি ভালো নির্বাচনের মাধ্যমে মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহন করেছে। যদিও বিরোধী দলের দাবী- ঐ নির্বাচন ছিল সমঝোতার। কারচুপি করে ক্ষমতায় আনা হয়েছে একটি দলকে।
২০১০ সালের ১৯ মেঃ
জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা পল্টনে এক জনসভায় বলেছেন, বর্তমান সরকার হলো ১/১১ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এক্সটেশেন। এদের ঘাড়ে ১/১১ ভূত রয়েছে।
১ জুন তারিখে আমার দেশ বন্ধ করার জন্য যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হলো তাতে কি এটা পরিস্কার হয় না- দেশে কোনো নির্বাচিত বেসামরিক সরকার নাই দেশ চালাচ্ছে- মইন বা তার লোকজন??
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১০ রাত ১:৫৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




