ভারত সরকারের টিপাই মুখ বাধের প্রতিবাদে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ সোচ্চার হলেও বরাক উপত্যকাবাসীর ভাবনা ভিন্ন। তারা মনে করছে এই বাধ নির্মিত হলে বরাক উপত্যকার ১৫ উপজেলার মধ্যে ১৩টি উপজেলায় আর কখানো দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হবেনা। সময় মত তারা পানি পাবে, পানি নিষ্কাশন হবে বলেই জানে তারা। তাছাড়া তারা বিভিন্নভাবে উপকৃত হওয়ার কথা শোনে এই বাধের পে অবস্থান নিয়েছে এক সময়ের বাংলাদেশের ঘনিষ্ট মিত্র বরাক উপত্যকাবাসী। বরং বাধ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে যারা ওখানে কথা বলতে যায় তাদেরকে সন্দেহের চোখে দেখেন তারা। বরাক উপত্যকার বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক, আইনজীবি, শিাবিদ, সংস্কৃতিকর্মী ও সাধারণ লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এসব ল্য করা গেছে।
বরাক উপত্যকার প্রখ্যাত গবেষক ড. তুষার কান্তি দাস জানান, ২০০৭ সালের প্রথম দিকে বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বরাক উপত্যকায় বেড়াতে যান। তখন তিনি টিপাই মুখ বাধের যৌক্তিক প্রতিবাদ করেন বিভিন্ন আলোচনায়। এসময় একটি স্থানীয় পত্রিকায় বাংলাদেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের লোকদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, প্রৃকৃতি ও পরিবেশের হুমকির বিষয়টি তোলে ধরেন মুহিত। তখন এ নিয়ে শিলচরে ােভের মুখে পড়েন তিনি। এমনকি একটি শ্রেণী তাকে ‘দালাল’ আখ্যায়িত করে সেখানে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে। এভাবেই যারা বরাকে গিয়ে টিপাই মুখ বাধের প্রতিবাদ করে বরাকবাসীর ােভের মুখে পড়তে হয় তাদের। বরাকবাসী এই বাধ নির্মাণের পে একাট্রা বলে তিনি জানান।
শিলচরের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবি ও আইনজীবি ইমাদ উদ্দিন বুলবুল বলেন, বরাক উপত্যকাবাসীর টিপাই বাধ নিয়ে কোন টেনশন নাই। বরং এই উপত্যকার ৯৫ ভাগ লোক এই বাধের প।ে ৫ ভাগ লোক এর বিপে পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সঙ্গে বরাকবাসী আতœীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ। কিন্তু অবস্থা এখন এমন হয়েছে বাংলাদেশের সাধারণ লোকজনকে তারা বন্ধু না শত্র“ ভাববে তাও সিদ্ধান্ত নিতে পারছেনা। যারা ভারত-বাংলার মৈত্রী স্থাপনের পে তারা কষ্টে আছে। তিনি বলেন, বরাকবাসী এখন গভীর চিন্তা করতে পারছেনা। অথচ শিলচরের লোকজন আসাম-মেঘালয়ে সাহিত্য, সংস্কৃতি, আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিচ্ছে। কিন্তু গত ৬০ বছর ধরে তারা বৃত্তে আটকা পড়েছে!। তারা কিভাবে টিপাইমুখ বাধের প্রতিবাদ করবে।
শিলচরের বিখ্যাত সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবি অতীন দাস বলেন, ২০০৭ সালে বরাক উপত্যকার ১৫টি উপজেলার মধ্যে ১৩টি উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা হয়। তখন সরকারিভাবে বলা হয় টিপাই মুখ বাধ সম্পন্ন না হওয়ায় এই দুর্ভোগ বাড়ছে, পানি যাচ্ছেনা। তাই বরাক উপত্যকার সাধারণ লোকজন এই বাধের প।ে তবে তিনি এর বিপ।ে তিনি বলেন, নদীকে বাধ দিয়ে কিছুই করা ঠিক নয়। তার গতি হারালে সভ্যতাও মারা যাবে। ফারাক্কা বাধের ফলে বাংলাদেশে বিভিন্ন এলাকা খরায় পরিণত হয়েছে। তিনি ভারত সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, নদীকে আপন গতিতে চলতে দিন। বিদ্যুতের লোভ দেখিয়ে টিপাইমুখের বাধের উপর নির্ভর করা উচিত নয়। কারণ এর সঙ্গে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের শুধু পরিবেশগত সমস্যাই নয় অর্থনৈতিক বিষয়ও জড়িত।
বরাক উপত্যকার প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবি ও ভাষা সৈনিক পরিতোষ পাল বলেন, টিপাই বাধ করার জন্য আমাদের সকল রাজিৈনতক শক্তি ঐক্যবদ্ধ। তাই তারা মুখে কলুপ এটে আছেন। অথচ এই বাধ বরাকবাসীর তেমন উপকারে আসবেনা। এর আগেও তা প্রমাণিত হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ১৯৬৩-৬৪ সনে বরাক ড্রামের জন্য তৎকালীন আসাম সরকার পাঞ্জাবের ইঞ্জিনিয়ার মিস্টার বলবন্ত সিং নাংকে বরাক ড্রামের সার্ভের জন্য নিয়োগ করেছিল। কিন্তু তিনি প্রকৃতি, পরিবেশ ও অন্যান্য বিষয়ের উপর গবেষণা করে বাধের বিরুদ্ধে তার রিপোর্ট জমা দেন। তিনি বলেছিলেন কোনমতেই বাধ দেওয়া চলবেনা। তারপরও আমাদের রাজনৈতিকক শক্তিগুলো এই বাধ করার পে অবস্থান নিয়েছে।
পরিবেশবিদ জিষ্ণু রায় বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি বাংলাদেশের জনমত টিপাই বাধের প।ে কিন্তু বরাকবাসীর অবস্থা সম্পূর্ণ উল্টো। তিনি বলেন, সাধারণ বরাকবাসী টিপাইমুখ বাধের প।ে তাদেরকে এমনভাবে বোঝানো হয়েছে যে এই বাধ হলে তারা বিভিন্নভাবে উপকৃত হবে। তাই বাংলাদেশ থেকে কেউ টিপাইমুখ বাধের বিপে বললে তারা অন্যরকম ভাবে। তবে সচেতন কিছু লোক উত্তরপূর্ব বাংলাদেশের যৌক্তিক উদ্বেগের কথা জানে। কিন্তু তাদের কিছু করার নেই। তারা কেন্দ্রীয় রাজনীতির কুট কৌশল দ্বারা প্রভাবিত। তিনি দুই দেশের মধ্যে এ বিষয় নিয়ে জরুরি ডায়লগের আহবান জানান।
প্রভাষক অর্জুন চৌধুরী বলেন, বরাকবাসীর টিপাইমুখ বাধের বিষয়ে বাংলাদেশের তির কথা অবগত নয়। তারা জানে এই বাধ হলে তারা বন্যা থেকে রা পাবে। জল বিদ্যুৎ পাবে। তাই এসব স্বাভাবিক কারণে তারা এর পক্ষে বরং তারা দ্রুত এর বাস্তবায়ন চায়।
##
(চলতি বছরের ফেব্র“য়ারিতে বরাক উপত্যকায় বেড়াতে গেলে কথা হয় আসাম, শিলচর, করিমগঞ্জের সুদীজনের সঙ্গে। বিভিন্ন বৈঠকে টিপাইমুখ বাধ নিয়ে কথা বলেই এই প্রতিবেদন।)
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।