somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গলির ধারে ধর্ষিত বিবেক !!!!

২৮ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ভারতবর্ষের প্রায় প্রতিটি মেয়ে তার বেড়ে উঠা বয়সে স্বপ্ন দেখে যে, তার জীবনটা হবে রূপকথার মতো। সাত সমুদ্র তেরো নদীর পার থেকে পক্ষীরাজ ঘোড়ায় চড়ে আসবে একরাজপুত্র। যাকে দেখে প্রথম দর্শনেই প্রেমে পড়ে যাবে সে, আর তারপর তার দুই হাতের বন্ধনে পাবে, "অপরীসীম ভালোবাসা”। তার রাজপুত্র তাকে নিজের করে, বিয়ে করে নিয়ে তুলবে তার রাজপ্রাসাদে আর সেখান দুজনে সুখে জীবন কাটিয়ে দেবে। সে স্বপ্নলোকের রাজপ্রাসদে অধিকাংশ নারী তার রাজপুত্রকে না পেলেও। এই কল্পনাকে পর্দায় বাস্তবে রূপায়িত করেছিলেন জেমস ক্যামিরন এবং বিল কনডন তাঁদের “বিউটি অ্যান্ড বিস্ট” ছবিতে। বিংশ শতাব্দীতে আমারা রাজপুত্ররা ভাবি ওটা নিতান্ত একটা ছবিই ছিল। আমরা পুরুষেরা এই সমাজের দেবতা। আমরা আমাদের কাপুরুষতা দিয়ে প্রতিদিন নতুন করে লিখি “বিউটি অ্যান্ড বিস্ট” রূপকথাটি। রুপকথাতে ‘বিস্ট হয়েও সে বিউটিকে ধর্ষণ করেনি, কারণ সে জানে ভালবাসা দিয়ে ভালবাসা পাওয়া যায়, আর ভালোবাসার পরিণতি বিয়ে। এখন এই রূপকথাটি হবে ‘বিস্ট সেই বিউটিকে ধর্ষণ করল, আর কনো এক সময় সমাজপতিদের চাপে বিয়ে করল। বিস্ট হয়েও ধর্ষণ করবে না!!! এটি কি হয়? ধর্ষণ যেখানে পুরুষের জন্য স্বাভাবিক, সেখানে বিস্টের জন্য তো বটেই ।
আর তথাকথিত ‘সতীত্ব’-এর ধারণা। নারীর হাত কেটে গেলে, পা ভেঙে গেলে বা অ্যাসিড নিক্ষেপের আক্রান্ত হলেও সে যে সহানভূতি পায়, ধর্ষিত হলেও তার কণাও পায় না। কারণ নারীর ‘সতীত্ব’ যাওয়া মানে পরিবার, সমাজের ‘সতীত্ব’ যাওয়া ।
কথা প্রসঙ্গ : ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সারাইকেলা-খারসাওয়ান জেলায় ১৭ বছরের এক কিশোরী স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সঙ্গে জড়ায় সে। এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে প্রিয়া ( ছদ্ম নাম )। এই খবর জানার পর তাকে ছেড়ে যায় ওই প্রেমিক। অবিবাহিত মেয়ের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরে সমাজে লজ্জিত হতে হবে, তাই প্রিয়ার পরিবারও তাকে পরিত্যাগ করে। বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় প্রিয়াকে। ফলে রাস্তায় থাকতে বাধ্য হয় সে। স্থানীয়রা জানায়, রাস্তার ধারেই পুরো চার মাস কাটায় প্রিয়া ( ছদ্ম নাম )। গত ২২ আগস্ট ভোর ৫টার দিকে প্রকাশ্য দিবালোকে উন্মুক্ত রাস্তায় সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য করা হয়েছে ভারতের ১৭ বছর বয়সী এই কিশোরীকে। বিয়ের আগেই গর্ভধারণের অপরাধে পরিবার তো তার পাশে ছিলই না, স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরাও তাকে কোনো সেবা দিতে রাজি হয়নি। ছবিতে দেখলাম কিছু জীব পাঁশে দাঁড়িয়ে তাঁর পাপ- পুণ্যর হিসাব করছে, আমি জানি না তাঁর বিবেক ধর্ষিত হয়েছে কি না?
আমি মানুষ আমার বিবেক ধর্ষিত হয়েছে হয়েছে হয়েছে!!!!!
যেহেতু খবরটা খুব ফোলাও করে মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়েছে এবার বুঝি আমার সমাজদেবদের একটু নড়েচেড়ে আসন পোক্ত করার সময়।
হটাৎ মনে পড়ে গেল ইতালির সিসিলি দ্বীপের ফ্রান্স ভায়োলা নামের এক সাহসী নারীর কাহিনি। ষাটের দশকের কথা। সেসময় ‘রিহ্যাবিটেশন ম্যারেজ’ নামে ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষিতার বিয়ে আইনগতভাবে স্বীকৃত ছিল। যার ফলে ধর্ষণের মতো অপরাধ থেকে ধর্ষক রেহাই পেত। মেলোডিয়া নামের এক ব্যক্তি ভায়োলাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করে, পরে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। ভায়োলা তার ধর্ষককে বিয়ে করতে অস্বীকার জানাল। উপরন্তু সে ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করল। প্রভাবশালী ধর্ষক ভায়োলার বাবার ক্ষেত-বাড়ি পুড়িয়ে দিল। ভায়োলা ক্ষান্ত দেয়নি। ইতালি পার্লামেন্ট বেকায়দায় পড়ে যায়। কারণ একদিকে যেমন ধর্ষণের শাস্তি ছিল, অন্যদিকে ধর্ষকের সঙ্গে বিয়েও আইনগত স্বীকৃতি ছিল। যা হোক ভায়োলা মামলায় জিতে গেল। মেলোডিয়ানের ১১ বছরের জেল হয়। ১৯৮১ সালে গিয়ে সে দেশে বিয়ে করলে ধর্ষককে শাস্তি অব্যাহতি দেওয়ার আইনটি বাতিল হয়।
আমার এমনই একজন ভায়োলাকে চাই।
তথ্য সূত্র : Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৩০
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×