somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফিরে দেখা ২০০৯ : সেরা ১০ বৈজ্ঞানিক অর্জন

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০০৯ সাল ছিল অসাধারণ বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি আর আবিস্কারসমৃদ্ধ একটি বছর। আবিষ্কারের এই সমৃদ্ধ তালিকা থেকে সেরা দশটির তালিকায় স্থান পেয়েছে অদ্ভূত, আকষর্নীয়, ও ইতিহাস সৃষ্টিকারি কিছু বিষয়। প্রযুক্তি বিষয়ক উইয়ার্ড ওয়েবসাইট এমন কিছু বৈজ্ঞানিক অর্জনের কথা জানাচ্ছে যা গত বছরটিকেই চিহ্নিত করে রাখবে। সে তালিকাটি পাঠকদের জন্য এখানে দেয়া হলো। এ তালিকায় ১০ম অর্জন থেকে শুরু করে সব শেষে ১ নম্বর গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের ক্রম অনুসরণ করা হয়েছে।

আবিষ্কার ১০ : ১১৪ তম মৌলিক কণার সন্ধান লাভ

লরেন্স বার্কলি ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির একটি সাইকোট্রনে ক্যালসিয়াম পরমাণুর একটি রশ্মির সাথে প্লুটোনিয়াম কণার সংঘর্ষ ঘটিয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয় বারের মত একজোড়া ১১৪ তম মৌলিক পদার্থের পরমাণুর সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এর আগে রাশিয়ান বিজ্ঞানীদের একটি দল এই কণা আবিষ্কারের কথা জানিয়েছিল। কিন্তু যথেষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষ না হওয়ায় এই বিষয়ে সংসয় থেকে গিয়েছিল। ২০০৯ সালে এই পরীক্ষার মাধ্যমে এই কণার অস্তিত্ব প্রমাণ করছেন বিজ্ঞানীরা। উৎপন্ন হওয়া অনেক ভর বিশিষ্ট এই কণার স্থায়িত্ব ছিল মাত্র ১ সেকেন্ডের ১০ ভাগের এক ভাগ সময়। এই বিষযে গবেষণা এখনও অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।


আবিষ্কার ৯ : ডেঙ্গু জ্বরের টিকা তৈরি হবার পথে কয়েক ধাপ

Dengu0104পৃথিবীতে প্রতি বছর ২ কোটি ৩০ লাখ লোক ডেঙ্গু জ্বরের শিকার হয়। এ বছরই ডেঙ্গু জ্বরের টিকা তৈরির পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে গেছেন বিজ্ঞানীরা। মানুষের শরীরে ক্রিপল ইয়েলো ভাইরাস এর সঙ্গে প্রোটিন যোগে এই ভাইরাসের টিকা তৈরির পথ খুঁজে পেয়েছেন তারা। তারা আশা করছেন ২০১২ সালের দিকে তারা এই টিকা তৈরিতে পুরোপুরি সফল হতে পারবেন। এই বছর তাদের আরেকটি উল্লেখযোগ্য কাজ ছিল এইচআইভি-র টিকা নিয়ে পরীক্ষা।


আবিষ্কার ৮ : ফুসফুসের ক্যান্সার শনাক্তকারি সেন্সর তৈরি

ইসরায়েল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকরা ক্যান্সার কোষ শনাক্তকারি একটি সেন্সর তৈরি করতে পেরেছেন যা ঘ্রাণ থেকে বুঝতে পারবে কোনো কোষ ক্যান্সার আক্রান্ত কিনা। এই সেন্সরে সোনা দিয়ে তৈরি ন্যানোপার্টিকেল ব্যবহার করা হয়েছে। ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ থেকে বের হওয়া টেলটেল সেট অব ভোলাটাইল অর্গানিক নামের রাসায়নিক পদার্থ শনাক্ত করতে পারে এই সেন্সর। এটি রোগীকে প্রাথমিক অবস্থায় সতর্ক করার মাধ্যমে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করবে। সোনার তৈরি ৯ সেটের ন্যানোপার্টিকেল ক্যান্সার আক্রান্ত কোষের রাসায়নিক গন্ধ পড়তে পারে বলে দাবী করেছেন বিজ্ঞানীরা।


আবিষ্কার ৭ : ঔষধের পার্শপ্রতিক্রিয়া হিসাব করতে কম্পিউটার প্রোগ্রাম

ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলাইনার একদল গবেষক একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম তৈরি করেছেন যা ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করবে। জটিল কোনো রোগের জন্য কোন ঔষধ খেতে হবে এই নিয়ে ভাবনার পথ বন্ধ করে দেবে এই উদ্ভাবন। কোন ঔষধ কি প¦ার্শপ্রতিক্রিয়া করতে পারে তার সবকিছু এই প্রোগ্রামে দেয়া আছে। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই তার ঔষধ নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে পারবেন। এই সফটওয়্যারে বিভিন্ন ঔষধ ওরাসায়নিকের তুলনামূলক চিত্র দেয়া আছে। বলা হচ্ছে এই প্রোগ্রাম ঔষধ উৎপাদকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য যেন আলাদিনের চেরাগ।


আবিষ্কার ৬ : আলোড়নকারি জেলিফিশ

সমুদ্রের জেলিফিশেরা শুধু খেলা নিয়ে মেতে থাকেনা। সমুদ্র উত্তাল করে বেড়ায় তারা। তাদের ডানা আর নিক্ষপ্ত তরলে আন্দোলিত হয় সমুদ্র। ঝড়ের সময় বাতাস যেমন সমুদ্রকে উত্তাল করে তোলে তেমনি এক ধরনের জেলিফিশ চলার সময় সমুদ্রের পানিকে আলোড়ত করে এগিযে যায়। ২০০৯ সালে জেলিফিশের এই ক্ষমতার আবিষ্কার তেমনি বিস্ময়কর।


আবিষ্কার ৫ : প্লাস্টিকের উপাদান বিসফেনল-এ মানুষের ক্ষতি করে

গবেষকেরা এই বছর জানিয়েছেন প্লাস্টিকের উপাদান বিসফেনল-এ মানুষের জন্য ক্ষতিকর। এই রাসায়নিক উপাদানটি ক্যান্সার সৃষ্টির জন্যও দায়ী। বিভিন্ন প্রাণীর উপর গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন বিসফেনল-এ প্রাণীদেহের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি মানুষের শরীরের জন্যও একই রকম ক্ষতির কারণ হতে পারে। প্লাস্টিক উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এই আবিষ্কার নিয়ে হৈচৈও করেছে।

আবিষ্কার ৪ : আয়ু বাড়ানোর কৌশল উদ্ভাবন

কোষের বৃদ্ধিকে কমিয়ে দিয়ে বয়সকে ঠেকিয়ে রাখতে বিজ্ঞানীরা কাজ করেছেন। এই প্রক্রিয়ার তারা কিছুটা সফলও হয়েছেন। মানুষকে দীর্ঘজীবি বানাতে তারা র‌্যাপামাইসিন নামের একধরণের ওষুধও তৈরি করেছেন। তারা ইঁদুরের উপর পরীক্ষা চালিয়ে সেটিকে ১৩ বছর পর্যন্ত বেশি বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছেন। তারা আশা করছেন মানুষকে বেশি দিন বাঁচিয়ে রাখতে তাদের গবেষণা সফল হয়েছে।


আবিষ্কার ৩ : সিজোফ্রেনিয়ার ধাধা শেষ হলো না


সিজোফ্রেনিয়া বিষয়ে গবেষকরা নিশ্চিত করেছেন এটি আসলে জিনগত। এই রোগের কারণ অনুসন্ধানে তারা ধাঁধাঁয় পড়ে গিয়েছিলেন। তারা প্রায় ৫০ হাজার জিনোম নিয়ে বিশ্লেষণ করেও সিজোফ্রেনিয়ার জন্য দায়ী জিনোম শনাক্ত করতে পারছিলেন না। তারা প্রায় ১০ হাজার আলাদা আলাদা জিনোম বৈশিষ্টের মুখোমুখি হয়েছিলেন যেগুলো সবই রোগের কারণ হতে পারে। ফলে তারা এই সমস্যার সুনির্দিষ্ট কারণ না বলে ঘোষণা করেন সিজোফ্রেনিয়া আসলে জিনোম থেকেই হয়।

আবিষ্কার ২ : আদ্রির খোঁজ


১৯৭৪ সালে ইথিওপিয়ার রিভারবেড থেকে উদ্ধার করা ৩২ লাখ বছর পুরানো ফসিল লুসিকে প্রাচীনতম প্রজাতির মানুষ মনে করা হলেও ২০০৯ সালে খোঁজ পাওয়া আদ্রি সেই ধারণা পাল্টে দেয়। লুসিরও ১০ লাখ বছর পুরানো আদ্রি নামের প্রাচিন ফসিলের মালিক আসলে এই সোজাভাবে হাঁটতে পারা পাইরেট। বিবর্তনের ধারায় মানুষ এসেছে এই মতবাদের ভিত্তিতে আদ্রিকে সর্বশেষ মিল সমৃদ্ধ আদিম মানুষের কাছাকাছি ধরা যায় যে দেখতে বানরপ্রজাতির মতো মনে হয় না। এটি মানুষ না বড় প্রজাতির বানর তা নিয়ে সংশয় থাকলেও অদ্রির আবিষ্কারের গুরুত্ব কিন্তু সীমাহীন।

আবিষ্কার ১ : জিন থেরাপিরা প্রত্যবর্তন

এই বছরের সেরা বৈজ্ঞানিক ঘটনার মধ্যে নিঃসন্দেহে জিন থেরাপির প্রত্যাবর্তন প্রথম স্থানে। মানুষের নিরাপদ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে এই ক্ষেত্রে উন্নতি অবশ্যই বড় ঘটনা বলে মন্তব্যকরেছে উইয়ার্ড। এই বছর জিন থেরাপি নিয়ে কাজ করা গবেষকদের ৪ টি দল তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল হন। এই গবেষণার ফলে এখন রক্তস্রোতের মাধ্যমে ডিএনএ, আরএনএ কোষের প্রয়োজনীয় স্থানে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে। জিনগত গবেষণায় এই বছরের বড় সাফল্য ছিল অন্ধত্ব, মস্তিষ্ক বিকৃতি, ইমিউন সিস্টেম ডিফিসিয়েন্সি, ত্বকের সমস্যাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জিন থেরাপির প্রয়োগ।


---------
সূত্রঃ বিডিনিউজ২৪ডটকম
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখনো নদীপারে ঝড় বয়ে যায় || নতুন গান

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২০

এ গানের লিরিক আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। ২৪ বা ২৫ এপ্রিল ২০২৪-এ সুর ও গানের প্রথম কয়েক লাইন তৈরি হয়ে যায়। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি অন্য একটা গান নিয়ে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×