''কোন গল্প নয়। এটা আমার জীবনের ভালবাসার কথা । তুমি গল্প লেখ । তাই তোমাকে বলতে খুব ইচ্ছে হল। আমি কারো কাছে এসব কথা কোনদিন প্রকাশ করিনি।''.. এভাবেই বলছিল মিলা। আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড। ওর মুখ থেকে যেভাবে শুনেছি সেভাবেই এখানে বর্ণনা দিলাম . . . . . . . . . . .
সময়টা ২০০২ সাল । তখন আমি ক্লাস এইটে পড়ি। থাকি মফসল শহরে। এই শহরের মোটামুটি অনেকেই আমাকে চেনে। আমি খুব ভাল অভিনয় করতাম। সেই জন্যে স্কুল কিংবা শহরের শিল্পকলা একাডেমীর মিলনায়তনে ছিল আমার সরব পদচারণা । শহীদ ভাইও শহরে খুব পরিচিত। তবে একটু অন্যভাবে । শহরে তার নামডাক ছিল গুন্ডা শহীদ হিসেবে। ওর বাবা শহরের নামী ব্যবসায়ী । খুবই প্রতাপশালী পরিবার ওরা।
শহীদ ভাই এর একটা বাইক ছিল কালো রঙের । ওটাতে করে সারাদিন টো টো করে ঘুরত । মারামারি করাতো তার নিত্যদিনের কাজ। আমি মনে মনে খুব ঘৃণা করতাম তাকে।
আমি বরাবরই ভালছাত্রী । অভিনয় আর পড়াশোনা এই দুইই ছিল আমার ধ্যান জ্ঞান। একদিন বিজয় দিবসের একটা প্রোগ্রাম ছিল আমাদের শহরে । আমি ঐ প্রোগ্রামে অভিনয় করি। মঞ্চ থেকে যখন নামি সবাই হাততালি দিচ্ছিল। গর্বে আমার বুক ফুলে উঠছিল। সবাই আমাকে কাছে এসে শুভেচ্ছা জানাচ্ছিল। হঠাৎ শহীদ ভাই আমার দিকে এগিয়ে আসল। আমার হাতে একটা চকলেট এর বক্স দিয়ে বলল, তুমি একদিন খুব বড় অভিনেত্রী হবে। আমি চুপচাপ তার হাত থেকে বক্সটা নিলাম। কিছু বললাম না।
শহীদ ভাই বলল, থ্যাংকসটাও বলবে না !
আমি জোর করে থ্যাংকস বললাম।
চলে আসলাম বাসায় সেদিনের মত ।
শহীদ ভাইকে আমাদের পাড়ার আপুরা বেশ পছন্দ করত। ভাইয়া সরসময় মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি রাখত। ওনার শ্যামলা গালে দাড়িগুলোর প্রশংসা করত অনেক আপু । ভাইয়া ছিলেন ৬ ফিটের মত লম্বা । মারামারি করতেন তাই তার পেটানো শরীর । তবে শুনেছি কোন মেয়েকেই নাকি তিনি পাত্তা দিতেন না। এই নিয়ে মেয়েদের অনেক আফসোস ছিল।
ক্লাস এইটের বার্ষিক পরীক্ষার শেষ দিন। আমি পরীক্ষা দিয়ে হল থেকে বের হচ্ছি। স্কুল গেইটে দেখি শহীদ ভাই দাঁড়ানো। চোখে সানগ্লাস । পরনে রেড টি শার্ট, ব্লু জিনস। হেলান দিয়ে বাইকের ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
আমাকে দেখেই কাছে ডাকল, এই যে দেবী, এদিকে আস।
আমি অনিচ্ছাসত্তে ওনার কাছে গেলাম। ওনার গা থেকে সিগারেট আর পারফিউমের গন্ধ মিলে একটা অন্যরকম গন্ধ পেলাম।
আমাকে ভয় পাও ?
না।
তাহলে ঘৃণা কর ?
না।
তাহলে ?
জানি না।
শহীদ ভাই হো হো কঢ়ে হেসে বললেন, ভাল ছাত্রিদের অনেক কিছু জানতে হয় ।
আমি ভাল ছাত্রী কে বলল?
তোমার অনেক খবর আমি রাখি।
কেন রাখেন ?
বাহবা ! তুমি আমোদের শহরের এত ভালো অভিনেত্রী আর তোমার খবর রাখব না ?
আমি একটু লজ্জা পেলাম ।
ওঠো, বাইকে ওঠো।
কেন? আমি একটু ভয় পেলাম ।
শহীদ ভাই হো হো করে আবার হাসলেন, ভয় নেই । তোমায় মরাব না।
আজ না ভাইয়া । আমতা আমতা করে বললাম ।
ধমক দিয়ে শহীদ ভাই আমাকে টেনে বাইকে তুলল । আমার বান্ধবীরা হা করে তাকিয়ে আছে।
শহীদ ভাই বাইকে স্টার্ট দিলেন। বললেন, আমাকে ধর। নাহলে পড়ে যাবে । বাইক ঝড়ের গতিতে ছুটে চলছে। আমি ভয়ে জড়িয়ে ধরলাম ভাইয়াকে। চোখ বুঁজে আছি। এভাবে ১৫ -২০ মিনিট ।
বাইক থামল। আমাদের শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা ছোট্ট নদীর পাশে। শেষ বিকেলের সূর্য তখন দিগন্ত ছুঁই ছুঁই । এই দৃশ্যটাকে তখন আমার কাছে বিভৎস লাগছিল।
বাইক থেকে নেমে চুপচাপ বসলাম। ঘাসের উপর । শহীদ ভাই আমার ডান পাশে বসা । আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তাকিয়েই আছে।
আচমকা আমার ডান হাতটা তার দু হাতের মুঠোয় তুলে নিল ।
তোমার হাত এত নরম কেন?
আমি কথা বললাম না।
তোমাকে আমার অনেক ভালো লাগে।
আমি চোখ দুটো বড় বড় করে তার দিকে তাকিয়ে থাকলাম।
বলেন কি এসব।
আমি ভয়ে কাঁপছি । এসব শুনে। হাসব না কাঁদব। বুঝতে পারছি না।
শহীদ ভাই আমার মুখ তা দুহাতের মাঝে নিয়ে আমার চোখের দিকে চেয়ে বলল, আমার চোখের দিকে তাকাও প্লিজ।
আমি ভয়ে ভয়ে তাকালাম। কেমন ঘোলাটে চোখ। ঘোর লাগানো। এই চোখ দুটোর জন্যে শহরের সব মেয়েরা পাগল।
শহীদ ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে আসল। আমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখল। আমার জীবনের প্রথম চুম্বন।
তবে আমার ভাল লাগছিল। শহীদ ভাইয়া অনেকক্ষণ ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁয়ে রাখলেন।
আমি বোকার মত কি করব বুঝতে পারছি না। এসব কি হচ্ছে আমার সাথে।
আমার হাত দুটো শহীদ ভাইয়াকে মনের অজান্তে জড়িয়ে ধরল। পেটানো শরীর। কেমন একটা পুরুষালী গন্ধ।
শহীদ ভাইয়া আমার মাথাটা তার বুকে চেপে ধরল। বলল, তুমি সারাজীবন আমার বুকে থাকবে এভাবে।
আমি তখন শহীদ ভাইয়ার লোমশ বুকে শ্বাস নিতে পারছিলাম না। কি বলে এসব?
সন্ধ্যা নামতে শূরু করেছে। ভাইয়াকে বললাম , আমি বাড়ি যাব।
শহীদ ভাই অপরাধীর মত বাইকে স্টার্ট দিল । পুরো রাস্তা কোন কথা হল না আমাদের মাঝে।
বাসায় ফিরেই কেমন একটা ঘোরের মাঝে পড়লাম। অংক মিলাতে পারছি না আজকের ঘটনার। মা বিষয়টা খেয়াল করলেন।
এই তোর কি হয়েছে? পরীক্ষা ভাল হয় নি?
আমি বললাম, পরীক্ষা ভাল হয়েছে। এমনি কিছু হয় নি। সারারাত ঘুম হল না। আমার কি হয়েছে? কে জানে? খুব অস্থির লাগছে? হায় হায় আগে তো এমন লাগে নি।
আমিতো এমন ছিলাম না ।
পরদিন সকাল দশটা বাজতেই একটা রিকশা নিয়ে সোজা শহীদ ভাইয়াদের বাসায়।
কলিং বেল বাজাতেই ওদের বাসার কাজের ছেলে দরজা খুললেন।
আরে মিলা আফা ! কেমন আছুইন ? অবিনয় কেমন চলতাছে।
ভাল , শহীদ ভাই কোথায় ?
উনিত রুমে, ঘুমাই তাসে। কেন কুন দরহার?
হ্যা, কাল শহীদ ভাই বলছিল কোন প্রোগ্রামের ব্যাপারে কথা বলবেন, তাই একটু কথা বলতাম।
সোজা গিইয়া বামপাশের কুনার রুমটাই ওনার। যাইন।
আমার বুক কাঁপছে। আমি এক পা দু পা করে এগুচ্ছি শহীদের রুমের দিকে। কি হয় কে জানে ?
রুমের পর্দা ফেলানো, আমি পর্দা সরিয়ে ভেতরে ঢুকলাম।
শহীদ ভাই ঘুমোচ্ছে । ঠিক যেন ছোট্ট শিশু। উপুড় হয়ে শুয়ে আছে।
পরনে একটা থ্রি কোয়ার্টার। খালি গা। হাত দুটো ভাঁজ করে মাথার কাছে রাখা।
আমি এগিয়ে গেলাম। ওর পিঠে ঠোঁট ছুঁয়ে বললাম, ভালবাসি।
হঠাৎ স্পর্শে শহীদ ভাই ধরফরিয়ে উঠল। ও গড। তুমি ?
হ্যা, আমি।
আমি কি এখনও ঘুমে?
সে তুমি জানো।
. .তুমি আমার. .তুমি আর কারো না।
আমায় কোলে তুলে নিল।
আমি ফিস ফিস করে বললাম . . এই যে গুন্ডা, দরজা কিন্তু খোলা।
শহীদ ভাই হুড়মুড় করে দরজায় সিটকিনি তুলে আমার কোলে মাথা রাখল।
আমার হাত তখন ওর চুলে। ও একদৃষ্টিতে আমার চোখের দিকে চেয়ে বলল, তুমি সত্যি আমার তো! অভিনয় করছো নাতো!
আমি ঠোঁট নামিয়ে ওর কপাল ছুঁলাম। এখন কি প্রমাণ দিতে হবে?
শহীদ ভাই আমার একটা হাত তার লোমশ সুঠাম বুকে রেখে বলল, এই বুকটা তোমার। এখানে আজ থেকে কেউ থাকবে না।
আমি হাসলাম।
শহীদ বলল, নাশতা করেছ?
না।
দাঁড়াও আমি ফ্রেশ হয়ে নাশতা আনছি।
আমি শহীদের পিছু পিছু ওর ওয়াশ রুমে গেলাম। ওর টুথ ব্রাশে পেষ্ট লাগিয়ে দিলাম। ও বোকার মত তাকিয়ে রইল। এসব কি হচ্ছে ভেবে?
আমি এবার হো হো করে হাসলাম।
শহীদ ভাইয়ার বাসার কাজের ছেলেটা একটা ট্রে তে করে নাশতা নিয়ে আসল।
শহীদ ভাই জেদ ধরল তাকে খাইয়ে দিতে হবে।
আমি পরোটা ছিঁড়ে সবজি দিয়ে তার মুখে দিলাম।
শহীদ ভাই খাওয়া বাদ দিয়ে ফ্যাল ফ্যাল কওে তাকিয়ে রইল।
আমি মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম, গুন্ডা বাবা খাবেন না!
শহীদ খাওয়া বাদ দিয়ে আমায় শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।
আমার খুব ভয় লাগছে ।
আমি যদি তোমায় হারিয়ে ফেলি! আমি কেমন করে থাকব ?
আমি ওর বুকে হাত বুলিয়ে বললাম, হারিয়ে যাবার জন্যে ভালোবাসিনি আমি।
শহীদ ভেতরে ভেতরে প্রচন্ড অস্থির। টের পাচ্ছিলাম আমি। আমারও শরীর জেগে উঠছে। কি করব বুঝতে পারছিলাম না।
শহীদ আমাকে তার অগোছালো বিছানায় শুইয়ে দেয়।
আমার দিকে তাকায়। আমার চোখে চুমু খায় । আমি শিউড়ে উঠি। ওর ঠোঁট আমার ঠোঁটের উষ্ণতা খুঁজে নেয়। আমি ওকে আঁকড়ে ধরি।
শহীদ আমার মসৃন বুকে ঠোঁট বুলায়। আমি বুঝতে পারি আমার বুকেও যে এতটা সুখ ছিল তা আমি টের পাইনি।
শহীদ আমার নাভিতে হাত বুলায় আমি কেঁপে উঠি। আমার ভেতরের মানুষ জেগে উঠেছে তখন।
শহীদ আমার গলায়, ঘাড়ে চুমু দেয়ে। আমাকে অস্থির করে ওর ভালোবাসা।
এর আগে আমার যৌন অভিজ্ঞতা নেই। আমি শুধু ওর শরীরের সাথে কথা বলে যাচ্ছি।
আমার হাত ওর লোমশ বুক, উরু ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে।
শহীদ আমায় কোলে তুলে নেয়। বলে, জান তোমায় অনেক ভালোবাসব।
আমি আদুরে বিড়ালের মত বললাম, আমাকে আদর করে মেরে ফেল।
শহীদ আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত অযুত লক্ষ্ চুমু খায়।
শহীদ আমাকে আরও জড়িয়ে ধরে। দুজনের শরীর একসাথে মিলেমিশে যাচ্ছে।
আমি কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলাম।
শহীদ আমার ঠোঁট ছুঁয়ে বলল, প্লিজ কথা বলো না, এখন ভালোবাসার সময়।
আমি ঠোঁটে ঠোঁট পুরে নিলাম।
আমার চোখ দিয়ে আবেগে জল চলে আসল।
আমি কাঁদছি. .ভালবাসলে মানুষ কাঁদে কেন?
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:৪১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




