somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বর্ষার সেই দিনগুলো বড় মিস করি

০৮ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বৃষ্টির আমেজ শুরু হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে ফিরে এসেছে স্বস্তি। বিশেষ করে ঢাকা শহরে গরম আবহাওয়ায় ভোগান্তি বেশি ছিল। বৃষ্টির দেখা মিললেই গ্রাম-গঞ্জের বর্ষাকাল মনে পড়ে যায়। বৃর্ষার দিনে কত গ্রাম-ঘাটে সেই ছোটবেলায় কত স্মৃতিমধূর দিনগুলো পেরিয়ে এসেছি। ইট-কাঠ-পাথরের নগরী ঢাকায় স্মৃতিগুলো তেমন গোছালো হয় না। কিংবা অনুভূতিগুলো অতটা আবেগপ্রবণ হয়না। সবকিছু যান্ত্রিক। এখানে মানুষের জীবনে যান্ত্রিক দানব ভর করে। প্রতিদিন অস্বস্তিতে ভরে ওঠে মন। মনে পড়ে যায় মাঠের পর মাঠ সবুজ ধানক্ষেতের কথা। জমির আইলের কথা। মেঠোপথের কথা। মেঠোপথে রাস্তায় ঘাসের ওপরে শুয়ে মাটির গন্ধ নেয়ার কথা। দুর্বাঘাসে আচ্ছাদিত পথের কথা।
গ্রাম-ঘাটে বর্ষার দিনগুলো থাকতো আবেগময়। সে আবেগ এখন আর নেই। কংক্রিটের শহর দিয়েছে বেগ। কেড়ে নিয়েছে আবেগ। কথাটি একজন লেখকের। সকালেও পড়লাম। নাম মনে নেই। গ্রামে বৃষ্টির দিনে টিনের ঘরের রিমঝিম আওয়াজ এখন খুবই মনে পড়ে। বাগানে গাছের পাতায় পাতায় বৃষ্টির শব্দ অন্য এক জগতে নিয়ে যেত। সেখানে ভর করতো কত স্মৃতি। বৃষ্টির দিনে স্কুল যাওয়া হতো না। চাল আর গম ভেজে দিতেন মা। চলতো মুড়ি মুড়কির আয়োজন। চারজন এক স্থানে হলেই বর্ষার দিনে তাস খেলতে বসে যেতাম। কাগজের তৈরি তাস। রাম শাম যদু মধু। যে কোনো এক প্রকার চারটি একত্র হলেই বাজিমাত। বুদ হয়ে থাকতাম। মারামারি রাগারাগি চলতো।

আমাদের গ্রামের বাগানবাড়িটা কমপক্ষে ১০ বিঘা জমির ওপরে হবে। এর মধ্যে একটা পুকুর আছে। পুকুরের পাশ দিয়েই পথ চলে গেছে মাঠে। দক্ষিণপাড়ার বৃষ্টির পানি ওই পথ দিয়েই মাঠে নেমে যেতো। উল্টো স্রোতে মাঠ থেকে উঠে আসতো চ্যাং (টাকি) মাছ। বদনা নিয়ে ঘুরতাম। পায়ে লেগে মাঠ লাফিয়ে ডাঙ্গায় উঠলেই ধরে বদনায়।

বৃষ্টির দিনে গ্রামঘাট একেবারে চুপ হয়ে যেতো। যাদের নিতান্তই প্রয়োজন তারা চাল ডাল আটা নিতে বেরিয়ে পড়তো। আমাদের বাড়িটা একবোরে নিশ্চল হয়ে যেত সন্ধ্যায়। বাগানে সুপারি গাছ বৃষ্টির পানিতে চকচকে হয়ে উঠতো। মনে ভর করতো কত স্মৃতি। বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালি পড়ে আরও ভাল লাগতো বৃষ্টির দিনগুলোতে। বড় আপু বিভূতিভূষণ পড়তেন। তখন ছোট হলেও আমিও পড়তাম। হাইস্কুলের গণ্ডির মধ্যেই পথের পাঁচালি শেষ করেছিলাম মনে পড়ে। সারা দিন শুয়ে থেকে রেডিও শোনা কিংবা কল্পনায় মেতে থাকা ছিল তখনকার দিনের কাজ। অনাবিল এক আবেগে ভরে উঠতো মন। ভেজা মাটিতে পা দিতেই মনটা ভরে উঠতো আনন্দে। সেই দিন আর নেই। নেই সেই আবেগ। বর্ষার সে আবেগকে বড় মিস করি আজ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:০৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×