দুষিত পানি থেকে বাঁচতে চান?
পানির অপর নাম জীবন-এটি অতি পুরাতন একটি প্রবাদ। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের বক্তব্য হতে প্রবাদটির সারবত্তার প্রমাণ পাওয়া যায়। তাদের মতে, মানব দেহ যত প্রকার রোগ-ব্যাধি দ্বারা আক্রান্ত হয় তার শতকরা আশি ভাগ সংক্রমিত হয় দূষিত পানি হতে। উন্নত দেশগুলোতে তাই বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় পানির বিশুদ্ধতা রক্ষা করা হয়। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার গাফিলতি প্রশ্রয় দেয়া হয় না। কিন্তু ঢাকা শহরে? কোন কোন সময় কোন কোন মহল্লায় সরবরাহ করা ওয়াসার পানি থাকে বিষাক্ত-বিবর্ণ-দুর্গন্ধযুক্ত। সময় সময় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যে, পান করা বা রান্না বান্নায় ব্যবহার করা তো পরের কথা, নাকের কাছে নেওয়া যায় না। বত্রিশ নাড়ি পাঁক দিয়ে ওঠে ।
ঢাকা ওয়াসার পানি দূষিত হওয়ার অনেক কারণের মধ্যে তিনটি প্রধান কারণ বলা যেতে পারে। তা হলো, পর্যাপ্ত দূরত্ব রক্ষা না করে সমান্তরালে পানির লাইন ও পয়ঃনিষ্কাশন লাইন স্থাপন, নাগরিক সচেতনতার অভাব এবং ওভারহেড ট্যাঙ্ক নিয়মিত পরিষ্কার না করা। ঢাকা শহরের বহু পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন লাইন যুগ-প্রাচীন। সেই কবে স্থাপন করা হয়েছে। এর পর জোড়াতালি ছাড়া কার্যত কিছু করা হয়নি। তদুপরি অনেকক্ষেত্রে লাইনগুলো গায়ে গায়ে লাগানো। ফলে কোন কারণে দুটি লাইনের কোন একটি অংশ ফেটে বা ভেঙ্গে গেলে খাবার পানির সঙ্গে ময়লা আবর্জনা মিশে যায়। অন্যদিকে অনেক সময় রাস্তার পাশের বাসিন্দা পানি বা স্যুয়ারেজ লাইন নেয়ার জন্য লোক নিয়োগ করেন। অনেকক্ষেত্রে তারা থাকে অদক্ষ। ফলে কোদাল চালাতে গিয়েও পাইপ ফেটে যায়। খাবার পানির সঙ্গে ময়লা মিশ্রিত হওয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়। অন্যদিকে ওভারহেড ট্যাঙ্ক নিয়মিত পরিষ্কার না করাও পানি দূষিত হয়ে পড়ার জন্য কম দায়ী নয়। এর ফলে ট্যাঙ্কে শুধু শেওলা জমা হয় না, ইঁদুর-বিড়াল পড়ে ও পচে-গলে পানি দূষিত ও দুর্গন্ধযুক্ত করে। অথচ কী গরম কী শীত! সারাক্ষণই মনে হয় গলাটা যদি একটু ভেজানো যেত। কিন্তু সেখানেই বিপত্তি। যেখানে সেখানের পানি দিয়ে তো আর তৃষ্ণা মিটবে না। কেননা পানি বিশুদ্ধ না হলে রয়েছে হাজার রোগের ভয়। আর গরমে পেটের অসুখগুলোর জীবাণু যে পানির মাধ্যমেই ছড়ায় তা সবারই জানা। আর পানি ফুটানো তো আরেক ঝামেলা। কেননা ফুটানো পানি নরমাল না করে খাওয়া যাবে না। এসব ঝামেলা সহজেই দূর করা যায় যদি ঘরে থাকে ফিল্টার।
ফিল্টার কেনার আগে
পানির ফিল্টার কাঁচ ও চাচের তৈরি হতে পারে। তবে স্টিলের তৈরি ফিল্টারও রয়েছে। নোভা, ব্ল্যাকার, কসমস, নোকা, মায়াকো, ডালকনসহ পানির বিভিন্ন ধরনের ফিল্টার রয়েছে। পুরো পানির ফিল্টারকে বিভিন্ন অংশে ভাগ করা হয়ে থাকে। ওপরের থাকে ক্যান্ডেল যা দেখতে সাদা গোল পাথরের মত। পাথর সেট বা কার্টিস এর সঙ্গে কল লাগানো থাকে। এছাড়াও আছে ফিল্টারের নিচের সাদা অংশ যাকে স্ট্যান্ড বলে। ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটে ফিল্টার এখন সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন ক্রোকারিজ কর্ণার এবং ইলেকট্রনিকসের শো-রুমগুলোতে পানির ফিল্টার পাওয়া যায়। মৌচাক মার্কেট, জেনেটিক প্লাজা, নিউমার্কেট, স্টেডিয়াম মার্কেট, বসুন্ধরা সিটিসহ ধানমন্ডির, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্রভৃতি শপেও পাওয়া যাবে পানির ফিল্টার। চাচের তৈরি পানির ফিল্টার ১৪০০-৩৫০০ টাকা, কাঁচের তৈরি ফিল্টার ২০০০-২১৫০ টাকায় পাওয়া যাবে। ক্যান্ডেল ৩৭৫ টাকা, কল ১৭৫-২০০ টাকা, কার্টিস ৩০০ টাকায় পাওয়া যাবে।
নিজের স্বাস্থ্য রক্ষার খাতিরে দুষিত পানি না খেয়ে পানির বিশুদ্ধতা রক্ষা করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা দরকার সকলের।
চোখের ব্যাংক
যাদের দুটো চোখই চলে গেছে তাদেরই আমরা দৃষ্টিহীন সংজ্ঞার আওতায় ফেলি। দৃষ্টিহীনতা সবদেশেই আছে। তবে এই দৃষ্টিহীনদের প্রায় শতকরা ছাপ্পান্ন ভাগ ছানির জন্য দৃষ্টিহীন এবং শতকরা প্রায় কুড়ি ভাগ কর্নিয়া অক্ষমতার জন্য দৃষ্টিহীন বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
যাদের কর্নিয়া খারাপ হয়েছে তাদের বেশিরভাগেরই কারণ অপুষ্টি আর কিছু ক্ষেত্রে জন্মগত দোষ, আঘাত, এ্যাসিডে বা তাপে পোড়া, ঝাঁঝালো বা বিষাক্ত ধোঁয়া ইত্যাদি। কারণগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় নিয়মিত এবং সময় মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে বেশিরভাগ সময়ই এই অন্ধত্ব নিবারণ করা সম্ভব। যেসব ক্ষেত্রে চিকিৎসা করা হয়নি অর্থাৎ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া হয়নি বা কোনো সুযোগই নেই সেখানেই অন্ধকার নেমে এসেছে। এইসব দৃষ্টিহীনদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়া মানবিকতার খাতিরে অবশ্যই প্রয়োজন।
এখন পর্যন্ত যে ব্যবস্থা কার্যকরী আছে তাতে করে একমাত্র নষ্ট হয়ে যাওয়া কর্নিয়ার ক্ষেত্রেই দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব। যাদের ক্ষেত্রে চোখের অন্য অংশ ঠিক আছে অথচ কর্ণিয়া খারাপ তাদের ক্ষেত্রে চক্ষুব্যাংকের সাহায্যে দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা যেতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা সম্ভব হওয়ার সম্ভাবনা কম।
চক্ষু ব্যাংক এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে সুস্থ চোখ বিশেষভাবে সংরক্ষিত রাখা যায় এবং তাকে ভবিষ্যতে কাজে লাগানো যেতে পারে। কিন্তু এই চোখ পাওয়া যাবে কোথা থেকে? আপাতত মানুষের চোখ নিয়েই এই ব্যাংক।
মানুষের চোখ সংগ্রহ করা যেতে পারে দুভাবে -(১) যারা মৃত্যুর আগে চোখ দান করে গেছেন (২) যারা দুর্ঘটনায় মারা গেছেন এবং যাদের দেহের দাবীদার কেউ নেই। এই দুটো ক্ষেত্রেই চোখ স্বাভাবিক থাকা চাই এবং (৩) মৃত্যুর দুই থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে চোখ সংগ্রহ করা চাই। প্রথম ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির মৃত্যুর আগে সম্মতির প্রয়োজন। এটা কার্যকরী করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। যে সব কেন্দ্রে চক্ষুব্যাংক আছে তাদের সঙ্গে ইচ্ছুক ব্যক্তি মৃত্যুর আগে যোগাযোগ করবেন। সেইসব কেন্দ্রে বিশেষ কার্ড পাওয়া যায়। তিনি সেই কার্ডে নিজের সম্মতি জ্ঞাপন করে ঠিকানা জানিয়ে জমা দেবেন সেই কেন্দ্রেই। মৃত্যুর সঙ্গে-সঙ্গেই তাঁর আÍীয়-স্বজন সেই কেন্দ্রে খবর পাঠাবেন। তখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাঁর দল নিয়ে মৃত ব্যক্তির চোখ সংগ্রহ করতে যাবেন। এটা একটা অপারেশন করে করা হয় এবং যাতে মুখের বিকৃতি না দেখায় সেজন্য একটি নকল চোখ বসিয়ে দেওয়া হয়। সংগ্রহ করা চোখ একটি আধারে সংরক্ষণ করে উপযুক্ত দ্রবণে রাখা হয়। সাধারণত এই সংগৃহীত চোখ চব্বিশ থেকে আটচল্লিশ ঘণ্টা পর্যন্ত ভালো থাকে ও অন্য চোখে বসাবার উপযুক্ত থাকে। সংগৃহীত চোখ থেকে এক কর্নিয়া তুলে নিয়ে অন্য কোনো দৃষ্টিহীনের চোখ স্থাপন করতে হবে যার এক কর্নিয়াই খারাপ। এইভাবে দাতার কর্নিয়া গ্রহীতার চোখে অপারেশন করে বসানোকে কর্ণিয়া গ্রাফটিং বলে। যদি চব্বিশ থেকে আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে গ্রহীতা পাওয়া যায় তাহলে পুরো কর্ণিয়া গ্রাফট করা হয়। এই সব ক্ষেত্রে দাতা এবং গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ যদি আগে থেকে জানা থাকে তবে ভালো হয়। কারণ দুজনেরই রক্তের গ্রুপ যদি একই হয়, তাহলে অপারেশন সফল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। কারণ কোনো-কোনো ক্ষেত্রে যেমন যেখানে বিভিন্ন রক্তের গ্রুপ অথবা অন্য কোনো কারণের জন্য দেখা যায় যে, গ্রহীতার শরীর নতুন কর্নিয়া গ্রহণ করেনি। একে গ্রাফট রিজেকশান বলা হয় অর্থাৎ অপারেশন কার্যকরী হয়না। এটা অনেকটা এড়ানো যায় যদি রক্তের গ্রুপ বা শরীরের প্রতিষেধক ক্ষমতা জানা যায়।
পানির অপর নাম জীবন-এটি অতি পুরাতন একটি প্রবাদ। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের বক্তব্য হতে প্রবাদটির সারবত্তার প্রমাণ পাওয়া যায়। তাদের মতে, মানব দেহ যত প্রকার রোগ-ব্যাধি দ্বারা আক্রান্ত হয় তার শতকরা আশি ভাগ সংক্রমিত হয় দূষিত পানি হতে। উন্নত দেশগুলোতে তাই বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় পানির বিশুদ্ধতা রক্ষা করা হয়। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার গাফিলতি প্রশ্রয় দেয়া হয় না। কিন্তু ঢাকা শহরে? কোন কোন সময় কোন কোন মহল্লায় সরবরাহ করা ওয়াসার পানি থাকে বিষাক্ত-বিবর্ণ-দুর্গন্ধযুক্ত। সময় সময় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যে, পান করা বা রান্না বান্নায় ব্যবহার করা তো পরের কথা, নাকের কাছে নেওয়া যায় না। বত্রিশ নাড়ি পাঁক দিয়ে ওঠে ।
ঢাকা ওয়াসার পানি দূষিত হওয়ার অনেক কারণের মধ্যে তিনটি প্রধান কারণ বলা যেতে পারে। তা হলো, পর্যাপ্ত দূরত্ব রক্ষা না করে সমান্তরালে পানির লাইন ও পয়ঃনিষ্কাশন লাইন স্থাপন, নাগরিক সচেতনতার অভাব এবং ওভারহেড ট্যাঙ্ক নিয়মিত পরিষ্কার না করা। ঢাকা শহরের বহু পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন লাইন যুগ-প্রাচীন। সেই কবে স্থাপন করা হয়েছে। এর পর জোড়াতালি ছাড়া কার্যত কিছু করা হয়নি। তদুপরি অনেকক্ষেত্রে লাইনগুলো গায়ে গায়ে লাগানো। ফলে কোন কারণে দুটি লাইনের কোন একটি অংশ ফেটে বা ভেঙ্গে গেলে খাবার পানির সঙ্গে ময়লা আবর্জনা মিশে যায়। অন্যদিকে অনেক সময় রাস্তার পাশের বাসিন্দা পানি বা স্যুয়ারেজ লাইন নেয়ার জন্য লোক নিয়োগ করেন। অনেকক্ষেত্রে তারা থাকে অদক্ষ। ফলে কোদাল চালাতে গিয়েও পাইপ ফেটে যায়। খাবার পানির সঙ্গে ময়লা মিশ্রিত হওয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়। অন্যদিকে ওভারহেড ট্যাঙ্ক নিয়মিত পরিষ্কার না করাও পানি দূষিত হয়ে পড়ার জন্য কম দায়ী নয়। এর ফলে ট্যাঙ্কে শুধু শেওলা জমা হয় না, ইঁদুর-বিড়াল পড়ে ও পচে-গলে পানি দূষিত ও দুর্গন্ধযুক্ত করে। অথচ কী গরম কী শীত! সারাক্ষণই মনে হয় গলাটা যদি একটু ভেজানো যেত। কিন্তু সেখানেই বিপত্তি। যেখানে সেখানের পানি দিয়ে তো আর তৃষ্ণা মিটবে না। কেননা পানি বিশুদ্ধ না হলে রয়েছে হাজার রোগের ভয়। আর গরমে পেটের অসুখগুলোর জীবাণু যে পানির মাধ্যমেই ছড়ায় তা সবারই জানা। আর পানি ফুটানো তো আরেক ঝামেলা। কেননা ফুটানো পানি নরমাল না করে খাওয়া যাবে না। এসব ঝামেলা সহজেই দূর করা যায় যদি ঘরে থাকে ফিল্টার।
ফিল্টার কেনার আগে
পানির ফিল্টার কাঁচ ও চাচের তৈরি হতে পারে। তবে স্টিলের তৈরি ফিল্টারও রয়েছে। নোভা, ব্ল্যাকার, কসমস, নোকা, মায়াকো, ডালকনসহ পানির বিভিন্ন ধরনের ফিল্টার রয়েছে। পুরো পানির ফিল্টারকে বিভিন্ন অংশে ভাগ করা হয়ে থাকে। ওপরের থাকে ক্যান্ডেল যা দেখতে সাদা গোল পাথরের মত। পাথর সেট বা কার্টিস এর সঙ্গে কল লাগানো থাকে। এছাড়াও আছে ফিল্টারের নিচের সাদা অংশ যাকে স্ট্যান্ড বলে। ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটে ফিল্টার এখন সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন ক্রোকারিজ কর্ণার এবং ইলেকট্রনিকসের শো-রুমগুলোতে পানির ফিল্টার পাওয়া যায়। মৌচাক মার্কেট, জেনেটিক প্লাজা, নিউমার্কেট, স্টেডিয়াম মার্কেট, বসুন্ধরা সিটিসহ ধানমন্ডির, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্রভৃতি শপেও পাওয়া যাবে পানির ফিল্টার। চাচের তৈরি পানির ফিল্টার ১৪০০-৩৫০০ টাকা, কাঁচের তৈরি ফিল্টার ২০০০-২১৫০ টাকায় পাওয়া যাবে। ক্যান্ডেল ৩৭৫ টাকা, কল ১৭৫-২০০ টাকা, কার্টিস ৩০০ টাকায় পাওয়া যাবে।
নিজের স্বাস্থ্য রক্ষার খাতিরে দুষিত পানি না খেয়ে পানির বিশুদ্ধতা রক্ষা করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা দরকার সকলের।
চোখের ব্যাংক
যাদের দুটো চোখই চলে গেছে তাদেরই আমরা দৃষ্টিহীন সংজ্ঞার আওতায় ফেলি। দৃষ্টিহীনতা সবদেশেই আছে। তবে এই দৃষ্টিহীনদের প্রায় শতকরা ছাপ্পান্ন ভাগ ছানির জন্য দৃষ্টিহীন এবং শতকরা প্রায় কুড়ি ভাগ কর্নিয়া অক্ষমতার জন্য দৃষ্টিহীন বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
যাদের কর্নিয়া খারাপ হয়েছে তাদের বেশিরভাগেরই কারণ অপুষ্টি আর কিছু ক্ষেত্রে জন্মগত দোষ, আঘাত, এ্যাসিডে বা তাপে পোড়া, ঝাঁঝালো বা বিষাক্ত ধোঁয়া ইত্যাদি। কারণগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় নিয়মিত এবং সময় মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে বেশিরভাগ সময়ই এই অন্ধত্ব নিবারণ করা সম্ভব। যেসব ক্ষেত্রে চিকিৎসা করা হয়নি অর্থাৎ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া হয়নি বা কোনো সুযোগই নেই সেখানেই অন্ধকার নেমে এসেছে। এইসব দৃষ্টিহীনদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়া মানবিকতার খাতিরে অবশ্যই প্রয়োজন।
এখন পর্যন্ত যে ব্যবস্থা কার্যকরী আছে তাতে করে একমাত্র নষ্ট হয়ে যাওয়া কর্নিয়ার ক্ষেত্রেই দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব। যাদের ক্ষেত্রে চোখের অন্য অংশ ঠিক আছে অথচ কর্ণিয়া খারাপ তাদের ক্ষেত্রে চক্ষুব্যাংকের সাহায্যে দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা যেতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা সম্ভব হওয়ার সম্ভাবনা কম।
চক্ষু ব্যাংক এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে সুস্থ চোখ বিশেষভাবে সংরক্ষিত রাখা যায় এবং তাকে ভবিষ্যতে কাজে লাগানো যেতে পারে। কিন্তু এই চোখ পাওয়া যাবে কোথা থেকে? আপাতত মানুষের চোখ নিয়েই এই ব্যাংক।
মানুষের চোখ সংগ্রহ করা যেতে পারে দুভাবে -(১) যারা মৃত্যুর আগে চোখ দান করে গেছেন (২) যারা দুর্ঘটনায় মারা গেছেন এবং যাদের দেহের দাবীদার কেউ নেই। এই দুটো ক্ষেত্রেই চোখ স্বাভাবিক থাকা চাই এবং (৩) মৃত্যুর দুই থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে চোখ সংগ্রহ করা চাই। প্রথম ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির মৃত্যুর আগে সম্মতির প্রয়োজন। এটা কার্যকরী করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। যে সব কেন্দ্রে চক্ষুব্যাংক আছে তাদের সঙ্গে ইচ্ছুক ব্যক্তি মৃত্যুর আগে যোগাযোগ করবেন। সেইসব কেন্দ্রে বিশেষ কার্ড পাওয়া যায়। তিনি সেই কার্ডে নিজের সম্মতি জ্ঞাপন করে ঠিকানা জানিয়ে জমা দেবেন সেই কেন্দ্রেই। মৃত্যুর সঙ্গে-সঙ্গেই তাঁর আÍীয়-স্বজন সেই কেন্দ্রে খবর পাঠাবেন। তখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাঁর দল নিয়ে মৃত ব্যক্তির চোখ সংগ্রহ করতে যাবেন। এটা একটা অপারেশন করে করা হয় এবং যাতে মুখের বিকৃতি না দেখায় সেজন্য একটি নকল চোখ বসিয়ে দেওয়া হয়। সংগ্রহ করা চোখ একটি আধারে সংরক্ষণ করে উপযুক্ত দ্রবণে রাখা হয়। সাধারণত এই সংগৃহীত চোখ চব্বিশ থেকে আটচল্লিশ ঘণ্টা পর্যন্ত ভালো থাকে ও অন্য চোখে বসাবার উপযুক্ত থাকে। সংগৃহীত চোখ থেকে এক কর্নিয়া তুলে নিয়ে অন্য কোনো দৃষ্টিহীনের চোখ স্থাপন করতে হবে যার এক কর্নিয়াই খারাপ। এইভাবে দাতার কর্নিয়া গ্রহীতার চোখে অপারেশন করে বসানোকে কর্ণিয়া গ্রাফটিং বলে। যদি চব্বিশ থেকে আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে গ্রহীতা পাওয়া যায় তাহলে পুরো কর্ণিয়া গ্রাফট করা হয়। এই সব ক্ষেত্রে দাতা এবং গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ যদি আগে থেকে জানা থাকে তবে ভালো হয়। কারণ দুজনেরই রক্তের গ্রুপ যদি একই হয়, তাহলে অপারেশন সফল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। কারণ কোনো-কোনো ক্ষেত্রে যেমন যেখানে বিভিন্ন রক্তের গ্রুপ অথবা অন্য কোনো কারণের জন্য দেখা যায় যে, গ্রহীতার শরীর নতুন কর্নিয়া গ্রহণ করেনি। একে গ্রাফট রিজেকশান বলা হয় অর্থাৎ অপারেশন কার্যকরী হয়না। এটা অনেকটা এড়ানো যায় যদি রক্তের গ্রুপ বা শরীরের প্রতিষেধক ক্ষমতা জানা যায়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




