somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সেলিনা জাহান প্রিয়া
আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোর গঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

মহামারি ও জীবনহানি যুগে পর যুগ

১৬ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


২০১১-২০১৭ এই সাত বছরে বিশ্ব ব্যাপি ১৩০৭ টি মহামারির মতো ঘটনা ঘটেছে। ভূতত্ত্ববিদ বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বলেছেন ১০০ বছর পর পর প্রকৃতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন সাধিত হয়। পৃথিবীর ভূঅভ্যন্তরে আছে বিশালাকার প্লেট, যা প্রাকৃতিক নিয়মে অবিরত নড়াচড়া করছে। বলা হচ্ছে প্রতি ১০০ বছর পর পর তাদের অবস্থানের পরিবর্তন ঘটছে। এর ফলে মহামারি ব্যাপক আকার ধারণ করছে, গ্রামকে গ্রাম উজার হচ্ছে, নগরসভ্যতা হারিয়ে যাচ্ছে মহামারিতে। বিভিন্ন লিখিত রচনাতে আমরা এসব মহামারি ও মানব সভ্যতায় তার সুদূরপ্রসারী প্রভাবের নিদর্শন জানতে পারি।
কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে অতীতে বিভিন্ন জাতির ধ্বংস ,এবং ওল্ড টেস্টামেন্টে গ্রন্থে ঈশ্বরের শাস্তি হিসেবে মহামারির বিভিন্ন নিদর্শনের বর্ণনা পাই। আবার প্রাচীন গ্রিসের ইতিহাসবিদ থুকিডাইডিসের রচনাতেও মহামারির উল্লেখ পাওয়া।এসব মহামারি ভাইরাসবাহী রোগ। ভাইরাস হলো একপ্রকার অতিক্ষুদ্র জৈব কণা বা অণুজীব। ভাইরাস অর্থ বিষ।আদিতে যে কোন ধরনের বিষাক্ত পদার্থকে ভাইরাস বলা হতো।ভাইরাস আবিষ্কার এর বহু আগে এই মহামারিতে শতশত নগর সভ্যতা বিলুপ্ত হয়ে যায়।পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীনতম সভ্যতা মিসরীয় মমির গায়েও বসন্ত রোগের চিত্র পাওয়া গেছে।
১৬৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৮০ খ্রিষ্টাব্দ সেই রোম মাত্র ১৫ বছরে জনমানব শূন্য হয়ে যায় গুটি বসন্তের কারণে। সে সময় রোমকে বলা হতো ভূতের নগরী। এমন কি পুরো রোমে বাতি দেওয়ার মতো একজন মানুষও জীবিত ছিল না।রাজপরিবারের সদস্যরাও এর প্রকোপ থেকে রেহাই পাননি। বিখ্যাত রোমান সম্রাট মার্কাস অরেলিয়াসের ভাই লুইসিয়াস ভেরাসও মারা যান।খ্রিস্টপূর্ব ৪৩০ এ গ্রিসের ফুসফুস নামে খ্যাত এথেন্সে বসন্ত রোগে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়, যা ছিল ওই নগরের ২০ শতাংশ মানুষ।বসন্ত রোগটি ভেরিওলা ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায়। সংক্রামক এই রোগটি একজন মানুষের ত্বকের সাথে আরেকজনের স্পর্শে ছড়ায়। এমনকি বাতাসের মাধ্যমেও এই রোগ ছড়ায়।যে রোমান সভ্যতার সে সময় চিকিৎসায় ব্যাপক সুনাম ছিল।
২৫০ খ্রিষ্টাব্দে সাইপ্রিয়ানের প্লেগ মহামারী রোমান সাম্রাজ্যকে বিপর্যস্ত করে দেয়। এরপর, পঞ্চম শতাব্দীতে একদিকে যুদ্ধ অন্যদিকে এই মহামারি পরাক্রমশালী পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যকেই ধ্বংস করে দেয়। আবার ষষ্ঠ শতাব্দির প্রথমভাগে রোমান সাম্রাজ্যেও পূর্ব অংশের সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ান , রোমান সাম্রাজ্যকে আবার আগের মত প্রতাপশালী অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করেন, বিউবনিক প্লেগ মহামারিতে তার মৃত্যু সেই সম্ভাবনাকেও শেষ করে দেয়। পরবর্তীতে দুই শতাব্দীতে বিউবনিক প্লেগে প্রায় ১০ কোটি মানুষ মারা যায়। এই রোগ মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় ছড়ায়। ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর মহামারী বলা হয় একে। ।মানুষের মরা পচা দুর্গন্ধ বাতাস দূষিত হয়। পশুপাখি, কীট পতঙ্গ সব মারা যায়। পঞ্চম শতকে ইরাক,ইরান তথা মেসোপটেমিয়া অঞ্চলে প্রায় ২ লক্ষ মানুষ মারা যায় প্লেগ রোগে।বলা হয় পার্সিয়ার অর্ধেক মানুষ মারা যায় এই রোগে।
৬০০ শতকের প্রথমার্ধে পুরো দুনিয়ায় ৪০%মানুষ মারা যায় প্লেগ রোগে ৭৩৫-৭৩৭ এই দুই বছরে শুধুমাত্র জাপানে এক তৃতীয়াংশ মানুষ মারা যায়। একই সময় প্লেগ রোগে বাইজানটাইন সাম্রাজ্য ধ্বংস হয়। ১৬ শতকে ম্যাক্সিকোতে ৮০%, ইতালিতে ৩ লক্ষ প্লেগ রোগে মারা যায়। দুনিয়াব্যাপী ফ্রক্স, ইনফ্লুয়েঞ্জা, টাইফয়েড, অজানা রোগে ৯০% মানুষ মারা যায়। উনিশ শতকে তামাম দুনিয়া ইনফুয়েঞ্জা নাড়িয়ে দেয়। ১৩৩৪ সালে গ্রেট প্লেগ অব লন্ডন হিসেবে স্বীকৃত প্লেগ আসে চীন থেকে। এরপর ইতালির ফ্লোরেন্স শহরেই ছয় মাসে প্লেগে মারা যায় ৯০ হাজার মানুষ।কয়েক বছরে এশিয়া ও ইউরোপে মারা যায় ৫ কোটি মানুষ। প্লেগ রোগটি মূলত একটি জীবাণুবাহী ভাইরাসের নাম। এর সৃষ্টি কোথা হতে তা সঠিক ইতিহাস জানা যায়নি, তবে আধুনিক বিজ্ঞান বলছে, ইঁদুরের খাদ্য ও প্রস্রাব থেকে এই রোগটি হয়েছে। এই রোগ সম্ভবত এশিয়ায় উৎপত্তি হয় এবং পরবর্তীতে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।মধ্য এশিয়া হতে বাণিজ্য বিস্তার সময় ইউরোপে জাহাজে ইঁদুরের মাধ্যমে গোটা ইউরোপ এ রোগ ছড়ায়। গ্রীনল্যান্ডের প্রতাপশালী ভাইকিং জলদস্যুরা এই মহামারির ফলে সমুদ্রে তাদের নিয়ন্ত্রণ হারায়। গোটা ব্রিটেনের সামন্ত ব্যবস্থা এই প্লেগের কারণে বিপর্যস্ত হয় এবং নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার শর্ত তৈরি হয়।ইউরোপের মোট জনসংখ্যার ৩০-৬০ ভাগ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এই মহামারির কবলে পড়ে ১৪’শ শতাব্দীতে বিশ্বের জনসংখ্যা ৪৫০ মিলিয়ন থেকে ৩৫০-৩৭৫ মিলিয়নে নেমে আসে।পঞ্চদশ শতাব্দির শেষভাগে, ক্যারিবিয়ান দীপপুঞ্জে স্প্যানিশ বণিকেরা নিয়ে আসে ভয়ংকর স্মলপক্স, বিউবনিক প্লেগ ও হামের মত জীবাণু। ইউরোপিয়ানরা এইসব রোগ প্রতিরোধী হলেও ক্যারিবিয়ানের মানুষের শরীরে এই রোগের প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ছিলো না। এর ফলে প্রায় ৯০ ভাগ আদিবাসী জনগোষ্ঠী এইসব রোগে মৃত্যুবরণ করেন। ১৫১৯ সালে বর্তমান মেক্সিকোতে স্মলপক্স ছড়িয়ে পড়লে দুই বছরে মারা যায় প্রায় ৮০ লাখ মানুষ।
১৫২০ সালে ইউরোপিয়ানদের সাথেআসা একজন আফ্রিকান দাস স্মলপক্স নিয়ে আসলে গোটা এজটেক সাম্রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে এই মহামারি।উপনিবেশিক শক্তি গোটা আমেরিকা মহাদেশে শুধু তরবারি দিয়েই হত্যা করেনি। রোগ বালাই নিয়ে এসেও মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়েছে। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দিতে ইউরোপিয়ানদের বয়ে আনা জীবাণুর কারণে আমেরিকা মহাদেশে প্রায় ৫ কোটি ৬০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। আদিবাসীদের এই গণহারে মৃত্যু গোটা আমেরিকা মহাদেশে ইউরোপিয়ানদের আধিপত্য করার সুযোগ করে দেয়।১৬৩৩ সালে ফ্রান্স, গ্রেট বৃটেন ও নেদারল্যান্ডসবাসীদের মাধ্যমে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসে স্পলপক্স ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় ২ কোটি মানুষ মারা যায় বলে দাবি করেন ইতিহাসবিদরা।১৬৬৫ সালের দিকে দি গ্রেট প্লেগ অব লন্ডন’-এ লন্ডনের জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মৃত্যুবরণ করে। এছাড়া, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিস্তারের সাথে সাথে সৈনিকদের মাধ্যমে ভারতবর্ষে কলেরা ছড়িয়ে পড়ে। ভারতবর্ষ ছাড়াও স্পেন, আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া, চীন, জাপান, ইতালি, জার্মানি ও আমেরিকায় দেড়শ বছরের মধ্যে প্রায় দেড় কোটি মানুষ কলেরায় মারা যায়। ১৭৯৩ সালে আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ায় ইয়েলো ফিভার মহামারী আকার ধারণ করে। এতে নগরের ১০ ভাগের এক ভাগ, প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ মারা যায়।
১৮৫৫ সালের দিকে চীন, হংকং ও ভারতে প্রায় দেড় কোটি মানুষ প্লেগে ভুগে মারা যান। ১৯১৮ সালে শুরু হওয়া স্প্যানিশ ফ্লুতে পৃথিবীতে মারা যায় ৫ কোটি মানুষ। মহামারির এরকম বহুনিদর্শন পাওয়া যায় ইতিহাসে।প্রাকৃতিক দুর্যোগে যুগে যুগে শত শত নগর সভ্যতা বিলুপ্ত হয়ে গেছে যেমন।তেমনি ইতিহাস থেকে জানা যায় ১৭২০ সালে দুনিয়া জুড়ে ২০ কোটি মানুষ শুধু মাত্র প্লেগ রোগে মারা যায়। তার ১০০ বছর পর ১৮২০ সালে শুধুমাত্র ভারত ও পূর্ব এশিয়া কলেরা রোগে মারা যায় লক্ষ লক্ষ মানুষ। এবং আফ্রিকা ইউরোপে বসন্ত রোগে মারা যায় ৩৫ লক্ষ মানুষ। তারও ১০০ বছর পর ১৯২০ সালে দুনিয়া জুড়ে মারা যায় ৫ কোটি মানুষ।
১৮৬০ সালে আধুনিক যুগে প্লেগ ছড়ায় এতে চীন, ভারত ও হংকংয়ে ১ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ মারা যায়। পরে ১৮৯০ এর দশকে প্লেগের ভ্যাকসিন উদ্ভাবন হয়। বিশ শতকের সবচেয়ে বড় প্লেগ মহামারী দেখা দেয় ১৯১০ সালে। চীনের মাঞ্চুরিয়ায় দুই বছরে মারা যায় প্রায় ৬০ হাজার মানুষ।বিশ্বজুড়ে ১৯১৮ সালে গ্রেট ফ্লু মহামারী রূপ নেয়। এতে দুই বছরে সারা বিশ্বে মারা যায় ৩ কোটির বেশি মানুষ।১৯১৮ থেকে ১৯১৯ সাল সময়ে ইনফ্লুয়েঞ্জাতে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫ কোটি মানুষ মারা যায়। ভয়াবহ এই মহামারীকে তখন নাম দেওয়া হয় ‘‘স্প্যানিশ ফ্লু’’। এটি ‘দ্য ইনফ্লুয়েঞ্জা প্যানডেমিক’ নামেও পরিচিত।গুটিবসন্ত বা স্মল পক্স ভ্যারিওলা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হতো এবং এটি অত্যন্ত মারাত্মক এক ব্যাধি ছিল।গুটিবসন্তের টিকা আবিষ্কৃত হয়েছিল ১৭৯৬ সালে। অথচ টিকা আবিষ্কারের প্রায় ২০০ বছর পরও এই রোগে আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে ভারতে। ১৯৭০ সালে লক্ষাধিক মানুষ রাতারাতি এ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।১৯৭৫ সালেই ভারতকে গুটিবসন্ত মুক্ত ঘোষণা করা সম্ভব হয়। আমেরিকায় ১৯৫২ সালে পোলিওতে আক্রান্ত হয় প্রায় ৬০ হাজার শিশু, এতে তিন হাজারের বেশি মারা যায়।প্রথম এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয় ১৯৮৪ সালে। এই ভাইরাসের কারণে এইডস রোগে সে বছরই আমেরিকায় মারা যায় ৫,৫০০ জন। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৩৫ মিলিয়ন মানুষ এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত। আর এ পর্যন্ত এইডসে মারা গেছে আড়াই কোটির বেশি মানুষ।সার্স বা সিভিয়ার একিউট রেস্পিরেটরি সিনড্রোম এ ২০০২ সালের নভেম্বর থেকে ২০০৩ সালের জুলাইয়ের মাঝে ১৭টি দেশে ৭৭৪ মানুষের প্রাণ সংহার করেছিল। বিশ্বজুড়ে ২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লু বা এইচ ওয়ান এন ওয়ান ফ্লুতে ১৮,৫০০ জন মারা গেছে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এই রোগে মৃত্যুর সংখ্যা ৫ লাখ ৭৫ হাজার বলেও ধারণা করা হয়। হাইতিতে ২০১০ সালে ভয়ংকর এক ভূমিকম্পের পর কলেরা মহামারী রূপ নিলে ১০ হাজার মানুষ মারা যায়।
২০১২ সালে ভাইরাসজনিত রোগ হামে মারা যায় ১ লাখ ২২ হাজার মানুষ। সে বছর পুরো বিশ্বে ব্যাকটেরিয়া সংক্রামক রোগ টিউবারকিউলোসিসে মারা যায় ১.৩ মিলিয়ন মানুষ। এছাড়া প্রতি বছর টাইফয়েড জ্বরে মারা যাচ্ছে ২ লাখ ১৬ হাজার মানুষ।মার্স বা মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম ২০১২ সালে প্রথম সৌদি আরবে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হয় এবং সেখানে আক্রান্তদের ৩৫শতাংশ মারা যায়। সৌদি আরব ছাড়াও এর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে ওমান, আরব আমিরাত, মিসর ইত্যাদি মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কটি দেশে। ধারণা করা হচ্ছে, মানবদেহে এই ভাইরাস এসেছে উট থেকে। কাতার, ওমান, সৌদি আরব ও মিসরে উটের রক্তেও মার্স ভাইরাসের অস্তিত্ব পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এছাড়া সৌদি আরবে বাদুড়ের রক্তেও পাওয়া গেছে এই ভাইরাস। মানুষ থেকে মানুষে ভাইরাস ছড়িয়েছে হাঁচি, কাশি, নিকট অবস্থান ইত্যাদি থেকে।নিপাহ ভাইরাস বাদুড় থেকে পশুপাখি ও মানুষের মধ্যেও সংক্রমিত হতে পারে। ১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ায় শূকরের মধ্যে প্রথম এ রোগ চিহ্নিত হওয়ার পর সেখানকার কৃষি শহর নিপাহ'র নামে ভাইরাসটির নামকরণ হয়েছে। পশুপাখি থেকে প্রায় তিনশ মানুষের এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে যার মধ্যে অন্তত একশ জনের মৃত্যু হয়েছে।ইবোলা ভাইরাসে সংক্রমিত হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃত্যুই অবধারিত।১৯৭৬ সালে এ ভাইরাসের অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হয়।ইবোলা ভাইরাসের পাঁচটি ভিন্ন নাম রয়েছে - ইবোলা-জায়ারে, ইবোলা-সুদান, ইবোলা-আইভোরি কোস্ট, ইবোলা-রেস্টন এবং ইবোলা-বুন্দিবুগিও। এ নামকরণগুলো ছড়িয়ে পড়া এলাকার নামানুসারে হয়েছে। ভয়ংকর এই ইবোলাভারাসে মৃত্যুহার ৫০ শতাংশের মতো।পশ্চিম আফ্রিকায় ২০১৪ সালে ইবোলা জ্বরে মারা যায় অন্তত ১১,৩০০ জন। জিকা ভাইরাস উগান্ডার জিকা ফরেস্ট এলাকায় বানরের মধ্যে ১৯৪৭ সালে এটি আবিষ্কৃত হয়। তবে আফ্রিকা ও এশিয়ায় এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। মশার মাধ্যমে দ্রুত এ ভাইরাসটি ছড়ায়। ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটেছে এমন কোনো রোগীকে এডিস মশা কামড়ানোর মধ্য দিয়ে এর স্থানান্তর হয়। পরে ওই মশাটি অন্য ব্যক্তিদের কামড় দিলে তা ছড়াতে থাকে। এরপর ওই ব্যক্তিদের মাধ্যমেই ভাইরাসটির বিস্তার ঘটতে থাকে।
ডেঙ্গু ২০১৯ সালে এশিয়ার কয়েকটি দেশে এডিস মশা বাহিত রোগ ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ে। ফিলিপাইনে প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ মানুষ মারা গেছে। বাংলাদেশের মতো থাইল্যান্ড,ফিলিপাইন, মালয়েশিয়াতেও ছড়িয়ে পড়ে ডেঙ্গু। এখন আমরা ২০২০ সালে অবস্থান করছি। করোনাভাইরাস ১৯৬০-এর দশকে প্রথম আবিষ্কৃত হয়।করোনা ভাইরাস শব্দটি ল্যাটিন করোনা থেকে নেওয়া হয়েছে যার অর্থ মুকুট।প্রথমদিকে মুরগির মধ্যে সংক্রামক ব্রঙ্কাইটিস ভাইরাস হিসেবে এটি প্রথম দেখা যায়। মানুষের মধ্যে পাওয়া ভাইরাস দুটি ‘মনুষ্য করোনা ভাইরাস ২২৯ই’ এবং ‘মনুষ্য করোনা ভাইরাস ওসি৪৩’ নামে নামকরণ করা হয়।এরপর থেকে বিভিন্ন সময় ভাইরাসটির আরো বেশ কিছু প্রজাতি পাওয়া যায় যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০০৩ সালে ‘এসএআরএস-সিওভি’, ২০০৪ সালে ‘এইচসিওভি এনএল৬৩’, ২০০৫ সালে ‘এইচকেইউ১’, ২০১২ সালে ‘এমইআরএস-সিওভি’ এবং সর্বশেষ ২০১৯ সাল চীনে ‘নোভেল করোনাভাইরাস’। চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস ঘিরে ক্রমেই ছড়াচ্ছে আতঙ্ক।২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনা ভাইরাসের একটি প্রজাতির সংক্রমণ দেখা দেয়। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মানবদেহে যে রোগ হয় তার নাম কোভিড-১৯।২০২০ সালের ১৩ মার্চ পর্যন্ত চীনের সাথে সাথে ১২১টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে, ৪৯৯৯০ জনের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করে। নিশ্চিতভাবে বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে আরো ১,৩৫,১৬৬ জন রোগী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং ৭০,৩৯৫ জনের বেশি লোক চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে উঠেছে বলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর হতে জানা যাচ্ছে।
সুত্র ইন্টার নেট এবং বিভিন্ন পত্রিকা অনলাইন ।।










সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১১:০২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×