somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবদুল কারিম গিউলা জার্মানাস

২৩ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গত পর্বে ব্লগার 'চাঁদগাজী' মন্তব্য করেছিলেনঃ এমনভাবে লেখার দরকার,পাঠক যেই পর্ব পড়ুক না কেন,যেন বুঝতে পারেন কি নিয়ে লেখা।
এই পর্বে ‘জার্মানাসে’র ধর্মান্তরিত হওয়া ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে ব্যাপক আকারে ধর্ম -আলোচনা আছে। অতএব এই পর্বটা পড়ার আগে ভেবে নিয়েন। ( সেই সাথে ‘প্রথম তিব্বতিয়ান-ইংরেজী অভিধানের লেখক ‘সানডো কসোমা’র অতি সংক্ষিপ জীবনী)
শান্তি নিকেতনঃ
মুসলিম বিশ্বের ইতিহাস, সাংস্কৃতিক ইতিহাস, রাজনীতি এবং সাহিত্যের বিষয়ে তাঁর জ্ঞান জার্মানাসকে একটি অস্বাভাবিক সুযোগ দিয়েছে। ১৯২৮ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের (বর্তমানে আরবি, ফারসি, উর্দু ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ) ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ভারতে আমন্ত্রণ জানান। তিনি তিন বছর তাঁর স্ত্রী হাজনস্কি রাস্কের সাথে শান্তিনিকেতনের বাংলায় কাটিয়েছিলেন এবং শান্তি নিকেতনের প্রথম দিককার সেই দিনগুলোতে পর্যাপ্ত ক্লাস রুম এমনকি ব্ল্যাকবোর্ড না থাকায় খোলা আকাশের নীচে ছাত্রদের তিনি প্রাচ্য ও ইসলামী স্টাডিজ বিষয়ে শিখিয়েছিলেন।
শোনা যায়, শান্তি নিকেতনে তিনি তিন বৎসর শিক্ষকতা করেছিলেন। সেই সময়ে তার সহধর্মিণীর সাথে অতি সাধারন একটা কুটিরে সংসার পেতেছিলেন।

এক-ই সাথে, তিনি নিজেকে উন্নত করার জন্য অনেক সময় উৎসর্গ করেছিলেন, উদাহরণস্বরূপ: তিনি সংস্কৃত অধ্যয়ন শুরু করেছিলেন, এবং অন্যান্য ছোট প্রকল্পগুলিতে কাজ করার জন্য। এই বছরগুলিতে হাঙ্গেরীয় প্রধানমন্ত্রী পেল টেলিকি তাকে ভাষা গত দৃষ্টিকোণ থেকে মাওরি এবং মুন্ডা ভাষা অধ্যয়ন করতে বলেছিলেন।

গ্রীষ্মকালে ভারত ভ্রমণ করে তিনি এবং তাঁর স্ত্রী মুগ্ধ হয়েছিলেন। তারা দার্জিলিংয়ের বিখ্যাত হাঙ্গেরিয়ান প্রাচ্যবিদ ‘সানডোর কারাসি কসোমা’র সমাধিতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তারা কাশ্মীর ভ্রমণ করেছিলেন।
সময় কাল উল্লেখ নেই তবুও ধারনা করা যায়, এই ভ্রমণের সময়-ই জার্মানাস লখ-নৌ, লাহোর এবং ঢাকায় ( সম্ভবত: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ে) বক্তৃতা দিয়েছিলেন।
(সানডোর কসোমা ডি ক্যারিস -হাঙ্গেরিয়ান:জন্ম স্যান্ডর কসোমা;২৭ শে মার্চ ১৭৮৪ –মৃত্যু ১১ এপ্রিল ১৮৪২) একজন হাঙ্গেরিয়ান ফিলোলজিস্ট এবং প্রাচ্যবিদ ছিলেন,প্রথম তিব্বতিয়ান ইংরেজি অভিধান এবং ব্যাকরণ বইয়ের লেখক। তাকে তিব্বতিতে ফাই-গ্লিন-জি-গ্রোয়া-পা বলা হত,যার অর্থ "বিদেশী ছাত্র",এবং ১৯৩৩ সালে জাপানিরা তাকে বোসাতসু বা বোধিসত্ত্ব(বৌদ্ধ সাধু) ঘোষণা করেছিলেন। কসোমা ডি কারেসকে তিব্বতত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কথিত আছে যে তিনি সতেরোটি ভাষায় পড়তে পেরেছিলেন।১৮৩১ থেকে ১৮৪২ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতায় ছিলেন- ১৮৪২ সালে ‘লাসা’য় ভ্রমণের চেষ্টা করার সময় তিনি দার্জিলিংয়ে মারা যান এবং এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গল কর্তৃক তাঁর সম্মানে একটি স্মারক স্থাপন করা হয়। ১৯৯২ সালে তার স্মরণে একটি পার্ক ‘তার’এ খোলা হয়েছিল এবং দালাই লামা উদ্বোধন করেছিলেন। জাপানের টোকিওর বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ে তার প্রস্তর মূর্তি আছে।)

১৯৩০ সালের ডিসেম্বরে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করার জন্য তাকে দিল্লিতে আমন্ত্রণ জানানো হয় , সেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জাঁকির হুসেনের সাথে পরিচিত হন (১৯৬৭ সালে ভারতের তৃতীয় রাষ্ট্রপতির পদ লাভ করেন) এবং সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের (১৯৬২ সালে ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি) সঙ্গে তাঁর পরিচিতি ঘটে।

তাঁর জীবনের এই সময়টি অভিজ্ঞতা এবং মুসলিম হওয়ার বিষয়ে তাঁর ধারণাগুলি এবং আবেগের বিকাশে প্রচুর পরিমাণে সমৃদ্ধ হয়েছিল। তিনি ইসলামী সংস্কৃতি এবং ইতিহাস সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান বৃদ্ধি করেছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি কুরআন জীবনযাপন করছিলেন এবং দিল্লির জামে মসজিদে জুমার নামাজে অংশ নিয়েছিলেন।

এখানে আমরা জেনে নেই স্বয়ং গুইলা জার্মানাসের কাছ থেকে তার মুসলিম হওয়ার আগের রাতে ঘটে যাওয়া মহা বিস্ময়কর ঘটনাটা:

এক রাতে নবী মুহাম্মদ (সঃ) আমার সামনে উপস্থিত হলেন। তাঁর লম্বা দাড়ি মেহেদি রঙ্গে রাঙ্গানো হয়েছিল, তাঁর পোশাকগুলি খুব সাধারণ কিন্তু খুব সূক্ষ্ম ছিল এবং সেগুলি থেকে অতি মনোরম সুগন্ধ বের হচ্ছিল। তাঁর চোখে ছিল বিস্ময়কর স্বর্গীয় জ্যোতি! তিনি আমাকে মৃদু স্বরে সম্বোধন করলেন, "তুমি কেন চিন্তা কর? সোজা পথটি তোমার সামনে,পৃথিবীর বুকে নিরাপদে ছড়িয়ে আছে;বিশ্বাসীর উচিত আত্মবিশ্বাসের সাথে সেই পথ অনুসরণ করা।
"হে ঈশ্বরের রসূল’,আমি আরবি’তে অতি ব্যাকুলতার সাথে বলেছিলাম, "স্বর্গীয় উপদেশ আপনাকে যখন আপনার পথে চালিত করে এবং স্বয়ং আল্লাহ্‌ যখন আপনার সাথে থাকেন- তখন যে কোন বাধা অতিক্রম করে আপনি গৌরবের সাথে এগিয়ে যেতে পারেন- আপনি সমস্ত শত্রুদের জয় করেছিলেন।
-তবে আজো আমার ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এবং আমি জানি না কখন বিশ্রাম(বা শান্তি)পাব? "
তিনি আমার দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকালেন এবং তারপরে চিন্তায় ডুবে গেলেন,অল্পক্ষণ পরেই তিনি আবার কথা বললেন: তাঁর আরবি এতটাই স্পষ্ট ছিল যে, প্রতিটি শব্দ রূপার ঘণ্টার মতো বাজছিল। মহান নবীর কণ্ঠে যেন ঈশ্বরের আদেশ ঝরল ; যেন আমার বুকে কেউ প্রকাণ্ড ভারী বোঝা দিয়ে চাপিয়ে দিয়েছে “আ লাম নাজ'আল-আরদা মিহাদান --- আমি কি পৃথিবীকে শয্যা হিসাবে স্থাপন করিনি এবং পর্বতমালাকে শিবির হিসাবে স্থাপন করেনি এবং আপনাকে যুগল দ্বারা সৃষ্টি করেছি এবং নিদ্রা দিয়েছি বিশ্রামের জন্য ...!
"আমি ঘুমাতে পারছিলাম না."আমি অসহ্য ব্যথায় চিৎকার করে উঠলাম, "দুর্ভেদ্য পর্দা দিয়ে ঢাকা রহস্য গুলো আমি সমাধান করতে পারছি না। আমাকে সাহায্য করুন হে মুহাম্মদ (সঃ),হে আল্লাহর নবী আমাকে সাহায্য করুন!"
আতঙ্কে আমার কণ্ঠ থেকে এক ভয়াবহ কান্না-জনিত চিৎকার বেরিয়ে আসতে চাইল- আমার শ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে চাইছে,আমি নিশ্বাস নেবার জন্য হাত-পা ছুড়ছি--- আমি নবীজীর ক্রোধের আশঙ্কা করেছিলাম। আচমকা অনুভব করলাম যেন, একটা বিন্দুর মত টুপ করে আমি অতল গভীর তলিয়ে গেলাম --- অবশেষে আমি জেগে উঠলাম। রক্ত আমার ভাগ্য ললাটে ছিটকে গেল, আমার শরীর ঘামে স্নান করছিল,আমার প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ব্যথায় টন টন করছিল। ভয়ঙ্কর এক নীরবতা আমাকে ঘিরে ধরেছিল এবং আমি ভীষণ বিষণ্ণ ও একাকী বোধ করছিলাম।
এর কদিন বাদেই ‘গুইলা জার্মানাস’ যখন ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হনঃ

আব্দুল করিম জার্মানাসের নিজের জবানীতে শুনি সেদিন দিল্লীর জামে মসজিদে কি হয়েছিল;
পরের শুক্রবার দিল্লির বিশাল জুমা মসজিদে একটি কৌতূহলী দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছিল। শুভ্র কেশযুক্ত ফ্যাকাসে মুখের অচেনা একটি লোক মুসলমান মুসুল্লিদের ভিড়ের মধ্যে দিয়ে কয়েকজন প্রবীণদের সাথে আমার কনুই ধরে অগ্রসর হচ্ছিল।
আমি তখন ভারতীয় পোশাক পরেছিলাম, আমার মাথায় ছিল ছোট রামপুরী ক্যাপ, আমি আমার বুকে একটি তুর্কি ব্যাজ পরেছিলাম যা কোন এক প্রাক্তন তুর্কি সুলতান আমাকে উপহার দিয়েছিলেন। উপস্থিত মুমিনগণ অবাক ও আশ্চর্য হয়ে আমার দিকে তাকিয়েছিলেন। আমাদের ছোট দলটি সরাসরি মিম্বারের দিকে এগিয়ে যায়,যার চারপাশে জ্ঞানী,প্রবীণ সম্মানিত ব্যক্তিদের দ্বারা ঘিরে ছিল। যারা আমাকে উচ্চস্বরে সালাম দিয়ে, বিনীতভাবে গ্রহণ করেছিলেন।
আমি মিম্বারের কাছে বসে পড়লাম,আমার চোখ মসজিদের সুন্দর অলঙ্কৃত দৃশ্যের দিকে নিবদ্ধ হল। এর মাঝের তোরণটিতে বন্য মৌমাছিরা তাদের বাসা তৈরি করেছিল এবং চারপাশে তারা অনবরত সশব্দে উড়ছিল।
হঠাৎ আজানের ধ্বনিতে আমি চমকে উঠলাম এবং মসজিদের বিভিন্ন প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা মুকাব্বিররা দাঁড়িয়ে সেই আজানের কথা মসজিদের সবচেয়ে দূর-প্রান্তে প্রেরণ করলেন। এই স্বর্গীয় আদেশে সৈন্যদের মতো প্রায় পঁচিশ হাজার (উইকি পিডিয়াতে উল্লেখ আছে পঞ্চাশ হাজার আর অন্য খানে চল্লিশ হাজার) লোক উঠে দাঁড়াল এক কাতারে। সারি সারি মুসুল্লি কাতার করে গভীর নিষ্ঠার সাথে সবাই প্রার্থনা করেছিল – আমি ছিলাম তাদের মধ্যে একজন। সেটি একটি দারুণ উজ্জ্বল মুহূর্ত ছিল!
খুতবা (খুতবা) প্রচারের পরে,জনাব আবদুল হাই আমাকে আমার হাত ধরে মিম্বারের কাছে নিয়ে গেলেন। আমার পায়ে কারো শরীরের স্পর্শ যেন না লাগে সেইজন্য আমাকে খুব সতর্কতার সাথে চলতে হচ্ছিল। অবশেষে আমার জীবনের চরম-তম মুহূর্ত উপস্থিত হল;
আমি মিম্বারের সিঁড়িতে গিয়ে দাঁড়ালাম-মসজিদের চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল জনতার মধ্য তখন চরম উত্তেজনা।সবাই উত্তেজনায় চিৎকার করছে- সামনের কয়েক হাজার পাগড়ী মাথা যেন ফুলের চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। শুভ্র শ্মশ্রুমণ্ডিত আলেম উলামার ধূসর দাড়িওয়ালা আমাকে ঘিরে রেখেছে এবং তারা উচ্চস্বরে আশীর্বাদ করছিল এবং আমাকে অনুপ্রাণিত করছিল।
আমি আমার মধ্যে একটি অস্বাভাবিক স্থিরতা অনুভব করেছিলাম এবং কোনও বিকার বা ভয় ছাড়াই আমি আস্তে আস্তে মিম্বারের সপ্তম ধাপে আরোহণ করলাম। সেখান থেকে থেকে আমি মসজিদের প্রাঙ্গণে জড় হওয়া মুসুল্লিদের ভিড়ের দিকে নজর দিলাম। যেন উত্তাল সমুদ্রের সামনে আমি দাঁড়িয়ে আছি। ‘মাশা-আল্লাহ’ আমার কাছাকাছি যারা দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা উচ্চস্বরে বলছিলেন। সেই মানুষগুলি ছিলেন চরমভাবে উচ্ছ্বসিত এবং উষ্ণ,স্নেহের দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়েছিলেন '।
"আইয়ুহ আল-সাদাত আল-কিরাম", আমি আরবিতে শুরু করেছি --- `আমি দূর থেকে এসে জ্ঞান অর্জন করতে এসেছি যা আমি বাড়িতে অর্জন করতে পারিনি। আমি আপনার কাছে অনুপ্রেরণার জন্য এসেছি এবং আপনারা এই আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন। আমি তখন আল্লাহ ও তাঁর নবীর সাথে যে অলৌকিক কাজ করেছিলেন তা বিশ্ব ইতিহাসে ইসলাম যে কাজ করেছিল তার কথা বলেছিলাম। আমি বর্তমান মুসলিমদের পতন এবং যে উপায়ে তারা নতুনভাবে আরোহণ করতে পারে তার ব্যাখ্যা দিয়েছিলাম। এটি একটি জনপ্রিয় মুসলিম উক্তি যে, সমস্ত কিছু ‘আল্লাহ্'র ইচ্ছার’ উপর নির্ভর করে। তবে পবিত্র কুরআন বলে যে, ‘যে জাতি নিজের ভাগ্য উন্নয়নের চেষ্টা করে না আল্লাহ তাদের ভাগ্য উন্নয়ন করেন না'। আমি এই কোরআনের বাক্যটিতে নিজের জীবনের বক্তব্য হিসেবে নিয়েছি এবং পবিত্র জীবন বেছে নিয়েছি ও পাপাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছি।
আমার বক্তব্য শেষে আমি বসে পড়লাম। মসজিদ ও সামনের চত্বরের প্রতিটি কোণ তখন ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হচ্ছিল। তারা ছিল অপ্রতিরোধ্য,আর আমার কাছে ছিল চরম-রোমাঞ্চকর!
এর পর আমি আর কিছুই ভাল করে মনে করতে পারিনা- শুধু আবছায়া মনে আছে কারা যেন আমার কনুই ধরে টেনে মসজিদের বাইরে নিয়ে গিয়েছিল। "এত –‘তাড়াহুড়া কেন?" আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম.
মুসুল্লিরা আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরছিল। অনেক দুর্দশাগ্রস্ত হত-দরিদ্র মুসুল্লি আমার দিকে একসাথে হুমড়ি খেয়ে পড়ছিল। তারা আমার দোয়া চাচ্ছিল এবং মাথায় চুম্বন করতে চেয়েছিল।
"হে আল্লাহ!’ আমি ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে বলেছিলাম,"নির্দোষ লোকদের আমাকে তাদের উপরে তুলতে দেবেন না! আমি আলোর আশায় ঘুরে বেড়ানো অতি তুচ্ছ শক্তিহীন কিট মাত্র!’
সেই নিরীহ লোকদের দীর্ঘশ্বাস ও আশা আমাকে লজ্জিত করেছে যেন আমি চুরি করেছি বা প্রতারণা করেছি। একজন রাষ্ট্রনায়ক,যার প্রতি লোকেরা বিশ্বাস রাখে,যাদের কাছ থেকে তারা সাহায্যের আশা রাখে এবং যাকে তারা নিজের থেকে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করে,তারা জানে এটি কত ভয়াবহ বোঝা।" ‘জার্মানাস’

জার্মানাসের ধর্মান্তরিত হবার সংবাদ মুসলিম বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রগুলিতে তাঁর সম্পর্কে নিবন্ধগুলি প্রকাশিত হয়েছিল এবং শত শত ধার্মিক মুসলমান তার দর্শন পাবার জন্য তার পরামর্শ নেবার জন্য ক্ষুদ্র কুটির প্রাঙ্গণ সবসময় মুখরিত করে রাখত। এসব কিছু তাঁর উপর দারুণ ছাপ ফেলেছিল।
তখন থেকে তিনি মুসলিম নাম আবদুল-কারিম ("করুণাময় আল্লাহর বান্দা") বেছে নিয়েছিলেন।

পর্ব-৩
আগের পর্বের জন্যঃ Click This Link
প্রথম পর্বের জন্যঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩২
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×