somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাবনিক- পর্ব ৮

০২ রা জুন, ২০২১ দুপুর ২:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আগের পর্বের জন্যঃ Click This Link
বিত্ত ও প্রভাবশালী লোককে রাশিয়ায় বলে ‘ক্রুতোই’! আমাদের ক্রুতোই রনি ভাই-এর একজন স্যাঙ্গাত নিয়ে পথচলা ভীষণ দুস্কর! আমাদের চ্যালা চামুন্ডার মত সাথে ঘুরতে হবে- তা ছাড়া আগে আসায় গোল বেঁধেছে! ওডেসার অলিগলি আমাদের নাকি চেনা তাই আমাদের সঙ্গ অতীব প্রয়োজন!
বড় ভাইয়ের পয়সায় কয়েকদিন বড় বড় হোটেলে উদরপূর্তি করলাম। আবতোবুশ’কে ঠ্যাঙা দেখিয়ে পুরো শহরময় আমরা ট্যাক্সি ক্যাবে ঘুরে বেড়ালাম! তবে এত রাজকীয় ভাবসাবে থাকার পরেও ববির মুখের ফ্যাঁকাসে ভাব যায় না। তাঁর কচি সম্পর্কের ধেড়ে বান্ধবীটাকে সময় দিতে না পারায় সে নিদারুন মর্মাহত!
রনি ভাই কেমন করে যেন জানতে পেরেছেন রেনেতা ও আমার প্রণয়ের ব্যাপারটা! আমার ধারনা উজ্জ্বল ব্যাটা বলেছে। কিন্তু সে স্বীকার করছে না!
আমাকে মোওকামত একদিন ধরে বললেন, চল তোমার বান্ধবীর সাথে পরিচয় করিয়ে দাও?
আমি লটকে গেছি। কি করা যায় ভাবতে ভাবতে আত্মহননের জন্য বেশ বড়সড় একটা গর্ত খুড়লাম...
ভাবলাম প্রথম পরিচয়টা করিয়ে দেই রেনেতার বাবা-মায়ের সাথে। এর পড়ে পুরো ফ্যামিলি- মুরুব্বিদের সাথে জমবে ভাল। ওদের যে বড় হলরুমখানা আছে সেটা যদি রনি ভাই সাবলেটে নেয় তাহলেতো উত্তম! তাহলে সে বাড়িতে আমার বেশ কদর হবে।
রনি ভায়ের রুশ ভাষায় দখল আমার থেকে বেশ ভাল। নিজের শান শওকত জাহির করে- জিম করা শরিরের বাইসেপ দেখিয়েদ জমিয়ে ফেললেন। আমি তখন ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা- লাফাই আর ম্যা ম্যা করি। দু নম্বর বাচ্চাটা হল সজল- ভায়ের খাস পেয়াদা বলে।
রেনেতা যথাসম্ভব শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতার সাথে তাদের সাথে ভাব বিনিময় ও আপ্যায়ন করল। তাতিয়া আর নাতাশাও তেমনিধারা।
বিদায়ের সময় ওর বাবা মা মুল ফটক তক পৌছে দিল। রনি ভাই এমনি ধানাই পানাই করে আমার বোঁচকা ভর্তি প্রশংসা করলেন। এত প্রশংসার বানে আমিতো মরমে মরে যাই!
রনি ভায়ের রেনেতাদের পুরো পরিবারটাই ভীষণ ভাল লেগেছে নাকি! ওদের হলরুম সদৃশ বড় রুমটা তাঁর মস্কো থেকে সদ্য প্রস্থানরত অভিজাত আদমদের জন্য বেশ হবে।
আমাকে ঘাড় থাবড়ে বাহবা দিলেন, বাঃ ভাল একটা পরিবারে তুমি রিলেশন করেছ। এখানেই বিয়ে সাদি করে তুমি থিতু হয়ে যাও। রেনেতার মত এমন সুন্দরী আর লক্ষ্মী মেয়ে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার!
সেদিনের পরে রেনেতাদের বাসায় আমার খানিকটা ভাব বেড়েছে- কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমি ও বাসায় গেলেই ওর বাবা মা এত্তেলা পাঠায়- উঁকি দিলেই জিগায়, রনির খবর কি? ও কবে আসবে?
কি এক বিষম ঝামেলায় পড়লাম। অগত্যা উপায় না দেখে রনি ভাইকে গিয়ে পেড়ে ধরলাম- বিগ ব্রাদার কিছু একটা করেন?
রনি ভাই মনে হয় আমার পক্ষ থেকে এমন আব্দারের অপেক্ষা করছিলেন। বুদ্ধিমান মানুষ তিনি- খেলা বুঝে চাল দেন।
পরদিন একগাদা উপহার ঘাড়ে করে সজলকে নিয়ে হাজির। সজলকে দেখে আমার গা জ্বালা করছে কিন্তু মেনে নিলাম হাসিমুখে। ববিও আজ উপস্থিত ওর বান্ধবীকে নিয়ে –বড় ভাইয়ের সামনে চক্ষু লজ্জা করলে যে আর চলে না আর।
রেনেতার দুই বোনের জন্য খেলনা আর চকলেট এনেছেন তিনি। রেনেতার বাবার জন্য দামী দুবোতল মদ, ওর মায়ের জন্য একটা স্কার্ফ আর রেনেতার জন্য ফুল আর পারফিউম!
এত গিফট ওরা কস্মিনকালে দেখেনি নিশ্চিত। গরিবের গ্রান্ড রিসেপশন হয়ে গেল-রেনেতা ও তাঁর মা তোড়জোড় করে রান্নার কাজে লেগে গেল!
হরিকে সবাই ভজছে আজ- আমি যেন ব্রাত্য! গল্পে আড্ডায় রনি ভাই জমিয়ে ফেললেন আজ- ববিও কম যায় না। গল্পবাজ আর রসিক মানুষ সে! ভাষায় যতদুর দখল তাঁর –সম্ভবত সবটুকু এলেম ঢেলে দিল আজ সে।
খাবার টেবিলের এক কোনে বসে আমি সামনে যা পাচ্ছি তাই চিবোচ্ছি। রেনেতা বড্ড বেশী হাসি হাসি মুখ করে যেন ওদের দু-ভায়ের ঘাড়ে ঢলে-গলে পড়ছে।
খাবার শেষে বেশ আকর্ষণীয় ভাড়ায় ওদের বড় রুমখানা ভাড়া নিয়ে একগুচ্ছ কুপন রেনেতার মায়ের হাতে গুঁজে দিলেন তিনি।

তবে প্রথম আদম কিন্তু তিনি এ বাসায় এনে তুললেন না। সেই দল গিয়ে উঠল এলিনাদের বাসায়- তাদের দল নেতা সজল। এলিনার সাথে তখনো আমার পরিচয় হয়নি। নাম শুনেছি মাত্র।
আমি রনি ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম; ভাই , বিষয় কি?
ওদের যে এখানে এনে রাখলেন না- তবে এত পয়সা দিয়ে ঘর ভাড়া নিলেন কেন?
তিনি অমায়িক হেসে আমার কাধে হাত রেখে বললেন,
দ্যাখো এটা তোমার ভবিষ্যত শ্বশুরবাড়ি। যেনতেন লোক তো আর এখানে এনে রাখা যায় না।
একদম সহি বাত! আমি পারলে সেদিনই বড় ভাইকে গুরু মেনে দীক্ষা নিয়ে ফেলি।

পরের পর্বের জন্যঃ Click This Link
প্রথম পর্বের জন্যঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:২৮
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×