আগের পর্বের জন্যঃ Click This Link
আমি তখন রেনেতার পুরো পরিবার নিয়ে মজে আছি। দুই বোন সারাক্ষনই সংগ দেয় আমাকে! রেনেতা খানিক পড়াশুনা খানিক ঘরকন্যার কাজে ব্যাস্ত থাকে। ফাঁক পেলেই সে এসে গাল ফোলা হাসি দিয়ে আমাদের সাথে গল্প জুড়ে দেয়।
উঝেন বা আবেদ( লাঞ্চ বা ডিনার) কখনো বাধ্য হয়ে সেখানেই সারি। রাত হলে কখনোবা রেনেতার বিছানেতেই শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। রেনেতা পা টিপে টিপে আলগোছে এসে আমার পাশে শুয়ে পড়ে। গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে হাত বাড়াতেই রেনেতার অতি কোমল শরিরের স্পর্শে তিড়িং করে মাথায় রক্ত জমে যায়।
রুমের দরজাখানে হাট করে খোলা। দুই বোন পাশের খাটে শুয়ে আছে- বাধ্য হয়ে নিরাভরণ শরিরের উষ্ণতা নেয়া হয় না। পোষাকের আবডালে আদর সোহাগ আর ওষ্ঠ- অধরের নিবিড় খেলায় শুধু সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
উজ্জলের নম্বরে রনি ভাইয়ের ফোন। ববি’কে না পেয়ে আমাকে পাকড়াও! গোয়েন্দা মারফৎ সে জেনে নিয়েছে আমাদের হাল হকিকত।
উক্রাইনে আসার সখ তাঁর বহুদিনের।
আমরাতো বুঝি কেন সে আসতে চায়- কৃষ্ণ সাগরের (ব্লাক সি) তীরে বসে একহাতে চিল বিয়ারের গ্লাস আর অন্যহাতে নীল নয়না উক্রাইনান ললনার উষ্ণ সান্নিধ্য পেতে চান।
তিনি এখন ওডেসাতে আসার জন্য মরিয়া। থাকা খাওয়ার কি ব্যবস্থা আছে সেটা জেনে নিচ্ছিলেন আদ্যপান্ত!
আমি মনে মনে ভীষণ শঙ্কা বোধ করি। আমার জন্য ববির জন্য-এই দন্ডে সব ছাড়তে হবে মনে হয়!
ববির কাছে একথা বলতেই সে তিড়িং বিড়িং করে লাফিয়ে উঠল। ওডেসাতে তাঁর জমে গেছে- নতুন এই তরুনীর বন্ধনমুক্ত হওয়া খানিক কষ্টকর হবে।
শেষমেষ কোন দিশা না পেয়ে ঘোষনা দিল সে; আসলে আসবে। এদ্দিন গোপনে গাপনে করছি- এইবার সামনেই করব।
তিনি অবশেষে আসলেন। সাথে এক সাঙ্গেত নিয়ে বিমানে চড়ে। আমাদের ডেরা পছন্দ হবেনা ভেবে- আগে থেকেই ওডেসার পুরনো বাঙ্গালী রাহাত ভাইয়ের বাসায় উঠলেন। আমরা সে কথা জেনে অতীব আনন্দে সারা রাত ধরে বাঙ্কার পর বাঙ্কা( জার ভর্তি) ভিন দা আকাসা পান করে ভয়াবহ চিৎকার চেঁচামেচি করলাম।
রনি ভাই পরদিন দুপুর গড়াতেই আমাদের ডেরায় এসে হাজির। রাহার ভায়ের বাসা ব্লাক সি-র ধারে কাছে। ওখান থেকে আমাদের এখানে আসতে হলে আবতোবুশে( আবতো- অটো, বুশ-বাস) মিনিট পনেরোর জার্নি।
এতটুকু পথ জার্নি করে সুমুদ্রের ধারে যেতে আমাদের মাসখানেক লেগে যায়। কিন্তু রনি ভাই সুদুর মস্কো থেকে সোয়া একদিনেই চলে আসলেন।
সবে ঘুম ভেঙ্গেছে তখন। ঘর ভর্তি তখনো এলোমেলো বাসন-বোতল। উপায় নেই -সেগুলো ঠেলে সরিয়েই তাকে বসতে দিলাম। চারিদিকে নজর বুলিয়ে তিনি বেশ অমায়িক হাসি দিয়ে বললেন, বাঃ ভালইতো চলছে!
তা মৌজ মাস্তি করেই দুই বন্ধু দিন কাটাচ্ছ নাকি?
-উত্তরে আমরা আমতা আমতা করি।‘ ববি আগেই ভেড়া বনে গেছে। আগে যেটুকু লম্ফ-ঝম্ফ করেছে তার ছিটেফোঁটা এখন তাঁর মধ্যে অবশিষ্ঠ নেই। সে বিড়ালের মত মিঁউ মিঁউ করছে।
আমাদের আবাসটা তাঁর বেশ পছন্দ হয়েছে। এত উঁচুতে তাঁর থাকা হয়নি কখনো- তবে লিফট নিয়ে তাঁর অভযোগ বিস্তর!
রণি ভায়ের সাথে আসা সেই স্যাঙাতটার নাম সজল। পরিচয় হল। রনি ভাইয়ের এলাকার ছেলে। ববি আগে থেকেই চেনে তাকে। আমার সাথে পরিচয় প্রথম। রনি ভাইয়ের নেক্সট আদমের চালানের সর্দার হবে নাকি সে। রনি ভাই শেষমেশ কেন আদম ব্যাবসায় ঝুকলেন সেটা আমার বোধগম্য হচ্ছে না।
সজলের সাথে সেই পরিচয়ের পর আর বিশেষ কথাবার্তা গল্প গুজব হয়নি আর।
রনি ভাই গল্পে গল্পে বিবিধ খবরদারী করলেন। বুদ্ধি পরামর্শ দিলেন- অল্প বিস্তর বকাঝকাও করলেন! এমন ভাব নিলেন যে দশ পনেরজন শার্লক হোমস তিনি হাতের মুঠোয় নিয়ে হাটেন। আমাদের গতিবিধি সব তাঁর নখদর্পনে। সবশষে এসে জুড়ে দিলেন; নতুন ব্যাবসার খাতিরে উনি বেশ কিছুদিন এখানে থাকবেন। তাছাড়া ববিকে ব্যাবসাটা হাতে কলমে বোঝাতে হবে যে।
তাঁর কথা শুনে ববি’র মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল! কি মৌজ মাস্তিতেই না ছিল এতদিন বন্ধু আমার- হালে সব বিগড়ে যায় আর কি!
পরের পর্বের জন্যঃ Click This Link
প্রথম পর্বের জন্যঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:২৭