somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাওয়াই- আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


(কথাশিল্পী আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন'কে অনেক পাঠক বা ব্লগার ভাল করে চেনেনই না। কেউ কেউ তাঁর কিছু গল্প, সাহিত্য, কবিতা বা ছোটদের গল্পের সাথে পরিচিত হলেও রম্য গল্পের সাথে পরিচিত নন। তিনি যে, দুর্দান্ত একজন রম্য লেখক সে অনেকে জানেনই না। কেউ কেউ রকমারি বা অন্য কোথাও তাঁর রম্য গল্পসমগ্র খুজতে গিয়ে দেখেন আউট অফ স্টক। তাদের সবার জন্য তাঁর একটা রম্য গল্প তুলে দিলাম। ভাল লাগলে ভবিষ্যতে আরো দেব না-হয়।)
দাওয়াই- আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
মার দাদা ভোর পাঁচটার ট্রেন ধরার জন্য রাত এগারোটার সময় ষ্টেশনে গিয়ে বসে থাকতেন। তাঁর ভয় ছিলো, ঘুমিয়ে পড়ে যদি ট্রেন মিস করে ফেলেন। সেই দাদার নাতি তো! কোন কাজে লেট করার অভ্যেস নেই আমার । রেল ষ্টেশন , এয়ারপোর্ট , অফিসের মিটিং, সিনেমা , পাবলিক ফাংশন ,সব কিছুতে কম সে কম ,পনেরো বিশ মিনিট আগে পৌছে যাই। আগে - ভাগে গিয়ে ভাল সিট পেতে। কোনদিন অসুবিধা হয়নি আমার ।
নান রুটি, শুকনো কাবাব আর কাঁচা পেয়াজের চাটনি খেয়ে ঠিক রাত নয়টার সময় গিয়ে হাজির হলাম রাওয়ালপিণ্ডি স্টেশনে। ট্রেন দশটায় । তেজগাম। করাচীগামী মেল ট্রেন । করাচীতে একটা জরুরী ইনসপেকশন ছিলো,ট্যুরে যাচ্ছি। ট্রেন চড়ে । ষ্টেশনে এক ঘণ্টা আগাম। তেমন কি আর আগে এসেছি!
ছোট্ট দুই বার্থওয়ালা ট্রেনের কামরা । নীচের বার্থটা দখল করলাম আমার কম্বলবালিশ পেতে। ঢাকা থেকে এক বন্ধু কয়েকটা সাময়িক পত্রিকা এনে দিয়েছিলো। এতদিন পড়ার সময় পাইনি। তারই একটা খুলে নাড়াচাড়া করতে লাগলাম হাত পা ছড়িয়ে দিয়ে।
দশটা বাজি বাজি করছে। ট্রেন ছেড়ে দেবে একটু পরে। মনে মনে খুশী হলাম পুরো কামরাটায় আমি একা যাত্রী ভেবে। বেশ আরামসে যাওয়া যাবে লুঙ্গি পরে খালি গায়ে শুয়ে বসে।
হঠাৎ কামরার দরজা খুলে গেলো। সঙ্গে সঙ্গে এক ঝলক কড়া বসরাই আতরের গন্ধে বাতাস ভুরভুর করে উঠলো। নতুন যাত্রীর আবির্ভাব । লম্বায় সোয়া ছয় ফুটের মত,মা শা আল্লাহ,চওড়ায় তার ওয়ান থার্ড,পরিপুষ্ট নাদুস নুদুস চেহারা,জোব্বাজব্বাধারী আগন্তুক প্রবেশ করলেন স্মিতমুখে। মুখভর্তি মেন্দিরঞ্জিত দাড়ির ছড়াছড়ি,তেলপাকানো গোঁফ,মাথায় জরিদার সোয়াতী টুপি ,পায়ে ঢোলাঢালা সালোয়ারের নীচে বুটিদার পেশোয়ারী চপ্পল। আগন্তুকের পেছনে কুলির মাথায় বাক্স -পেঁটরা,পাঁচতলা টিফিন কেরিয়ার।
সালাম আলায়কুম। মুখভরা হাল্কা হাসির রোদ ছড়িয়ে দু’হাত বাড়িয়ে দিলেন আমার দিকে। হাতের তালু যেন মাখনের দলা। কি নরমরে! একটু আড়ষ্ট হয়ে করমর্দন করলাম আমি। গরীবের নাম নবাব মির্জা শেখ হায়বত জঙ্গ। চর্বিত পানের সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ল কামরাময়। আমিও আমার পরিচয় পেশ করলাম। নবাব সাহেবও করাচী যাচ্ছেন।
খোশ মেজাজের সঙ্গে বললেন,বেশ গালগল্প করে যাওয়া যাবে দীর্ঘ পথ। ঢিলেঢালা কোর্তার পকেট থেকে একটা শিশি বের করলেন। আতরের, কারুকার্যখচিত শিশি। আমার গায়ে কয়েক ফোটা ছিটিয়ে দিলেন। সরম পেয়ে গেলাম,অনেক বছর আগে বিয়ে করতে যাওয়ার সময় ছাড়া আমি আর কোনদিন আতর ব্যবহার করিনি। আতরের খুশবুর সাথে আমার তদানীন্তন নববধুর কোমল মুখখানা চোখের সামনে ভেসে উঠলো এতকাল পর।
রূপোর একটা বড়োসড় পানের ডিব্বা বের করলেন নবাব হায়বত জঙ্গ । পানদান ভর্তি সাঁচি পানের তবক মোড়ানো খিলি। নীচে আট দশটা খুপরি। একটাতে মিহি করে কাটা সুপোরি,জর্দা,কিমাম,মৌরী,এলাচি,লবঙ্গ,মেশক, আম্বর ইত্যাদি অন্যগুলোতে।
একটানা পান খাচ্ছিলেন নবাব সাহেব একটার পর একটা। আমি অনুরোধ রক্ষা করতে গিয়ে তানসেন গুলির মত দু'একটা গুলি মুখে পুরলাম। খুশবু ছড়িয়ে জিহ্বায় মিলিয়ে গেলো সেগুলো।
পানের ডিম্বাটার ইতিহাস বললেন নবাব সাহেব। সাতপুরুষ থেকে আছে তাদের পরিবারে। মোগল দরবারে পারিষদ ছিলেন তাঁর কোন পূর্বপুরুষ। বাদশাহ থেকে এনাম পেয়েছিলেন তার স্তুতিতে কাসিদা পাঠ করে। তখন থেকে বংশানুক্রমে রক্ষিত হয়ে আসছে উপঢৌকনটি। বর্তমান গদ্দিনশীন নবাব হিসেবে নবাব সাহেব এখন সেটার হেফাজত করছেন । তার পরে সেটা পাবে তার প্রথম সাহেবজাদা। তার পরবর্তীকালে তাঁর দৌহিত্র।
সাহেবজাদার প্রশ্ন উঠতেই জিজ্ঞেস করলাম,নবাব সাহেব ,কত ছেলে মেয়ে আপনার ? পূর্ণচন্দ্রের মত খুশীতে গোল হয়ে উঠল নবাব সাহেবের মুখমণ্ডল। লাজুক হাসিতে ঘাড় বাঁকিয়ে বললেন,খোদার মেহেরবানিতে ছয় লাড়কী আওর সেরেফ চার লাড়কাক। আপকা?
আমার তিন কন্যা। নায়লা,শায়লা,আর লায়লা।
চমকে উঠলেন নবাব সাহেব। আঙ্গুল দিয়ে দাড়ির অরণ্যে চিরুনী চালালেন। আফসোসের সঙ্গে বললেন,তিন লাড়কী! বেটা নেহী হ্যায়? সাহেবজাদা?
বেটা দিয়ে কি হবে ? আমাদের সমাজে ছেলেও যা মেয়েও তা। বরং ছেলের চেয়ে মেয়েই ভালো। আজকাল কি আর বাপমা ছেলের কামাইয়ের উপর নির্ভর করে ? ছেলেরা তো লেখাপড়া শিখে বাপমাকে ছেড়ে চলে যায় দেশবিদেশে। কয়জন খোঁজখবর করতে পারে পিতামাতার? বরং মেয়েরাই-
জোরাল বক্তৃতা দিয়ে দিলাম,বরং মেয়েরাই আজকাল বুড়ো বাপমার সেবাযত্ন করে। খোঁজখবর করে। ভালো কিছু রান্না হলে বাপের বাড়ি নিয়ে আসে । ছেলের চেয়ে মেয়ে অনেক ভালো আজকের সমাজ ব্যবস্থায়।
অর্ধ বৃত্তাকারে মাথা নাড়লেন নবাব হায়বত জঙ্গ। না- য়ের ভঙ্গিতে। বেটা চান না আপনি ? বলেন কি জনাব? ছেলে না হলে বংশ রক্ষা করবে কে? জমিদারী,নবাবীর মসনদ সামলাবে কে? আপনার পরিবারের টাইটেল কি ? একগাদা প্রশ্ন করলেন নবাব এক সঙ্গে।
চৌধুরী । বিরক্তি চেপে রেখে জবাব দিলাম । ব্যক্তিগত প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছেন উনি । চৌদুরী সাহেব । আপনার মেয়েরা কি আপনার পরিবারের উপাধি ব্যবহার করতে পারবে ?
ওরা তো, খোদা হায়াত দারাজ করলে,ককেউ হবে বেগম খান,কেউ বেগম মজমাদার,কেউ মিসেস সারকার । আর তা ছাড়া,একটা ডবল সাইজ পানের খিলি মুখে পুরে দিয়ে যোগ দিলেন , তা ছাড়া আপনি কি চান আপনার জমি - জিরাত পরের বেটার মালিকানায় চলে যাক?
কোন নালায়েকের বেটা এসে আপনার ভিটিতে আসন গাড়ুক । আলোচনার বিষয়বস্তু আমার মনঃপুত হচ্ছিলনা। রাত বাড়ছে তেজগাম ছুটে চলেছে পাহাড়ের ফাঁক দিয়ে। হুশ হুশ শব্দ হচ্ছে ইঞ্জিনের । শোয়ার আয়োজন করলাম। অসহায়েরর মত আমার মুখের দিকে বার বার চাইলেন নবাব সাহেব। অত বড় বপু টেনে উপরের বাঙ্কে উঠবার উপায় নেই ওঁর। দু - একবার মৃদু চেষ্টাও করলেন। মনে মনে ভাবলাম,যদি জনাব উপরে উঠতেও পারেন,একবার বাঙ্ক ছিড়ে আমার উপর পড়ে গেলে অত বড় একটা মানুষ,আমি তো চেপ্টে রূপচাঁদা মাছ হয়ে যাবো। সুতরাং নবাব সাহেবকে নীচে শুতে দিয়ে আমি কম্বল নিয়ে উপরে উঠে গেলাম। বহুত শুকরীয়া জানালেন উনি।
শুতে শুতে বললেন,ফিকির করবেন না চোরী সাহেব। এরও এলাজ আছে। খুব সহজ এলাজ। বেটা হওয়ার এলাজ। তেজগামের বাঁশীর সঙ্গে দিয়ে নাক ডাকতে লাগলো আমার সহযাত্রীর । একটা বাংলা ম্যাগাজিন উল্টাতে লাগলাম আমি। মেয়েদের ফরমাস মত বৌরীবাজার থেকে কি কি জিনিষ কিনব তার ফিরিস্তি আর বাজেট মেলাতে মেলাতে আমারও চোখের পাতা ভারী হয়ে এলো। ট্রেনের জানালা গলিয়ে ভোরের আলোর ঝলমলানি।
পাঁচ তলা টিফিন কেরিয়ার খুলে বসেছেন নবাব সাহেব। মোগলাই পরাটা,মোরগ মুসল্লম পেশোয়ারী কাবাব,তিতিরের ভুনা আণ্ডা,আরো কতো সব নবাবী খাবাৎ। কাবাবের খুশবুতে আমার জিভে জল এলো। নবাব সাহেবের অনুরোধে ওর সঙ্গদান করলাম সঙ্কোচের সাথে ।খেতে খেতে নবাব সাহেব সেই একই কথার পুনরাবৃত্তি করলেন, তিন লাড়কী! ছেলে হতেই হবে আপনার । এলাজ খুব সোজা। আমি নিজে ফল পেয়েছি। সাক্ষাৎ ধন্বন্তরী! চুপ করে থাকলাম আমি বাইরের গমক্ষেতের আলে ভেড়ার পালের দিকে চেয়ে থেকে । অপ্রীতিকর প্রসঙ্গ । ক্ষেপে যাচ্ছিলাম মনে মনে । একটা বড় ষ্টেশনে ট্রেন থামল দশ মিনিট। নবাব সাহেব নেমে গিয়ে উর্দু আখবার কিনলেন। আমি এক ঝুড়ি আপেল,আঙ্গুর আর আখরোট কিনে আনলাম।
এগারোটার দিকে নবাব সাহেবের ব্রেকফাস্টের প্রতিদান দেওয়া যাবে। চায়ের সাথে । খেতে ভালই লাগবে ফলগুলো। উর্দু পত্রিকাটা পড়তে পড়তে নবাব সাহেবের মুখখানা যাদুকরের মুখের মত হঠাৎ গম্ভীর হয়ে উঠলো। বললেন , আমারও পর পর ছয় লাড়কী জন্মালো। কত হেকিম কবিরাজ - ডাক্তার দেখালাম। কতো এলাজ,কতো দাওয়াৎ। কাউয়ার গোস্তের হালুয়া পর্যন্ত খাওয়ালাম বেগম সাহেবাকে না বলে। হেকিম আজমল খাঁর কুদরতী টনিক এনে খেলাম নিজেও। কিন্তু কিছু ফল হলো না । একটার পর একটা লাড়কী পয়দা হতে লাগলো। বহুত খুবসুরত লাড়কী,বেহেসূতের হুর - পরীর মত সুন্দরী। কিন্তু তাতে কি মন ভরে? বাপ কা বেটা সিপাহী কা ঘোড়া।
-কি বলেন চোদ্রী সাহেব?
চুপ করে থাকলাম আমি। নায়লা শায়লা লায়লার ফরমাসের লিষ্টটা তখনো আমার মনে খোঁচা দিচ্ছে । ছোটটার বড়সড় ওয়াকি টকি ডল পেলেই হয়। যা জেদী মেয়ে রে বাবা! আমার নীরবতায় উৎসাহে ভাটা পড়লো না নবাব সাহেবের।
সুগন্ধি পানের এক ঢোক পিক গিলে যোগ দিলেন , বহুত পীর - দরবেশের কাছে গেছি বিবিকে নিয়ে । বহুত মাজারে সিন্নি দিয়েছি। পানি - পড়া , তাবিজ , ঝাঁড় - ফুঁক কিছু বাকী রাখিনি। তবুও পরওয়ারদিগার ফিরে চাইলেন না। অবশেষে তকদীর ফিরলো আমার। অতি সাধারণ এলাজ। আল হামদুলিল্লাহ,ছয় লাড়কীর পর চার চারটা সাহেবজাদা পয়দা হয়েছে আমার।
এতক্ষণে ক্ষীণ কৌতূহল চাড়া দিয়ে উঠছে আমার মনে। কি হতে পারে নবাব সাহেবের টোটকা? কি এত সোজা এলাজ ? পাছে কোন অশ্লীল দাওয়াই বাতলে দেন , সেজন্য চুপ করে থাকলাম উৎসাহ চেপে রেখে। দীর্ঘ পথ। দুপুরের লাঞ্চেও দু’জনে পাঁচতলা টিফিন কেরিয়ারের সামগ্রী সব খেয়ে শেষ করতে পারলাম না। খেয়ে - দেয়ে ভুড়ি মেলে শুয়ে পড়েছেন নবাব হায়বত জঙ্গ। আজরাইলের সিঙ্গার মত নাক ডাকাচ্ছেন তালে তালে। আর আমি বসে বসে ভাবছি,কি সে দাওয়াই যা খেলে স্ত্রী পুত্রসন্তান গর্ভে ধারণ করবেই! কৌতূহল বাড়ছে আমার। অপেক্ষা করছি কখন কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙ্গবে? রাত্রের খাবার খেয়ে কাশ্মীরী মনাক্কার হালুয়া খেলেন একগাদা। অসম্ভব মিষ্টি। খেলে নাকি তাকত বাড়ে। যৌবন অক্ষয় থাকে আশি বছর বয়সতক।
অন্ধকার সিন্ধুর মরুভূমি। আমি চুপচাপ বসে আছি বাইরের দিকে চেয়ে। ভাবছি ,নবাব তাঁর কুদরতি দাওয়াইটা কখন বাতলাবেন। কথা উঠালেন উনি নিজেই,অনেক সিন্নি মানত জিয়ারত করেও যখন কোন ফায়দা হলো না, তখন খোদা কি কসম,কসামান্য একটা টোটকায় আমার মকসুদ হাসিল হয়ে গেলো। অতি সস্তা এলাজ,মাত্র পাঁচ টাকা ফি,সঙ্গে সোয়া সের বাসমতি চাল। উৎসাহে মেরুদণ্ড খাড়া করে বসলাম। চেয়ে থাকলাম, নবাব সাহেবের কাঠালি চাপা রং মুখের দিকে । বোঁচকা থেকে এই বুঝি তেলেসমতি দাওয়াইয়ের পুরিয়া বের করবেন আমার জন্য।
বলে গেলেন উনি,এলাজটা বাতলে দিয়েছে মীরপুর খাসের এক গণক ঠাকুর। মাথা মুণ্ডানো, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ,সাদা ধুতিপরা, খালি বদন মন্মোহন ঠাকুর। বড় মামুলি এলা। বৃন্দাবনের মন্দিরে স্বপ্নে পাওয়া ঔষধ। মাঝপথে থেমে গেলেন নবাব হায়বত জঙ্গ। শোয়ার আয়োজন করতে লাগলেন রাতের পোষাক সালোয়ার কামিজ পরে। তর সইছিল না আমার ।
তিন মেয়ের পর যদি সত্যি সত্যি একটা ছেলে হয়, মন্দ কি তাতে? আমার বড় মামুর এগারোটা,মেজো চাচার তেরোটা। ঝুঁকে পড়ে বললাম, -বলুন না দাওয়াইটা কি ?
অধৈর্যের সুর আমার কণ্ঠে। হাঁ রবাতলায়েঙ্গে জরুর। বলতে বলতে বিশাল বপুটার উপর কম্বল টেনে দিলেন। আর ট্রেনের দোলা খেতে খেতে কয়েক সেকেণ্ডের মধ্যেই অর্ফিউসের বাঁশি বাজাতে লাগলেন নবাব সাহেব।
অস্বস্তিতে একটুও ঘুম এলো না আমার। যেন খেজুর কাঁটা বিঁধছে পিঠে । আচ্ছা ভদ্রলোক তো! সিক্রেটটা না বলেই ঘুমিয়ে পড়লেন।
করাচী স্টেশন। সূর্য উঠি উঠি করছে। শাহী লেবাস পরে সারা গায়ে আতর ছড়িয়ে নেমে পড়লেন নবাব হায়বত জঙ্গ। আমিও নেমে পড়লাম পেছন পেছন । ষ্টেশনে রিসিভ করতে এসেছে ওঁর চার সাহেবজাদা । বাপের মতই লম্বা শরীর । সুন্দর খুবসুরত চেহারা । ফুটন্ত বসরাই গােলাপ যেন এক একটা । সালাম করো বেটা লোগ ,বাঙ্গালী চাচ্চা কো সালাম করো। বাঙ্গালী সাহেব। মেরা জার্নি কা দোস্ত। দরাজ কণ্ঠ নবাব সাহেবের। সেভ ইম্পালা গাড়ি এসেছে ওঁর জন্যে।
দরজা খুলে ধরলো সোফার। আমাকে নিতেও গাড়ি এসেছে। স্থানীয় অফিসের লোক এসেছে। রাগে জ্বলছি আমি মনে মনে। লোকটা ওষুধটা না বলেই কেটে পড়ছে।
গাড়িতে উঠবার পূর্বমূহুর্তে নবাব সাহেব আমাকে জড়িয়ে ধরে কানে কানে বললেন,দাওয়াই বহূত সোজা,একদম আসান। এ চার বেটা আমার দোসরা বিবির থেকে। দোসরা সাদী কা মেওয়া। ২১. ৬.১৯ ৮১

# প্রিয় লেখক মুসলেহউদ্দিন এই লেখায় তাঁর তিন কন্যা নায়লা,শায়লা,আর লায়লা'র কথা বলেছেন। জনাব আদিল মাহমুদ নামে এক লেখকের কাছ থেকে জানতে পারলাম; ওনার এই ৩ মেয়ের মধ্যে,শুধু বড় মেয়ে যিনি বায়োকেমিষ্ট দেশে থাকেন, বাকি দুইজন আর্কিটেক্ট ও প্রকৌশলী আমেরিকায় থাকেন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৩
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×