somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অলিভিয়া কিংবা সুতোকাটা ঘুড়ির গল্প

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সে চলে গেছে। অবশ্য একদিন সে চলে যাবে— এই সত্য জেনেই আমি তার কাছে গিয়েছিলাম। সঁপে দিয়েছিলাম নিজেকে। প্রথম প্রথম সে আমাকে গ্রহণ করতে চাইতো না, দূর-দূর করে তাড়িয়ে দিতো। আমি ফিরে যেতাম না। দরজার ওপাশে নৈঃশব্দ্যের বিষাদলিপি নিয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকতাম। একসময় দরজা খুলে যায়। সে চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সেই দরজা বন্ধ হয়নি একমুহুর্তের জন্যও।

এরপর শুরু হলো কালের নতুন প্রবাহ। আমি দেখলাম প্রেমের স্বরূপ। যদিও একটা পিছুটান তাকে তাড়িয়ে বেড়াতো, তবুও প্রেমের আপাত জৌলুশে সে আর পেছনে তাকাতে চাইতো না।

আমার মনে আছে সেই সব ধুলো-উৎসবের সন্ধ্যায় সে আমার কানে কানে বলতো — 'তোমাকে পেয়েছি ,আমার তো আর কোনো আফসোস নাই। ' বুঝতাম তার নিঃশ্বাসের উত্তাপে আমার অন্তরাত্মা পুড়ে খাঁক হয়ে যাচ্ছে। কত রিকশা আর মিছিলের পাশ কাটিয়ে আমরা হেঁটেছি, হাত ধরে দাঁড়িয়ে কথা বলেছি! কথা বলেছি শব্দে, বাক্যে, কথা বলেছি নীরবতায়।

তারপর একদিন সেই সময়টা চলেই এলো। হ্যাঁ, যে সময়টাকে আমি ভয় পেতাম, আবার অবচেতন ভাবে যে সময়ের অপেক্ষায় থাকতাম। এই অপেক্ষা কষ্টের, যাতনার। ডাক্তাররা যে সময়টুকু বেঁধে দিয়েছিলেন তা ইতোমধ্যেই পার হয়ে গিয়েছিল। এরই মধ্যে অলিভিয়া ( শুনেছি কোন এক নায়িকার নামে শখ করে এই নাম রেখেছিলেন তার বাবা) অনেক শুকিয়ে গেছে,চোখ দুটো ভেতরে ঢুকে গেছে। আমি তাকে দেখতে গেলেই কোনোরকমে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রাখতো। পৃথিবীতে কত অলৌকিক ঘটনাই না ঘটে! আমি একটা মিরাকলের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিন্তু হায় ,তেমন কিছুই ঘটেনি। হাজারো বাক্য,শহুরে রিকশার শব্দ, মায়া আর সাইলেন্সকে পেছনে ফেলে অলিভিয়া চলে যায়...
সেই থেকে শুরু হলো আমার চেতন-দহনের কাল ....

আজকের বিকেলের এই আলোটা একেবারে নরম একটা আমেজ নিয়ে আসছে মনে। নিজেকে হালকা লাগে। যেন পালকের মতো— ফুঁ দিলেই উড়ে যাবে শরীর। এমন পালক-সম শরীর নিয়েই বেরিয়ে পড়লাম— উদ্দেশ্যহীন। অদূরেই একটা মাঠ। সেখানে একদল কিশোর ঘুড়ি ওড়াচ্ছে। ঘুড়ি দিয়ে কাটাকুটি খেলছে। আমি ঘুড়িগুলোকে লক্ষ করি। হঠাৎ একটা ঘুড়ি কেটে যায়। সটকে পড়ে নিজ জায়গা থেকে। তারপর নিজেকে সঁপে দেয় হাওয়ায়। যেন-বা নিজের ওপর আর কোনো দায়ভার নেই— হাওয়া তাকে যেখানে নিয়ে যায় যাক। সুতোকাটা ঘুড়ির কোনো পিছুটান নেই। নিজেকে সুতোকাটা ঘুড়িটার মত মনে হয়। সময় কি থেমে গেছে? নাকি আমি নিজেই...
অলিভিয়া, তুমি কি দেখতে পাচ্ছো সূর্যটা কেমন স্থির? যেন ঘাসের ওপর ঘাপটি মেরে একচিলতে রোদ হয়ে এখনো জমাট বেঁধে আছে....


©শিবলী শাহেদ
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৃদ্ধাশ্রম।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৬



আগে ভিডিওটি দেখে নিন।

মনে করেন, এক দেশে এক মহিলা ছিলো। একটি সন্তান জন্ম দেবার পর তার স্বামী মারা যায়। পরে সেই মহিলা পরের বাসায় কাজ করে সন্তান কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

টের পেলে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৭

টের পেলে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

টের পেলে গুটিয়ে যায় লজ্জাবতী/ পরিপূর্ণ যৌবনে যুবতীর নিখুঁত অনুভূতি। আমার চাওয়া, ইচ্ছে, স্বপ্ন! আমার পছন্দ বুঝদার, সুন্দর হৃদয়ের রূপ! সৌন্দর্য সুন্দর যা চিরন্তন সত্য। কিন্তু সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×