ছবিটার ক্যাপ্সন "Sohan rocks 3"
না হয় ধরলাম এটা ফান করেই তোলা কিন্তু দশ বছর পরে কি হবে? তখন ফান করতে গিয়ে আর কি কি করতে হবে?
কিছুদিন যাবত পত্রপত্রিকায়, টেলিভিশনে, অনলাইন মিডিয়াতে "চলন্ত বাসে গার্মেন্টস কর্মীকে" "সিএনজি তে মহিলা যাত্রী" "ছাত্রিকে জোর পুর্বক" গনধর্ষন বা ধর্ষন হেডলাইন করে বিকৃত যৌনরুচির খবর ক্রমবর্ধমান ভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। এই নিউজ গুল হয়ত জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার চেয়ে টিভি চ্যানেল এর টি আর পি , ফেবু তে শেয়ার , অনলাইন পত্রিকা গুলোর হিট বাড়াচ্ছে কিন্তু একদিক থেকে ভাবলে বিষয় টা পজিটিভ এর চেয়ে নেগেটিভ হচ্ছে বেশি কারন বিষয় টার গুরুত্ত টা কমে যাচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ৫-১০ বছর পরে এটি একটি সামাজিক সহনশীল বিষয় এ রুপান্তরিত হতে পারে তখন আবার জাপানের মত নিয়ম করে দিতে হবে কোন পুরুষ কোন নারী কে কু বা সু প্রস্তাব দিলে মেয়ে না করতে পারবেনা।
আমি বলছিনা এ ধরনের ঘটনা ঘটলে বিষয় টি মিডিয়া তে আসবে না। কিন্তু মিডিয়া আমাদের সমাজের রাস্তায় ময়লা টা ফেলে যায় কিন্তু এটা পরিস্কার করার কোন দায়িত্ত নেয় না।আমরা জনগন সেই ময়লায় হেটে হেটে সম্পুর্ন রাস্তাটাই এক সময় ময়লা করে ফেলি। শুধুমাত্র শাস্তি দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। এ জন্য দরকার পুরোপুরি সাংসকৃতিক জাগরন এবং প্রকৃত বাংলাদেশী হিসেবে নিযেকে পুনরায় আবিস্কার করা।
শতাব্দির বাঙ্গালীর ইতিহাস খুব একটা ভাল না বাঙ্গালী নারীরা ব্রিটিশ দের মনরঞ্জনে ব্যবহত হয়েছে এর পর পাকিস্তানী রা হিন্দুর মাল মনে করে তো অস্রের মেশিন আর চাম্রার মেশিন দুটো খুচিয়ে পাপ মোচন করে গেছে। যুদ্ধের পরে তাদের কে বীরাঙ্গনা উপাধি দেউয়া হয়েছে। কিন্তু সাধীন দেশের সাধীন নাগরিক কোন নারী রাস্তায় বের হলে যদি শুধুমাত্র ধর্ষন না গনধর্ষনের সীকার হয় এবং শেষে পস্রাব পানে বাধ্য করা হয় তাহলে বলতে হবে দেশের মানুষ এখন ও মানসিক ভাবে পরাধীন। রাজনৈতিক ভাবে অনেকেই বিষয় টা বর্ননা করেন কিন্তু এটা সম্পুর্নই মানসিক ভাবে বিকারগ্রস্থ কতিপয় ব্যক্তির বিকৃত যৌন পিপাসার ফলাফল।
আগে মিডিয়া কম ছিল ও তথ্যের সহজলভ্যতা কম ছিল মোট কথা সোস্যাল ইনফ্লুয়েন্স কম ছিল। বুদ্ধিমান ও শিক্ষিত ব্যক্তিরাই সামাজিক মুল্যবোধ ধারক , বাহক ও প্রচারক ছিলেন । যেমন গ্রামের শিক্ষক , শহরের কলেজের প্রফেসর ও বিভিন্ন সৎ পেশায় নিজ মেধায় সাফল্য মন্ডিত গন্য মান্য লোকজন।
গ্লোবালাইজেশন এর যুগে প্রবেশ করার পর থেকেই আমরা নিজেদের সংস্কৃতি ভুলে গিয়ে গ্রহন করতে থাকি পশ্চিমা ও ভারতীয় সংকৃতি । যার খারাপ ফলাফল গুলো হচ্ছে
১। পরিবারের মজবুত ভিত্তি যেখানে সন্তানের ভবিষ্যত বিনির্মানে সাহায্য করত সেই পরিবার ভেঙ্গে আত্তনির্ভর হওয়ার নামে আমরা হয়ে উঠেছি সার্থপর , আত্নকেন্দ্রিক , লোভী যার জন্য আমরা নিজেরা না যতটা দায়ী তার চেয়ে আমাদের সমাজে টিকে থাকা এবং ক্রমবর্ধমান ভাবে বড় বা সাফল্য মন্ডিত হবার প্রবনতাই দায়ী। কারন এখানে সমাজের উচু শ্রেনীর নাগরিক হবার জন্য শুধুমাত্র দরকার অর্থ বা টাকা এবং যেখানে শিক্ষা , মেধা বা যৌগ্যতা অর্থের বিনিময়ে পাওয়া যায়।
২। মোবাইল এবং ইন্টারনেট সহজলভ্য হবার পর থেকে একজন বাল্য বয়সের বালক বা বালিকার কাছে সহজলভ্য হয় প্রেম করা, ডেট করা এবং অবাধ যৌনতার হাতছানি। বর্তমান সময়ে ২০ বছর বয়সী মর্ডান ছেলেমেয়ের কাছে সাভাবিক যৌনতা খুব একটা আকর্ষন করার কথা না , তবে এর ব্যতিক্রম থাকতেই পারে। এছাড়া বাংলা চটি এর বিশাল আকারের পাঠক বর্তমান বাংলাদেশে রয়েছে যার মূল বিষয় ই হচ্ছে অসম সম্পর্ক এর অবাধ যৌন মিলন এবং জোর পুর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপন। আর প্রভা , চৈতি, আর টি ভি এর নিউজ প্রেজেন্টার কে তো আমরা আমাদের সংসকৃতির অংশই বানিয়ে ফেলছি। আর এছাড়াও তো কোটি কোটি দেশি বিদেশি ওয়েবসাইট আমাদের সেবায় নিয়োজিত আছে।
৩। আধুনিকতার সাথে সাথে এসেছে নারীর পোশাক আশাক এ আমুল পরিবর্তন। কেউ সেলোয়ার , কেউ জিন্স - টি শার্ট , কেউ শারী পড়ছেন। তবে লক্ষ্যনীয় ভাবে দৃষ্টমান নারীরা চাচ্ছেন নিজেকে আরও আকর্ষনীয় করে তুলতে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে অফিসের কলিগ বা বস আর পাড়ার ইন্টারফেল বখাটে যুবক টার দৃষ্টি ভঙ্গি এক না।
৪। ২০০৬ সালের পর থেকে মিডিয়ার কল্যানে যুবসমাজ ভালভাবে পরিচিত হয় ইয়াবা এর সাথে। বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলাদশের প্রত্যেক জেলা শহরের প্রত্যেক টি এলাকায় যুবসমাজের ৩০% ইয়াবা সেবন কারি আছে বলে অনুমান করা যায়। ইয়াবার সবচেয়ে খারাপ দিক হচছে মেজাজ খিটখিটে করে দেয় যার প্রভাব পরিবার ও সমাজে পরে। এছাড়া অন্যান্য মাদক দ্রব্য তো আছেই।
এছাড়াও হাজার হাজার কারনে আমরা দূরে সরে যাচ্ছি সাভাবিক পারিবারিক সম্পর্ক থেকে , হারিয়ে ফেলছি কাউকে ভালবাসার ক্ষমতা , হারিয়ে ফেলছি আমাদের দক্ষ জনশক্তি।
এতগুলো কথা বলার কারন বর্তমান মিডিয়া বলিষ্ঠ ভুমিকা পালন করতে পারে সকল প্রকার মানসিক বিকৃতি গুলো সারিয়ে তুলতে , পারে মিডিয়া কন্সপাইরেছি বাদ দিয়ে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম কে একটি সুস্থ ও সুন্দর বাংলাদেশ উপহার দিতে।
মোবাইল আসার সাথে সাথেই যদি এর ভবিষ্যত নিয়ে একটু চিন্তা করা হত কিনবা এখনো ইন্টারনেট ভাল দিক গুলো ভালভাবে উপস্থাপন করা হয় এবং ড্রাগ কন্ট্রোল করা যায় তবে কিছুটা হলেও আমরা সামাজিক অবক্ষয় থেকে বাচব।এই অবস্থা চলতে থাকলে কোন সরকারই এসে দেশের উন্নতি করতে পারবেনা কারন জনগনের অবস্থা দিয়ে দেশের উন্নতি পরিমাপ করা হয়।
(সুচিন্তিত মতামত গ্রহন যোগ্য)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




