somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাদা-কালো ভোর-রাত

৩১ শে জুলাই, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাক্স আমার ভীষণ প্রিয়। বাক্সভরা স্বপ্ন আমার। বাক্স এখন মরচে ধরা। এপাশে ওপাশে দুর্গন্ধ ঝুলে আছে। স্টিলের গ্লাসের তলায় নিশ্চয় আরেকটু দুধ জমে আছে। প্রিন্টারের গায়ে অনেক ময়লা। লাল জামদানীর পাড়ে সবুজ পাতার সবুজ ছাতা নিয়ে মান্দারটা সেঁটে আছে দেয়ালে। ছাতার বোধহয় ক্লান্তি অনেক, হেলান দিয়ে আছে বিছানার উপর। বেডকাভারের দুর্গন্ধে নাঁক সিঁটকে তার পাশেই বসে আছে কাঁধে ঝোলানোর ব্যাগটা। জানলা থেকে পর্দ সরে নি এখনও। বাইরেরপাশে ঝিঁঝিঁ পোঁকার ডাক। কিশোর ঝিঁঝিঁ। কলের তলায় বালতি পড়ল শব্দ করে। বৃষ্টিপানি ধরে রাখবে। ক দিন আগেই ঝড় গেল চালের নীচে। বিবর্তনের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা হলো 'তারা'য়। উদারায় অল্প কিছু খুচরো শব্দ, আহ! থামো না তোমরা। ঝড়ের শব্দ বেড়েই চলছিল। পিচ্চিগুলোর চোখে অনেক স্বপ্ন থাকার কথা ছিল। মাইন্ড য়ুওর ওওন বিযনেস্...আমি কেবল সাংবাদিক হলাম...

বৃষ্টি এখন চাল ভেজাবে। খয়েরি রঙের ঘুমিয়ে পড়া চাল জেগে উঠবে মুখে কালো কালো বসন্তের দাগ নিয়ে। তারপর পিচ্চিগুলোর পেন্ট উঠে যাবে হাঁটুর উপরে। দোকানগুলোয় ভীড় বাড়বে। ফ্লেক্সিলোডের সংসার ভেঙে যাবে, রামদা টানা পেশিগুলো ছুটি পাবে কয়েক পশলা।

তারপর মধ্যস্থতা করে কেউ ঝগড়া না থামালে পুকুর পাড়ে স্রোতের বেগটা বেড়ে যাবে। অর্জুনের শুটকী-শিদল রেইনকোট পড়বে। কাঁচামরিচগুলো কাকভেজা হবে। খামাখা-বালিগুলো চুয়ে চুয়ে পড়বে, টিটকারি মারতে থাকবে শ্রমিকগুলোর ঘামকে। পুকুর জলে মাছগুলো কী ভাববে তখন? চুপটি মেরে বসে থাকবে কি স্বপ্ন ভুলে?

গলাকাটা সুঠাম দেহের গায়ে সবুজ শার্ট। বুক খোলা। ওর মুণ্ডু থেকে বাতাস বেরোয় তীব্রবেগে। বাতাসগুলো আঁকড়ে ধরে গাছের লতা। সারা দিনমান আঁকড়ে থাকে। বৃষ্টিশেষে জল হয়ে যায়। ফাঁকফোকর দিয়ে কোথায় জানি হারায়। আমি আর পিছু নিতে পারি না।

কীটস এর ছাদের উপর চতুর্দশীর চাঁদ। নাকি ভরদুপুর! বুঝতে পারি না! গ্রেস্কেল-এ দিন রাত সমান হয়ে যায়! কে জানি বাঁশী বাজাচ্ছে দু হাত দিয়ে। নিশ্চয় ও বাড়ির দারোয়ান হবে। মুদ্রার ও পিঠে জংলী একটা। ওখানে রাত নিশ্চিত। ওটাও গ্রেস্কেল। কিন্তু রাত জানি নিশ্চিতভাবে।

বাক্সে আমার দমবন্ধ লাগে না এখন আর। আমার বোধহয় দম লাগে না। স্যাঁতস্যাঁতে এই গন্ধগুলোই আমায় বাতাস জোগায়, অক্সিজেন দেয়। অন্য কেউ সহ্য করতে পারে না। পালাতে চায়। আমি ওদের শিকল পড়াই। দু হাত বেঁধে কোনায় ফেলে রাখি। ওরা হাঁসফাস করতে থাকে। আমি ওদের চোখের সামনে কবিতা লিখি। তারপর দুমড়ে মুচড়ে ছুঁড়ে ফেলি ওদের মুখের ভেতর। ওরা অপেক্ষায় থাকে। গিলে ফেলে শুকনো কাগজ। আমার তখন করুণা হয়। কয়েকটা কাগজ গ্লাসের পানিতে চুবাই। ভেজা ভেজা নরম কবিতা ছুড়ে মারি ওদের মুখে। হাতবাঁধাগুলো বেজায় খুশি। পেট পুরে খায় বাক্সকবিতা। তখন মাকড়সাগুলোও নেমে আসে মাঠে। চারপাশে বাঁশ গেড়ে-বেঁধে আগুন জ্বালায়। সারারাত ধরে চলতে থাকে উন্মত্ত নৃত্য। ক্যাম্পফায়ার। ওরা আগুনে পোড়ায় আমার বাঁশির সুর। আমরা সবাই মিলে বাঁশিকাবাব খাই। মশলা ছাড়াই।

তারপর ভোর হলে মাকড়সা গুলো মেঘ হয়ে যায়। আমার জানলার উপর ভারী কাপড়ের পর্দা হয়ে ঝুলে থাকে দুপুর অব্দি। আমি ওদের গন্ধ শুঁকি। ওদের গায়ে কান্না মুছি। ওরা মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। চুলে বিলি কেটে দেয়। মুণ্ডুছাড়া সবুজ শার্টটা খুন হয়ে যায়। নির্বাক চোখে তাকিয়ে থাকে। গ্রেস্কেলে ভোর রাত হয়ে আসে, জংলীর রাতটা ভোর।

ছাতাটা আমার আড়মোড়া ভাঙে...

৩১০৭০৯১২৪৪
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১০ রাত ২:১৩
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×