somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মায়্শা

২৭ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেয়ে মায়্শার মৃত্যুতে মা হালিমা কেমন যেন রক্ত মাংশে গোড়া, শ্বাস প্রশ্বাস নেয়া নির্বাক মূর্তিতে পরিনত হয়েছে। যদিও মেয়ের মৃত্যুতে এক ফোটা অশ্রুও ঝরেনি তার, শুনেছি যাদের চোখের জ্বল শুকিয়ে যায় তারা কাদতে পারে না, বোধ হয় হালিমার মনের ভেতরের কষ্টের জ্বলের সাগর শুকিয়ে বিষন্নতা হাহাকার বেষ্টিত মরুভূমিতে পরিনত হয়েছে। মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে হাসি মুখে সেই একটি কথা বলার পর থেকে নির্বাক হালিমার মূর্তি এখন আর কারো সঙ্গে তেমন কোন কথা বার্তা বলে না, খাবারের প্রতি নেই কোনো আগ্রহ, নিজের প্রতি নেই কোন যত্নশীলতা। একসময় হালিমা প্রচন্ড রকম যত্নশীল ছিল নিজের প্রতি, যখন সে ছিল ইয়াসীন মল্লার আদরের কনিষ্ঠ স্ত্রী। তখন হালিমার উপচে পড়া যৌবন, মাত্র আঠারো বছর প্রায়। এমন বয়সে যৌনসহবাসের প্রতি আগ্রহ এবং ক্ষমতা প্রত্যেকেরই একটু বেশি থাকে। হালিমার সঙ্গে তার স্বামীর বয়সের পার্থক্যটা দু চার বছরের মধ্যে হলে ভালো হত, যদিও সামাজের নোংরা বাস্তবতার সামনে হার মেনে কপালের লিখন হিসেবে বাধ্য হয়ে মেনে নিতে হয়েছিল একুশ বছরের বড় স্বামীকে। অর্থাৎ আঠেরো বছরের হালিমার স্বামী ইয়াসীন মল্লার তখন উনচল্লিশ বছর।

ইয়াসীন মোল্লা হলো খেলাফতি মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশের খলিফা মাওলানা খোদাজোমের বিশেষ জল্লাদ। মালাউন অথবা বিধর্মী, বুধিজিবি এবং নাস্তিকদের জবাই করাই হলো তার মূল দায়িত্ব। সারা দিনে প্রায় গোটা বিশেক জলজ্যান্ত মানুষ হত্যা করবার পর তাদের যে রক্ত গায়ে লেগে থাকতো, এতে এক প্রকার জঘন্যরকম অমানুষিক দুর্ঘন্ধ জড়িয়ে থাকতো ইয়াসীন মোল্লার গায়ে।

দুধের স্বাধ ঘোলে মেটাতে হালিমা তার স্বামীর গায়ের অমানুষিক দুর্ঘন্ধ এবং বয়েসের তফাতকে মেনে নিয়েই প্রতি রাতে স্বামীর বিছানায় যৌনসহবাসে লিপ্ত হত। মানুষের যৌন চাহিদা এতটাই তীব্র যে মরুর বুকে কাউকে না পেয়ে আরব বেদুইন মনিব তার গাধা অথবা ভেড়ার মত জানোয়ারের সঙ্গে দাড়িয়ে থাকা উত্তপ্ত যৌবনকে শীতল করতো, সেখানে তো ইয়াসীন মোল্লাতো একজন নোংরা মানুষ মাত্র।

বিয়ের প্রথম কয়েক বছর ইয়াসীন মোল্লা হালিমাকে বেশ গুরুত্ব দিত। প্রতি রাতে হালিমাকে আদর করতে তার ঘরে আসতো, নতুন জামা কাপড় এবং গয়নাগতিও উপহার দিত হালিমাকে। স্বামীর এমন আদর যত্ন এবং গুরুত্ব একজন অহংকারী নারীতে পরিনত করেছিল হালিমাকে, এবং হিংসুটে করে তুলেছিল তার অন্য পাঁচজন সতিনদেরকে। হ্যা হালিমা ইয়াসীন মোল্লার ষষ্ঠ স্ত্রী। কনিষ্ঠ হবার কারণেই স্বামীর আদর্টাও ছিল অনেক বেশি। যদিও এই আদর রাতে বিছানায় মাঝে মাঝে চরমে উঠে যেত। হালিমার দুবছর সংসারে স্বামীর এই চরম আদরই কারণ হয়ে দাড়িয়ে ছিল হালিমার গর্ভে থাকা দুটি শিশুর মৃত্যুর। প্রথমবারে গর্ভনাশ হয় সাত মাসে আর দ্বিতীয় বার গর্ভবতি হবার পাঁচ মাসের দিকে আবার গর্ভনাশ হয়। ডাক্তারের স্বরনাপন্ন হলে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তারা জানান গর্ভনাশের কারণ পেটের উপর প্রচন্ড রকম চাপ অথবা ধাক্কা। ডাক্তারের জিজ্ঞাসা বাদে হালিমা আসল ঘটনা বলতে যাচ্ছিল ইয়াসীন মোল্লা তাকে থামিয়ে বলেছিল সিড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পা পিছলে উপুর হয়ে পড়ে গিয়ে পেটে চাপ খায় হালিমা। আসলে রাতে বিছানায় গর্ভবতী হালিমার সঙ্গে সহবাসের সময় ইয়াসীন মোল্লা তার শরীরের সমস্ত ভার হালিমার গায়ে এবং পেটের উপর ছড়িয়ে দিয়ে তার যোনিনালীতে প্রচন্ড জোরে চাপ প্রয়োগের ফলেই দুটি বারের গর্ভনাশ ঘটে। হালিমা যখন তৃতীয় বার গর্ভবতী হয়, অর্থাৎ মায়্শা যখন গর্ভে, তখন সে সরাসরি ইয়াসীন মোল্লাকে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে বারণ করে দিয়ে ছিল। ইয়াসীন মোল্লা হালিমার বারণ গ্রহণ করেছিলেন ঠিকই কিন্তু হাসি মুখে নয়, লাগাতার সপ্তাহ খানেক স্বামীর বেত্রাঘাত সহ আরো অনেক অত্যাচার সয্য করতে হয়েছিল হালিমাকে। এত কিছুর পরেও ইয়াসীন মোল্লা যখন দেখল যে স্ত্রী হালিমা তার সিধান্তে অতল, তখন হালিমার ঘরে আগমন ঘটলো খাদিজা নামক এক নতুন অতিথির, তার ষষ্ঠ সতিনের। এখন হালিমা আর স্ত্রীদের মধ্যে কনিষ্ঠ রইলো না। ইয়াসীন মল্লার এবারের স্ত্রীর বয়স পনেরো বছর অর্থাৎ ৪১ বছর বয়েসী বরের ২৬ বছরের ছোট কনে।

তখন পরিস্থিতিটা অনেক পাল্টে গেছে, হালিমা তখন যোগ দিয়েছে তার হিংসুটে সেই পূর্বের পাঁচ সতিনের দলে, আর ইয়াসীন মোল্লা এবং তার পনেরো বছরের কনিষ্ঠ অহংকারী খাদিজাকে নিয়ে গড়ে তুলেছে আরেক নতুন দোল। দোল ভাগ হওয়ায় ক্ষতি কিছুই হয় নি, বরং ভালই হয়েছে। হালিমা খুব নিরাপদেই সুস্থ মায়্শাকে জন্ম দিতে পেরেছে। খুব সুন্দর চেহারা নিয়ে জন্ম নিয়েছিল মায়্শা, যেন সে মানুষ নয়, কুরআনে বর্ণিত অপুরুপা সেই জান্নাতের যৌনকর্মী হুর।
অনেক কিছুর পরিবর্তনের মাধ্যমে নয়টা বছর পেরিয়ে গেল। পরিবর্ত যেমন হালিমার ষষ্ঠ সতীন খাদিজাও হালিমার দলে যোগ দিয়েছে, ইয়াসীন মোল্লা তার ঘরে ছোটবেলা থেকে পুত্রের মত মানুষ হওয়া জাইদের বিবাহিত স্ত্রী জয়নাবকে উলঙ্গ অবস্থায় স্নান ঘরে স্নান করতে দেখে বয়েসের ভারে ঢোলে পড়া যৌবন আবার মাথা চাড়া দিয়ে দাড়িয়ে উঠেছিল, দাড়িয়ে থাকা উত্তপ্ত পাহাড়ের গলিত লাভা বের করে দিতে সে পালক পুত্রের তালাক করিয়ে নিজে বিয়ে করলো জয়নাবকে। এমন বিয়ে ইসলামে জায়েজ, নিজের পালক পুত্রের স্ত্রীকে বিয়ে করা নাকি সুন্নতের আওতা ভুক্ত, কারণ মোহাম্মদ নিজেও নাকি এমনই একটি বিয়ে করেছিলেন। আবার জয়নাবের দ্বারা প্রাণ ভরে গেলে খাদিজার সঙ্গে আসা এগারো বছরের মরিয়মকে তার উপপত্নী বানিয়ে জয়নাবকে হালিমার দলে যোগদান করতে বাধ্য করলো। সতিনেরা দিব্ব্যি শান্তিতে দিন কাটাচ্ছিল, কারণ স্বামী ইয়াসীন মোল্লা বছরের পর বছর স্ত্রীদের শুকনো মরুউদ্দানে বৃষ্টি বর্ষণ না করলেও, অত্যাচারতো আর করতো না।

খেলাফতি রাষ্ট্র বাংলাদেশে এখন ইসলাম ব্যাতিত সকল শিক্ষা, যেমন বাংলা, অঙ্ক, ইংরেজি এবং বিজ্ঞানকে মালাউনদের শিক্ষা বলে ঘোষণা দিয়ে হারাম করে দিছে খলিফা খোদাজোম। সাত বছর বয়স হলেই ছেলেরা মাদ্রাসায় গিয়ে ইসলামের শিখায় নিজেকে শিক্ষিত করবে, আর মেয়েরাও ওই একই শিক্ষা ঘরের ভেতর পর্দার আড়ালে শিকবে। মায়্শার বয়স এখন নয় বছর, সেও তার মা হালিমা র কাছে ইসলামের শিক্ষা গ্রহণ করে। মেয়েদের ঘরের বাইরে যাবার নিয়ম নেই, মায়্শা যেহেতু ছোট তাই সে সর্বোচ্চ ঘরের আঙ্গিনা পর্যন্ত যেতে পারে, বরখা ছাড়া। ইসলামে যেহেতু নারী পুরুষের মেলামেশা হারাম সেহেতু শিশু বয়সের ছেলে মেয়ে একসঙ্গে খেলাদুলা করাও হারাম, তাই প্রায়ই মায়্শা ঘরের আঙ্গিনাতে তার সমবয়সী মেয়দের সঙ্গেই খেলাধুলা করে।

বিপদের শুরুটা হলো সেদিন যেদিন খলিফা হজরত মাউলানা খোদাজোম ফিদা ইয়াসীন মল্লার সঙ্গে দেখা করতে বাড়িতে আসলো। ইয়াসীন মোল্লা যেহেতু খোদাজোমের বিচার কেন্দ্রে জল্লাদ হিসেবে কাজ করতো, এমনই কোনো বিচারে কয়েক জন বুধিজিবির জবাইয়ের দিন তারিখ ঠিক করতে ইয়াসীন মল্লার সঙ্গে খোদাজোমের দেখা করতে আসা। ইয়াসীন মোল্লা খোদাজোমের বেশ বড় তোষামোদকারী বলা চলে। এর পেছনের স্বার্থটা হলো খেলাফত। খোদাজোম আশা দিয়ে রেখেছে যে খেলাফতি মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশের পরবর্তী খলিফা ইয়াসীন মোল্লাকেই বানানো হবে। ইয়াসীন মোল্লার খলিফা হবার কোন যোগ্যতা নেই, তবুও খোদাজোম এমনটা বলেছিল কারণ সে আবার সুন্দরী দাসীদের একজন কর্মঠ দালালের সেবায় মুক্ধ হয়েছিল। হ্যা ইয়াসীন মোল্লা প্রায়ই কম বয়েসী সুন্দরী মেয়েদের ধরে ধরে উপহার সরূপ খোদাজোমকে উপভোগের বস্তু হিসেবে দিত, খোদাজোম আবার উপভোগের বস্তুকে মেয়ে হিসেবে গ্রহণ করত না, দাসী হিসেবে উপভোগ করত কারণ ইসলামে দাসীর সঙ্গে যৌন মিলন জায়েজ আছে।

খোদাজোম ইয়াসীন মল্লার সঙ্গে জরুরি আলাপ সেড়ে চলে যাচ্ছিল, এমন সময় খোদাজোমের চোখে পড়লো ঘরের আঙ্গিনায় পুতুল নিয়ে খেলতে থাকা মায়্শার দিকে। খোদাজোম এগিয়ে গিয়ে দাড়ালো শিশু বাচ্চা মায়্শার সামনে, মনোযোগ দিয়ে পুতুল নিয়ে খেলতে থাকা মায়্শা তার পাশে অপরিচিত লোকের উপস্থিতি টের পেয়ে চোখ তুলে তাকালো খোদাজোমের কুত্সিত এবং ভয়ানক চেহারার দিকে। মায়্শার অবুজ বুদ্ধি কিছু বুঝে উঠার আগেই খোদাজোম নিচু হয়ে বিশাল বড় হাতে মায়্শার ঘন চুল ধরে ছোট্ট গোলাপের পাপড়ির মত ঠোটে নিজের দাড়ি গোফে ঢাকা লালায় ভেজানো নোংরা ঠোট দিয়ে এমন ভাবে চুমু খেল দেখে মনে হচ্ছিলো কোনো শিশুর শূকর তার মায়ের স্তনের বোঁটা চুষছে। খোদাজোমের এই অশ্লীল এবং যৌনতায় ভরা লালসার সমাপ্তি হতেই মায়্শা ভয়ে এবং ঘৃণায় হাতের পুতুল মাটিতে ফেলে দিয়ে চিত্কার করে কাঁদতে কাঁদতে ঘরের ভেতর চলে গেল। দৃশ্যটি দেখে খোদাজোম নিজেই অত্তহাশি হেসে ইয়াসীন মোল্লাকে বললো
- মেয়েটি আমার এতুটুকু আদরেই ভয় পেয়ে গেল? ইয়াসীন তুমি একটু খোজ লাগাও তো মেয়েটি কার?
ইয়াসীন মোল্লা আমতা আমতা স্বরে বললো
- হুজুর মেয়েটি আমার, অর নাম মায়্শা।
কথাটি শুনে খোদাজোমের মনের ভেতর এক নিকৃষ্ট হিংস্র পশু মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো, আনমনা ভাবে কি যেন ভেবে একা একাই নিজের ভাবনায় অদ্ভুত এক বাঁকা হাসিহাসছিল। খোদাজোমের হাসিটা ঠিক তেমনি ছিল যেমনটা হাসি অনেকেই মনে মনে কোন সুন্দরী মেয়েকে নিয়ে যৌন সহবাসের কল্পনায় বিভোর হয়ে আনন্দ পেয়ে হেসে থাকে। ইয়াসীন মোল্লা খোদাজোমের ঘর কাটাতে জিজ্ঞাসা করলো
- হুজুর কি ভাবছেন?
ইয়াসীন মল্লার আওয়াজে খোদাজোমের ঘোর ভাঙ্গলো, ইয়াসীন মোল্লা কি বলছিল ঘোরের ঘরে খোদাজোম তা শুনতে পায় নি। তাই সে পাল্টা প্রশ্ন করলো
- কি বলছিলে ইয়াসীন?
- জিজ্ঞাসা করছিলাম যে আপনি কি ভাবছেন?
- ইয়াসীন তোমার মনে আছে আমি তোমাকে ওয়াদা করেছিলাম যে পরবর্তী খলিফার আসনে তুমিই বসবে?
অনেক উত্সাহে ভর্তি উত্তেজনায় ইয়াসীন মোল্লা জবাব দিলো
- হ্যা মনে আছে হুজুর!!
- আমি ভাবছিলাম সে সিধান্তের রাষ্ট্রীয় ঘোষণা আমি আগামী সপ্তাহেই দিয়ে দেব।
কথাটা শুনে চরম আনন্দে আত্ম হারা ইয়াসীন মোল্লা প্রায় কেঁদেই ফেললো। নিজেকে সামলিয়ে কাঁদো কাঁদো গলায় প্রশ্ন করলো
- হুজুর সত্যি বলছেন আপনি?
- আমি মহান আল্লাহর কসম খেয়ে বলছি, আমি আগামী সপ্তাহেই তোমার নাম ঘোষণা করে দেব যেন আমার পরের খলিফা তুমিই হও।
- হুজুর আপনার এই ঋণ বোধ হয় আমার পুরো জীবনেও শোধ করতে পারবনা।
একটা কুত্সিত জানোয়ারের মত কর্কশ শব্দে হৃদয় কাপানো হাসি হেসে খোদাজোম বলল
- তুমি চাইলেই এ ঋণ শোধ করতে পারবে।
অতি উত্সাহের সঙ্গে ইয়াসিন মোল্লা জানতে চাইল
- কিভাবে হুজুর? আপনি শুধু হুকুম করুন, আমি আপনার জন্য সব করতে রাজি আছি।
এবার খোদাজোম যে কথাটা বললো তাতে ইয়াসিন মোল্লার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। খোদাজোমের দাবিতে একজন অসুস্থ মস্তিস্কের উচ্চ যৌন পিপাসীর পরিচয় ধারণ করছিল। নয় বছরের শিশুকন্যা মায়্শাকে সে স্ত্রী রূপে গ্রহণ করতে চায়। কথাটা শুনে ইয়াসিন মোল্লা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ল। এর আগে খোদাজোমের জন্য অনেক কম বয়েসী মেয়েদের শরীরের দালালি সে করেছে, কিন্তু এবারের বার দালালির কথা ভাবতেও খারাপ লাগছে, ঘৃনা হচ্ছে, কষ্ট হচ্ছে। হাজার হলেও নিজের মেয়ে বলে কথা। তাই সে বিনীত স্বরে খোদাজোমকে বললো
- হুজুর মায়্শার কেবল নয় বছর বয়স। সে আপনার থেকে প্রায় নয় বছরের ছোট, হুজুর এটা ঠিক না।
খোদাজোম এবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ইয়াসিন মল্লার দিকে তাকিয়ে রাগান্নিত স্বরে বলল
- ইয়াসিন! তুমি দেখি মালাউন নাস্তিকদের মত কথা বলছ। এটা ঠিক নয় মানে? তুমি বলতে চাইছ হজরত মোহাম্মদের সুন্নত ঠিক নয়? তিনি যখন আয়শাকে বিয়ে করেন তখন তার বয়স ছিল একান্ন বছর আর আয়শার বয়স ছিল মাত্র ছয় বছর। আর তিনি আয়শার যৌনাঙ্গ ছেদন করেন চুয়ান্ন বছর বয়সে অর্থাত তখন আয়শার বয়স ছিল নয় বছর। এ বিয়ে শুধু যায়েজই নয় নবির সুন্নতও বটে। তুমি মুসলিম হয়েও যখন আমাদের প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদের সুন্নত বিরোধী, তবে বুঝতে পারছি যে খলিফার গদিতে বসাবার জন্য আমাকে অন্য কারো নাম ঘোষণা করতে হবে।
কথা বলেই খোদাজোম উত্তেজিত ভঙ্গিতে বড় বড় পা ফেলে কিছুদুর চলে গিয়ে ছিল। এরই মধ্যে ইয়াসিন মোল্লা অনেক কিছু ভেবেচিন্তে সিধান্ত নিয়ে দৌড়ে গিয়ে খোদাজোমকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললো
- আমি আপনাকে আমার জামাই হিসেবে গ্রহণ করলাম, আপনিই হবেন মায়্শার স্বামী।
খোদাজোম হাসি ভরা মুখ নিয়ে ইয়াসিন মোল্লাকে বললো
- তবে আজই ইশার নামাজের পর বিয়েটা সম্পন্ন করবো।
- আজই? কয়েকদিন পর হলে ভালো হত না?
- না! ভালো কাজে দেরী করতে নেই। বিয়ে আজই হবে।
খলিফা হবার লোভী ইয়াসিন মোল্লা তাতেও সায় দিল। খোদাজোম চলে যাবার পর ইয়াসিন মোল্লা সোজা গিয়ে ঢুকলেন হালিমার ঘরে। হালিমা অবাক, কারণ প্রায় নয়-দশ বছর পর আজ হঠাত স্বামীর পদধুলি পড়ল হালিমার ঘরে। হালিমা ঘোমটা দিয়ে মুখটা এমন ভাবে লুকলো যেন ইয়াসিন মোল্লা একজন পর পুরুষ। আসলেও, নয়-দশ বছর স্বামী আর স্ত্রীর মধ্যে কোন প্রকার সম্পর্ক না থাকলে তাদের স্বামী স্ত্রী বলা যায় কিভাবে। ঘোমটার ভেতর থেকে হালিমা প্রশ্ন করলো
- হঠাত আজ এই ঘরে, কিছু বলবেন?
- হ্যা, বোলার আছে! মায়্শাকে আজ সাজিয়ে গুছিয়ে রেখ। আজ ইশার নামাজের পর খোদাজোমের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়েছে।
- বিয়ে ঠিক হয়েছে মানে? তুমি বুঝতে পারছ তুমি কি বলছ?
- হ্যা জানি!
- জেনেও এ বিয়েতে তুমি রাজি?
- হ্যা রাজি!
- খোদাজোম তোমার থেকেও অনেক বড়, হিসেবে মায়্শা তার নাতনির বয়েসী।
- বয়স কোন বেপার না পুরুষের জন্য।
- বয়স তার জন্য বেপার না হতে পারে, কিন্তু একটি নয় বছরের মেয়ের জন্য কোন ভাবেই এটা বিয়ের বয়স নয়।
- তুমি কি মহান আল্লাহর বিধানকে অস্বীকার করতে চাও? তুমি জানো না আমাদের প্রিয় মোহাম্মদ আয়শাকে যখন বিয়ে করে তখন আয়শার বয়স ছিল মাত্র ছয় বছর?
এবার হালিমার মাথায় রক্ত চেপে গেল? রাগে, খোবে, ঘৃণায় উত্তেজিত কন্ঠে সে বলল
- ওই ধর্মব্যবসায়ী মোহাম্মদ তো লুচ্চা ছিল। নারী দেখলে সে তার পুরুষাঙ্গকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারতো না। সম্পত্তির লোভে খাদিজাকে বিয়ে করে, এবং পরবর্তিতে সেই সম্পত্তি খরচ করে তার উচ্চ যৌনাকাংখা মেটাতে বহু বিবাহের পেছনে। ছয় বছরের বেচারী আয়শাও মোহাম্মদের সেই উচ্চ যৌনাকাংখার বিষাক্ত ছোবল থেকে রক্ষা পায়নি।
- মুখ সামলে কথা বল, মোহাম্মদের অধিক বিবাহের কারণ তার উচ্চ যৌনাকাংখ্যা নয়, তার প্রত্যকটি বিবাহের পেছনে ছিল আল্লাহর পবিত্র হুকুম, আর প্রিয় নবী কখনই তার হাবিবের কথা অমান্য করতেন না।
আরো অধিক উত্তেজনার সহিত হালিমা বললো
- ওই নোংরা মস্তিস্কের আল্লাহর মুখে থুথু ছিটানো উচিত যে তার হাবিবকে দিয়ে গণ হারে শিশু, বুড়ি, যুবতী বিভিন্ন বয়সের নারীদের যৌনাঙ্গ ছেদন করিয়ে তৃপ্তি পেতেন।
হালিমা র বাস্তব বক্তব্যের কোন যুক্তিযুক্ত জবাব ছিলনা ইয়াসিন মল্লার কাছে, তাই সে স্বজোরে হালিমার গালে কয়েকটা থাপ্পর বসিয়ে শুধু বলল
- কাফের মাগী কোথাকার! চুপ কর!
ইয়াসিন মোল্লা ঘরের বাইরে এসে হালিমার দরজায় তালা আটকে দিয়ে বলল
- আজকেই মায়্শার বিয়ে হবে, আর তা কেউ আটকাতে পারবে না।
ভেতর থেকে মেয়ের মায়ায় অর্তনাদী কন্ঠে হালিমা চিত্কার করে বলল
- বাবা হয়ে নিজের মেয়ের এত বড় সর্বনাশ করোনা তুমি, নিজের হাতে ওই দানবের কাছে নিজের ফুলের মত নিষ্পাপ মায়েকে তুলে দিও না। ওই দানবের বিছানায় প্রতি রাতে আমার মেয়ের প্রাণ যাওয়া ব্যাথা সয্য করার জন্য ওর বিয়ে হওয়ার থেকে ওর মৃত্যু হওয়া অনেক ভালো।
হালিমা বন্ধ দরজার পেছন থেকে আরো অনেক কিছু বলছিল, কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কে শুনে দরজার পেছনে বন্ধি নারীর চিত্কার। বাইরে আঙ্গিনায় অন্য মেয়েদের সাথে হাসি মুখে খেলতে থাকা মায়্শার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে থাকে বাবা ইয়েসিন মোল্লা। অবুজ মায়্শা কাঁদো কাঁদো গলায় বাবাকে বললো
- বাবা আমাকে ছেড়ে দাও, আমি আমার বান্ধবীদের সাথে সঙ্গে খেলতে চাই।
বাবা ইয়াসিন কর্কশ গলায় মেয়েকে বলল
- তোমার খেলার বয়স শেষ।
মায়্শা তখনও জানেনা যে কত বড় ভয়ানক বিপদ অপেক্ষা করে আছে তার জন্য, কিন্তু এটা ঠিকই বুঝতে পারছিল যে যা ঘটছে তার সাথে তা মোটেই ভলো কিছু নয়। মায়্শাকে টানতে টানতে এনে খোদাজোম তার উপপত্নী মরিয়মের কাছে দিয়ে বললো
- মায়্শাকে এখন পুরোপুরি বিয়ের সবজে সাজিয়ে দাও। আজ এশার নামাজের পর খোদাজোমের সঙ্গে ওর বিয়ে।
ইশার নামাজের পর রাতের আধারে চিত্কার করে কান্না করতে থাকা ছোট মায়্শাকে এমন ভাবে বিদায় দেয়া হলো, যেমন ভাবে রাতের আধারে নারী পাচার করা হয়। মায়্শাকে যখন পাচার করা হচ্ছিল মা হালিমা তখন বন্ধ দরজার পেছনে চার দেয়ালের মাঝে বসে কাঁদছিল, শেষ বারের মত দেখতেও পায়নি দুর্ভাগা মেয়ে মায়্শাকে। খোদাজোমের লোকজন যখন মায়্শাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যাচ্ছিল তখন ইয়াসিন মোল্লা তাকিয়ে ছিল ভয়ে, আতঙ্কে, দুখে আর্তনাদ করা নিজের ছোট্ট মেয়েটার দিকে, কিন্তু ইয়াসিন মল্লার চেহারায় কোন প্রকার দুঃখ নেই, বরং ঠোটের কোনে ছিল এক পৈশাচিক হাসি, পৈশাচিক হাসির মুখোশের পেছনে কল্পনা চলছে যে খেলাফতি মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশের খলিফা এখন তিনি, সমস্ত ক্ষমতা এখন তার হাতে, সামান্য একটা ফুটফুটে নিস্পাপ মেয়ের বলিদিয়ে যে এত কিছু পাওয়া যায়, এত ক্ষমতার অধিকারী হওয়া যায় তা ইয়াসিন মল্লার জানা ছিল না।

মেয়ের বিয়ের তিন দিন পর বাইরে থেকে তালা দেয়া হালিমার ঘরের দরজা খুলে দিলেন সতীন খাদিজা। খাদিজা হাউমাউ করে কেদে উঠে হালিমাকে জড়িয়ে ধরে বললো
- মায়্শা আর বেচে নেই, ও মরে গেছে, মৃত্যুর কারণ যোনি পথ ছিড়ে গিয়ে মাত্রাতিক্ত রক্ত ক্ষরণ।
মেয়ের এমন ভয়াবহ মৃত্যু খবর শুনে যা বললো, তা শুনে খাদিজা হতবাক, হালিমা হাসি মুখে যে অদ্ভুত কথাটা বলেছিল তা হলো
- খুব খুশি হলাম শুনে যে আমার মেয়ে মুক্তি পেয়েছে, বেচারী আয়শার মত আমার মেয়েকে মোহাম্মদের মত বুড়া জানোয়ারের অত্যাচার দীর্ঘ নয় বছর সয্য করতে হয়নি, মাত্র তিন দিনেই আমার মায়্শা মরে বেচেছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:৫৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×