somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুখ সহজেই মেলে। জীবন, খুব ভয়ঙ্কর সুন্দর!

০৮ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গুরুকে বললাম; খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি, গুরু। রাজ্যের হতাশা আমাকে জাপটে ধরেছে।
কী বিষয়ে? বললাম, ক্যারিয়ার নিয়ে, গুরু। গুরু ভাবলেশহীন। যেমনটা প্রতিনিয়ত দেখা যায়। আমাকে সুযোগ না দিয়েই গুরু হাঁটা ধরলেন। আমি সচরাচর প্রশ্ন করি না, যেমনটি এবারও। গুরু নিউমার্কেটে নিয়ে গিয়ে, খুব চকচকে তিন পাটির মজবুত দেখে আস্ত একটা কেরিয়ার ধরিয়ে দিয়ে বললেন, ওতেই চলবে না মিটে গেছে?

আমি সেদিন গুরুকে আষ্টে-পৃষ্টে আঁকড়ে ধরে চীৎকার দিয়ে বলে উঠেছিলাম- আমি পেয়ে গেছি, গুরু! সেদিন আশে-পাশের গণজমায়েত ঘাঁই খাওয়া মাছের মতন হয়ে উঠেছিল।

আমার কলেজ পড়ুয়া ছোট ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম, কত লাগবে? বল্ল- দুই হাজার হলেই হবে। জিজ্ঞেস করলাম- বাড়িভাড়া কত? দেড় হাজার টাকা। আচ্ছা এখন দেড় হাজারই দেও। পরে আর পাঁচশ দিলেই হবে।

আমি কী সেদিন নির্বাক হয়ে ওঠেছিলাম? কতোটা অল্পেই তুষ্ট হই আমাদের প্রিয়জনেরা। মাটির মতনই কতোটা কোমল।

আমার বোন, তামান্না। চাকরির কাজে বান্দরবান গেলো। একা। সাথে অবশ্য ওর বান্ধবী আছে, যারে ছাড়া কিছুই করে না। আমি সন্ধ্যায় ফোন দিয়ে বললাম, ঠিকমত পৌঁছায়ছ? ও প্রায় হাউমাউ করে কেঁদেই ফেলছিল। আমি খোঁজ নিয়েছি এর জন্য।

আমাদের প্রিয়জনদের চাওয়া এটুকুই? আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।

আমাকে এবার একটা বিগ এ্যামাউন্ট দিও। অনেক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্তর কিনতে হবে। আমি হকচকিয়ে উঠলাম। সামলে নিয়ে বললাম, ঠিক আছে। আপনার বিগ এ্যামাউন্টটা কত? বিগ এ্যামাউন্ট...। তুমিই বলো। না। আপনি বলেন। কত? পাঁচ হাজার। আমি চুপ হয়ে গেলাম। আচ্ছা ঠিক আছে। চার হাজার। আমার বুঝতে বেগ পেতে হইনি, চার হাজার বলার সময় উনার ঠোঁট কেঁপে উঠেছিল। আমাদের প্রিয়জনদের বিগ এ্যামাউন্ট এত্তো বড়?

তখন সদায় করছিলাম। রাতে রাঁধতে হবে। একটা স্পেশাল ডিস। একটু হ্যাং আউট হবার প্রস্তুতি। বিষুদবারটা ভালো যায়নি। আজকাল খুব হাউকাউ হচ্ছে চারদিকে। আমাদের পরিবারে একজন লিউ... আক্রান্ত। আমাকে ফোন দিলেন সেসময়। কেমন আছি, কী করছি। এটা সেটা। কবে দ্যাখতে যাবো। আরো কত কী। তারপর রেখে দিলেন। আমি ফিরতি কলে একটা বিকাশ নাম্বার চাইলাম। খুব কাঁচুমাচু হয়ে বললেন- কাল সকালে দিবেন। দুপুরে ফোন দিলেন। বললাম, বিকাশ নাম্বার দেন। একটা নাম্বার দিলেন। আজ তো শুক্কুরবার। সব দোকান বন্ধ। এই একটা নাম্বার পাওয়া গেল। নাম্বারটা দিতে দেরি বা একটা মাত্র নাম্বার দেওয়াটা অন্যায় ঠেকল উনার কাছে। আমি খুব সামান্য, অই বিগ এ্যামাউন্টের চেয়েও ছোট একটা এ্যামাউন্ট দিলাম। পেয়ে, আমাকে আমাকে ফোন দিলেন। বুঝতে পারছি, ওপাশের মানুষটার গলাটা ধরে আসছে। চোখ চিকচিক করছে। আনন্দে।

আমাদের প্রিয়জনেরা এতো অল্পতেই তুষ্ট হই।
আমার চোখ কী বন্ধ হয়ে আসছিল তখন। আমি শুধু চীৎকার দিয়ে বলেছিলাম, সুখ, তুমি কত সস্তা!

গুরু ফোন দিলেন। সুখ খুব আপেক্ষিক, পাগল। সহজেই মেলে। জীবন, খুব ভয়ঙ্কর সুন্দর! কিন্তু অধিকাংশরা বুঝতে পারেন না। আমি এতোটা অধিকাংশ! আফসোস! এমন সময় স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ গেয়ে উঠলেন-চরণ ধ্বনি শুনি তব নাথ...।

ছারা ভিটার বাঁশঝাড়ে চৈত মাইস্যা পুবাল হাওয়া লাগছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৫৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×