অশান্ত একটা সময়ের মাঝে বড় হয়ে উঠেছি আমি। আবছা আবছা খেয়াল আছে ঢাকায় কারফিউয়ের কথা, ব্ল্যাক আউটের কথা। মুজিব হত্যার পর এসব মহড়া দিতে হতো দেশ জুড়ে সবাইকেই। রাতের বেলা ঘরে হারিকেন জ্বেলে বাতি নিভিয়ে দেয়া হতো সব। হারিকেনের চিমনী অনেকটাই ঢাকা থাকতো কালো কাগজে। রাতের একটা নির্দিষ্ট সময়ে বেজে উঠতো ভয়ানক সাইরেন, যেন যুদ্ধাবস্থায় বিমান হামলার সংকেত। সাথে সাথে আলো ঝলমলে ঢাকা হয়ে পড়তো নিস্তব্ধ, আঁধার, ভুতুড়ে নগরী। বাড়ীর দরজা জানালা এঁটে সবাইকে ঘরে বসে থাকতে হতো।
২৫শে মার্চের কালো রাত্রির ভয়াবহতা আমরা আঁচ করতে পারি না। আমরা যুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম ৭১ সালের সঠিক ইতিহাসটুকুও জানি না। আমাদের জানতে দেয়া হয়নি সেভাবে কখনই।
গত ৪২ বছর ছিল যুদ্ধ পরবর্তী দেশের টিকে থাকার সংগ্রাম। শূন্য থেকে শুরু হওয়া হত দরিদ্র মানুষের একটা দেশ, এর তো টিকেই থাকবার কথা না। কিন্তু বীরের জাতি টিকে গেছে ঠিকই। হাজারও সমস্যা ছিল, এখনও আছে, জুয়েল আইচের জাদুমন্ত্রে বদলে যায়নি পরিবেশ, সমাজ, মানুষজন। তবুও বদলেছি আমরা, বদলাচ্ছি একটু একটু করে।
বলতে দ্বিধা নেই, তরুণ প্রজন্মের দেশপ্রেম নিয়ে এক সময় সংশয়ে থাকতাম। অথচ আজ, গর্বভরে বলতে পারি - তোমারা অনেক বেশী ভালবাসো দেশটাকে।
এতদিন যেভাবে চলে এসেছে দেশ, ক্ষমতাশালীরা বার বার শুষে নিয়েছে দেশটাকে, উন্নয়নের নামে পকেট ভারী করতে ব্যস্ত থেকেছে এক শ্রেণীর দালাল, ক্ষমতা চলে গেছে একেবারেই অযোগ্য লোকটির হাতে, ফলে বারবার পিছিয়ে পড়েছি আমরা।
ভবিষ্যতটা সুন্দর হবে। হতেই হবে। আজকের এই তরুণ সমাজ, বুকে দেশের জন্য ভালবাসা আর কপালে লাল সবুজ পতাকাটা বেঁধে একদিন ঠিকই হাতে তুলে নেবে দেশের স্টিয়ারিং, দেশ চালাবে সঠিক পথে।
আমরা অপেক্ষায় আছি সেই সুন্দর সময়টার ...
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৭:৩৭