এভালুয়েশান অভ ম্যান চার্ট
আবারো একটু কষ্ট করে জিওলজিক্যাল (ভুতাত্ত্বিক) টাইম স্কেল টা দেখে নিন। এখানে ওপরের হলুদ অংশে দেখুন সেনোযোয়িক ইরা (Cenozoic Era)
জিওলজিক্যাল (ভুতাত্ত্বিক) টাইম স্কেল
হিউম্যান এভালুয়েশানে আমাদের দরকার সেনোযোয়িক ইরা (Cenozoic Era) কারন এখান থেকেই প্রাইমেটের উদ্ভব বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব অনুযায়ী তাই শুধু এই অংশ টুকু রেখে দেই এবং একটু খেয়াল করে দেখুন।
সেনোযোয়িক ইরা (Cenozoic Era)
আড়াই কোটি বছর আগে
এই সেনোযোয়িক ইরাকে কয়েকটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে। আজ থেকে প্রায় আড়াই কোটি বছর আগে ওলিগোসিন পর্বে এপদের (শিম্পাজী টাইপের প্রানী) থেকে মানুষের পূর্ব পুরুষের গঠন শুরু হয়।
এপ
প্রেপ্লিওপিথেকাসের চোয়ালের হাড় দেখে মনে করা হয় এরাই ছিল গীবনের (শিম্পাজী টাইপের এক ধরনের জন্তু) পূর্ব পুরুষ। এদের বাস ছিল মিশরে।
প্রেপ্লিওপিথেকাসের চোয়ালের হাড়
এক কোটি বিশ লাখ বছর আগে
এর পর প্রায় এক কোটি বিশ লাখ বছর আগে মাইওসিন পর্বে প্রেপ্লিওপিথেকাস থেকে কিছুটা উন্নত শিভাপিথেকাস (যাদের বাস ছিল পূর্ব আফ্রিকায়)
শিভাপিথেকাস
লিমনোপিথেকাস, প্রোকনসাল (শিম্পাঞ্জী গরিলার পূর্ব পুরুষ, সম্ভবতঃ এরা মাটিতে বসবাস করত)
প্রোকনসাল কংকাল
প্রোকনসাল কম্পুট্যার গ্রাফিক্সের সাহায্যে তৈরী প্রাপ্ত চোয়ালের হাড় থেকে
প্লাইওপিথেকাস (ইউরোপে বসবাসরত গিবনের পূর্ব পুরুষ)
প্রাপ্ত প্লাইওপিথেকাস এর চোয়াল
প্রাপ্ত প্লাইওপিথেকাস এর চোয়াল থেকে কম্পুটার গ্রাফিক্সের সাহায্যে তৈরী
ড্রাইওপিথেকাস (ভারতের শিবালিক অঞ্চলে এদের অস্তিত্ত্বের প্রমান পাওয়া গেছে) এপ জাতীয় প্রানীর প্রমান পাওয়া যায়।
ড্রাইওপিথেকাস এর প্রাপ্ত চোয়াল
প্রাপ্ত ড্রাইওপিথেকাস এর প্রাপ্ত চোয়াল এর সাহায্যে কম্পুটার গ্রাফিক্সে ছবি
তেপ্পান্ন লাখ বছর আগে
মাইওসিন পর্বের শেষ দিকে প্লাইওসিন পর্বের শুরুর দিকে বর্তমানে যে সব এনথ্রোপয়েড এপ দেখতে পাওয়া যায় তাদের পূর্ব পুরুষরা আফ্রিকা, এশিয়া এবং ইউরোপে ছড়িয়ে পরে। ইতালীতে প্রাপ্ত ওরিওপিথেকাসরা সম্ভবতঃ আধুনিক এপদের পূর্ব পুরুষ।
ওরিওপিথেকাস এর কংকাল
প্রাপ্ত ওরিওপিথেকাস এর কংকাল এর সাহায্যে কম্পুটার গ্রাফিকস
ছাব্বিশ লাখ বছর আগে
প্লাইওসিন পর্বের শেষে আজ থেকে ছাব্বিশ লাখ বছর আগে প্লাইষ্টোসিন পর্বের শুরু। বিজ্ঞানীরা প্লাইষ্টোসিন পর্বকে তিন ভাগে ভাগ করে আদি (আর্লি) প্লাইষ্টোসিন মধ্য (মিড) প্লাইষ্টোসিন এবং লেট প্লাইষ্টোসিন ।
আদি প্লাইষ্টোসিন পর্ব ছাব্বিশ লাখ বছর আগে থেকে পাচ লাখ বছর আগ পর্যন্ত বিস্তৃত এ সময় মানুষের (বৈজ্ঞানিক নাম হোমো স্যাপিয়েন্স) আদি পূর্ব পুরুষের উদ্ভব হয়।
অষ্ট্রালোপিথেসিন দক্ষিন আফ্রিকায় এদের অস্তিত্বের প্রমান পাওয়া যায়, এরা উচ্চতায় খাটো এবং মস্তিস্কের আকারো অনেক ছোট ছিল, এদের দেহের বৈশিষ্টর সাথে মানুষের দেহের বৈশিষ্টের মিল পাওয়া যায়।
অষ্ট্রালোপিথেসিন কংকাল
প্রাপ্ত অষ্ট্রালোপিথেসিন কংকাল এর সাহায্যে কম্পুটার গ্রাফিকস
ওলডুভাই এরা পূর্ব আফ্রিকায় বাস করত এরা হাতিয়ার বানাতে পারত।
ওলডুভাই কংকাল
প্রাপ্ত ওলডুভাই কংকাল এর সাহায্যে কম্পুটার গ্রাফিকস
পিকেনথ্রোপাস বা জাভা মানুষ প্রকৃত হোমো স্যাপিয়েন্স বা মানুষের আদি পূর্ব পুরুষ ধরা হয়। এরা হাতিয়ার বানাতে পারত।
পিকেনথ্রোপাস বা জাভা মানুষ
পিকেনথ্রোপাস বা জাভা মানুষের কম্পুটার গ্রাফিকস
মধ্য প্লাইষ্টোসিন পাচ লাখ বছর থেকে এক লাখ বছর আগ পর্যন্ত বিস্তৃত
হেইডেলবার্গ মানুষ এদের কেবল চোয়ালের হাড় পাওয়া গেছে
হেইডেলবার্গ মানুষ চোয়ালের হাড়
হেইডেলবার্গ মানুষ চোয়ালের হাড়ের সাহায্যে কম্পুটার গ্রাফিকস
জাভা মানুষের উত্তর পুরুষ হিসাবে পিকানথ্রোপাস পিকিং মানুষের উদ্ভব ঘটে এরা হাতিয়ার ব্যাবহার করত এবং আগুনের ব্যাবহারও জানত।
পিকানথ্রোপাস পিকিং
পিকানথ্রোপাস পিকিং কম্পুটার গ্রাফিকস
ষ্টোনহেম মানুষ এরা সম্ভবত আধুনিক নিয়ানডারথাল মানুষের পূর্ব পুরুষ।
আর্লি প্লাইষ্টোসিন পর্ব এক লাখ থেকে দশ হাজার বছর আগ পর্যন্ত বিস্তৃত।
পঞ্চাশ হাজার বছর আগে প্যালেষ্টাইনের কারমেল পর্বতের উভয় পাশে নিয়ানডারথাল মানুষের পূর্ব পুরুষরা বাস করত। আধুনিক মানুষের পূর্ব পুরুষ হিসাবে বিবেচিত ফনটেচেভেড সোয়ানস কমবের সাথে সম্পর্ক পাওয়া যায়।
ফনটেচেভেড সোয়ানস কমব স্কাল
পঞ্চাশ হাজার থেকে দশ হাজার বছর
আগে উদ্ভব ঘটে নিয়ানডারথাল মানুষের, এরা গুহা বাসী। এরা শেষ বরফ যুগ (লাষ্ট আইস এজ) বাস করত। এরা প্রায় আধুনিক হোমো স্যাপিয়েন্সের সমসাময়িক। এরা ইউরোপ, এশিয়া আর আফ্রিকায় বসবাস করত। এদের মাঝে এক দল ছিল তাদের তুলনায় উন্নত মস্তিস্কের।
নিয়ানডারথাল মানুষ
সোলোমানব জাভায় বাস করত
ক্রো ম্যাগনন মানুষ ইউরোপে নিয়ানডারথাল মানুষের উন্নত পুরুষ। এই যুগে সীমিত আকারে কৃষিকাজের উদ্ভব ঘটে এশিয়া থেকে।
ক্রো ম্যাগনন স্কাল
ক্রো ম্যাগনন ম্যান
হেলোসিন পর্বের উদ্ভব ঘটে আজ থেকে প্রায় সাত হাজার বছর আগে
নব্য প্রস্তর যুগের মাধ্যমে। এই সময় থেকে মানুষ কৃষিকাজ, পশুপালন এবং নগর জীবনের সাথে পরিচিত হতে থাকে।
নব্য প্রস্তর যুগ
যত খানি সম্ভব চেষ্টা করছি এভালুয়েশান অফ হোমোস্যাপিয়েন্স সময়ের সাপেক্ষে বুজানোর জন্য কিন্তু কতক্ষানি সফল হব জানি না। তবে এট লিষ্ট একটা ধারনা তো পেতে পারেন। এক্ষেত্রে একটা কথা বলে নেই এত এত লম্বা সময় পরে এভালুয়েশানের যে সব সুত্র (পড়ুন কংকাল, স্কাল) পাওয়া গেছে তাতে নিশ্চিতভাবে বলা যায় না এর পরে ও ওর পরে এ আসছে এখানে এ্যানথ্রোপলজিতে মানে নৃতত্ত্বে “মিসিং লিঙ্ক” বলে একটা কথা প্রচলিত আছে। সেটা অনেক ইম্পর্ট্যান্ট। সেই সব ফাকা জায়গা গুলো অনেকটা অনুমান নির্ভর। এখনো খোজ চলছে হোমো স্যাপিয়েন্সের উৎসের।
আর সব শেষে একটা কথা এই বিবর্তনবাদের সাথে ধর্মের সংঘাত একেবারে মুখোমুখি। তাই দয়া করে সেদিকে কেউ টান দিয়েন না। আর যদি এই দুই ধারাকে কেউ এক সাথে মিলানোর কোন উপায় খুজে পান তবে তা হবে সব থেকে যুগান্তকারী কিছু একটা। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে তা আটে না। আটাতে যাইও না। শুধু পড়ে যাই জেনে যাই। দরকার কি সব বিষয়ে মিলিয়ে ফেলা।
কৃতজ্ঞতাঃ বিভিন্ন জার্নাল এবং ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ২:৪৮