somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সৃষ্টি রওনক
আমি বানিয়ে কিছু লিখতে পারি না। বলা যেতে পারে আমার কল্পনা শক্তি একদমি নেই, কিন্তু আমি কিছু লিখতে চাই, তাই শুরু করলাম একটা ধারাবাহিক গল্প লেখা, যার বেশির ভাগ ই হবে জীবন থেকে নেওয়া কিছু সত্য।

জলজ বৃক্ষ--শেষ পর্ব

০৬ ই মে, ২০১০ রাত ১০:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আবার সেই পুরোন পাতাবাহার গুলোকে নতুন করে বাঁচিয়ে তুলতে চাই...আচ্ছা, অইগুল তো বাসা তেই রেখে এসেছিলাম...এখনও কি বেছে আছে ওগুলো? নাকি মরে গেছে ইলার মত?
৩।
কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম টেরও পাই নি। ঘুম ভেঙ্গে একটু চা খেতে ইচ্ছে করল। আয়া দের বললেই ওরা বানিয়ে দেয়। কিন্তু আমার ইচ্ছে করছে ইলার হাতের চা খেতে।ইলার চা টা খুব ভাল হত...একবার খেলে কেমন যেন নেশা ধরে যায়। আমি অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পরে জামা কাপর ছাড়ার ফাঁকে ও কেমন করে যেন তাড়াতাড়ি চা টা বানিয়ে ফেলত। বারান্দায় গিয়ে বসার সাথে সাথেই ও চা এর ট্রে নিয়ে হাজির হয়ে যেত। কোন কোন দিন চা এর সাথে ওর হাতের বানান টা ও থাকত। চা এর কাপ টা হাতে নিতেই চা পাতার মিষ্টি একটা ঘ্রান আমার সারা দিনের সব ক্লান্তি কে এক নিমেষে দূর করে দেয়...আর আমার সবচেয়ে বেশি ভাল লাগত চায়ের উপর ভেসে থাকা দুধের সর। এখন সেই অভ্যাস টা যায় নি...আশ্রমের আয়া দের কে বললেই ওরা বানিয়ে দেয় মালাই চা। কিন্তু সেই চা কি আর ইলা বানায় যে ইলার মত হবে?
চায়ের কাপ টা হাতে নিয়ে বসতেই বড় মেয়ে টার মোবাইল ফোন এর স্ক্রিনে ভেসে ওঠে...।
----হ্যালো , বাবা? কেমন আছো?
----হুম মা...ভাল আছি...তুই কেমন আছিস? রাশেদ কেমন আছে?
----হা বাবা...ভালই আছি...রাশেদ ও ভাল আছে...শুধু দিন কে দিন ওর ব্যস্ততা বাড়ছেই...ঘরে একদম সময় দেয় না...ছেলে টা বড় হচ্ছে...কাদের সাথে যে মেশে...দিন কে দিন বেয়াড়া হয়ে যাচ্ছে...।একটা কথা বলে শুনাতে পারি না...
----শোন মা...এই বয়সের ছেলে রা একটু বেশি আবেগ প্রবন হয়ে থাকে...বকা ঝকা দিবি না...আদর করে বুঝিয়ে বলবি...কথা শুনবে।
---যাক গে বাবা...। সেসন কথা বাদ দাও... তোমার শরীর কেমন আছে সেটা বল।ওষুধ ঠিক মত খাচ্ছো তো?
---হ্যা রে মা...ঠিক মত খাচ্ছি।
---আশ্রম এর ওরা ঠিক মত যত্ন করে তো? ভাল ব্যবহার করে?
---হুম করে...একা ঘরে যাতে মরে পড়ে না থাকি সেজন্যি তো এইকাহেন থাকা...সমস্যা নেই...আমি মরে গেলে তোরা ঠিক এ খবর পাবি।
---ছি ছি বাবা...এসব কি বল তুমি? আমরা কি তোমার মৃত্যু চাই? মা নেই...তোমার যাতে যত্নের কোন ত্রুটি না হয় , যে দিন কাল পড়েছে...বাসায় যে কোন লোক রেখে দেবো তাও তো বিশ্বাস হয় না। কি যে করে...ভয় ই লাগে
----তা অবশ্য ঠিক...কিন্তু মা...নিজের বাসা তে একলা থাকাটাও শান্তি। এই বুড়ো বয়সে কি আর এইখানে থাকতে মন চায়? আমার তো ইচ্ছে করে সব নাতি পুতি নিয়ে, তোদের সবাই কে নিয়ে একসাথে থাক্তে...তোরা দেশে চলে এলেই তো পারিস...শেষ কটা দিন তোদের সাথে কাটাতাম
-----বাবা, তুমি কি পাগল হয়ে গেছ? আসলে বয়স হয়ে গেলে নাকি মানুষ বাচ্চাদের মত জেদ করে...তুমি ই বলো, এখন ছেলে মেয়ে গুলোকে এনে কথায় ভর্তি করব? অনেক কষ্টে এখানে এসে সংসার টা গুছিয়েছি...এখন আবার দেশে ফিরে গেলে নতুন করে গোছাতে হবে।
-----থাক মা...তোরা যেখানেই থাকিস ভাল থাক এই দোয়া করি...
-----বাবা...একটা কথা বলি যদি কিছু মনে না কর।
-----কি বলবি মা ?
----তুমি আরেকটা বিয়ে কর বাবা...তাহলে তো তুমি আমাদের পুরোন বাসা তেই থাকতে পারবে...
-----এটা তুমি কি বললে মা? ওই বাড়িটা তোমার মায়ের...ওখানে তার স্থান নিয়ে কেউ যেতে পারবে না...আর শোন মা...মানুষের জীবন টা জলজ বৃক্ষের মত...জলের সন্ধান পেলে গজিয়ে ওঠে...আর জলের অভাব হলে মরে যায়...বেশি দিন বাঁচে না...আমার জল ফুরিয়ে গেছে ।। শীঘ্রই আমিও মরে যাব...। জল ছাড়া কত দিন বাচাঁ যায়?
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×