এখন পেছন ফিরলে এগুলোকে গল্পের বইয়ের কাহিনী মনে হয় । সময় কত দ্রুত চিত্রপট পাল্টে দেয়, আমাদের ছেলেমেয়েরা ঘরের চারদেয়ালের মাঝে খেলনার পাহাড় বানায়, জানালার গ্রিল ধরে বড় হয়; এটাই ওদের জন্য স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা। খোলা মাঠে খেলার সেই রোমাঞ্চ, তাড়া খেয়ে দৌড়ানোর বাজিমাত উত্তেজনা; সব কিছু হারিয়ে গিয়েছে। এখন শহরের বাচ্চারা ছবি আঁকা শেখে, গান শেখে, নাচ শেখে; বাবা মারা খেলতে শেখায় না। চোখে কাপড় বেঁধে কানামাছি বলে যে একটা খেলা আছে তাও হয়ত তারা জানে না। আমি শহর থেকে দূরে থাকি, এখানে খোলা মাঠ আছে। বিকালে অনেক বাচ্চা জড়ও হয় কিন্তু ওরা খেলতে জানে না; অকারনে এদিক সেদিক হাঁটাহাঁটি করে, নিজেরা গল্পসল্প করে, একপাশে কিছু নাদুসনুদুস ছেলেবাচ্চা ক্রিকেট খেলে। মজার ব্যাপার ওদের নড়াচড়া করার বেশী প্রয়োজন পড়ে না। দম ফাটানো দৌড়াতে দেখি না। এখন নাকি সামরিক বাহিনীতে যারা ঢোকে তাদেরকে বুট পড়িয়ে প্যারেড করানো যায় না, প্রথমে কেডস পড়িয়ে ঘাসের মাঠে প্যারেড করাতে হয়। এরপর পা শক্ত হলে বুট পড়ান হয়। আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে এভাবে তৈরী করছি।
আমরা আমাদের সন্তানদের বড় করছি, নিজেরা যা পাইনি তা দেবার সর্বাত্মক চেষ্টা করছি; কিন্তু নিজেরা যা পেয়েছি তা কি দেবার চেষ্টা করি? ঘর্মাক্ত, কর্দমাক্ত শরীরে আমাদের সন্তানেরা কখনও ঘরে ফিরবে না। আমার মেয়েকে একটা দুরন্ত বিকাল দেবার খুব ইচ্ছা হচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১১:৩৮