সাম্প্রতিক সময় নিয়ে আমার আসলে কিছু বলার নাই, আবার মাঝে মাঝে মনে হয় কিছু বলার আছে; কোথা থেকে যে বলাটা শুরু করা উচিত, তাইতো বুঝি না, আবার কিছু যে বলবো, সেটা কাদের উদ্দেশ্যে বলা সেটাও বুঝতে পারছি না। আমার মেয়ের বান্ধুবি বাসায় এসেছে খেলা করতে, সে বলল, ‘অ্যান্টি, আমাদের ক্লাসে না একটা হিন্দু মেয়ে আছে, সে না খাওয়ার আগে বিসমিল্লাহ্ বলে না। আমরা ওর সাথে কথা বলি না, খেলি না।’ মনটা বিচলিত হল, আহা ৬/৭ বছরের একটা বাচ্চা মেয়ের সাথে ক্লাসে কেউ কথা বলে না, খেলে না, শুধুমাত্র সে অন্য ধর্মের বলে। আমি বললাম ‘মা, তুমি যদি এমন একটা জায়গায় কখনো যাও, যেখানে ক্লাসের সব বাচ্চারা অন্য ধর্মের, তোমার সাথে কেউ কথা বলে না, খেলে না, তুমি খাবার আগে বিসমিল্লাহ্ বলো দেখে সবাই হাসাহাসি করে, তোমার কি ভালো লাগবে??’ মাথা ঝাঁকায় সে ভালো লাগবে না। তাহলে তুমি ওর সাথে কথা বলবে, খেলা করবে যাতে সে জানে মুসলিম বাচ্চারা অনেক ভালো। আস্তে করে আচ্ছা বলে সে।
আমি জানি মানুষকে শ্রদ্ধা, সম্মান করতে হয়, সে ভিন্ন ধর্মের হতে পারে, ভিন্ন পেশার হতে পারে। আপনার কাছে আপনার ধর্ম যেমন মহিমান্বিত, আরেকজনের কাছে তার ধর্মও তেমন মহিমান্বিত। মানুষকে মানুষ হিসাবে দেখাটাই শ্রেয় নয়কি! আমি আরেকজনের সাথে সেরকম ব্যবহার করবো, যেমন ব্যবহার আমি তার কাছ থেকে আশা করি। একি কথা প্রযোজ্য ভিন্ন পেশার মানুষের ক্ষেত্রেও। পিয়ন, রিকশাওয়ালা, ফেরিওয়ালা, ড্রাইভার, বাসার গৃহপরিচারিকার সাথে কথা বলার সময়কার আপনার টোন আর উচ্চবিত্তের কোন আত্মীয়র সাথে কথা বলার টোন যদি একি রকম না থাকে তাহলে আপনি কিভাবে উদার ভালো ধার্মিক মানুষ হলেন। আচ্ছা বুঝলাম আপনি এরকম হতে পারেননি, কিন্তু আমাদের সন্তানদের তো এমন বানাতে হবে, দেশের জন্য, দেশের ভবিষ্যতের জন্য।
নারে ভাই গোল্ডেন এ পেয়ে জান্নাতে যাবার তালিম না দিয়ে, সন্তানদের মমতা শেখাই, ভালবাসতে শেখাই, ছুটে না হয় যাক গোল্ডেন এ, টেনেটুনে পাশ করে বেহেস্তে যেতে পারলেই খুশি।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৪০