না, সরাসরি দেখা তাদের কখনো হয়নি। কথা হয়েছিল মোবাইলে। এবং সেই থেকে শুরু এই আজিব প্রেম কাহিনীর।
""রমনীমোহন রাজেশের মোবাইলে প্রায়শই বিভিন্ন তরুণীদের ফোন আসিত। সে কিছুক্ষন কথা বলিয়া তাহাদিগকে বলিত," তোমার পরিচয় দাও। তা না হইলে তোমার সহিত আর কথা বলিব না।"
অতঃপর ইনাইয়া বিনাইয়া আরও ঘণ্টা দুএক কথা বলিয়া বাবুটি ফোন রাখিতেন।ফোন রাখিবার পূর্বে বলিতেন,পরবর্তী ১২ ঘণ্টার ভেতর পরিচয় না জানাইলে আর কথা বলিবেন না।
যথারীতি আবার ফোন আসিত। এই ভাবে একদিন বাবুটি সত্যি সত্যি প্রেমে পতিত হইলেন দিন রাত ফোনে কথা বলিতেন।বন্ধুরা জিজ্ঞেস করিলে, মিটি মিটি হাসিয়া সম্মতি প্রকাশ করিতেন।
এই ভাবে একটি বছর কাটিয়া গেল------------
একদা রাজেশের সনে মাহবুব আলীর দেখা হইয়া গেল কলেজ লাইব্রেরীতে। মাহবুব আলী লক্ষ্য করিল আজ রাজেশ ফিটফাট হইয়া আসিয়াছে। কারন জিজ্ঞাসিলে রাজেশ কহিল, "আজ এক রমণীর সহিত সাক্ষাত করিতে যাইব।"
মাহবুব আলী পুলক অনুভব করিল এবং তাহার সহিত যাইবার বায়না ধরিল।
কেন জানি মাহবুব আলীর মনে হইতেছিল, মজা আসিবে।
ইতস্তত করিয়া রাজেশ রাজী হইয়া গেল। মাহবুব আলীর মোটরসাইকেলে
করিয়া ২ জন বনফুলে গিয়া লক্ষ্য করিল বর্ষা নামক এক তরুণী অপেক্ষা করিতেছে। রাজেশ কে "উনিই কি তিনি" জিজ্ঞাসিলে রাজেশ না সূচক মাথা নাড়িল। :-
ক্ষনকাল পর মাহবুব আলী জানিতে পারিল, বর্ষা আসলে পিওনের কর্তব্য পালন করিতেছে। উনি প্রিয়ংবদার খালাত বোন।মাহবুব আলী এও জানিতে পারিল যে, তাহাদের কখনো দেখা হয় নাই। শুধু ফোনে আলাপ হইয়াছে। যা কিছু গিফট আদান প্রদান, সব এই বর্ষার মাধ্যমে হইয়াছে।
সপ্তাহ দুই পরে
আবার লাইব্রেরীতে রাজেশ এর দেখা পাইয়া মাহবুব আলী জিজ্ঞেস করিল,"দোস্ত কেমন চলিতেছে?? উত্তরে রাজেশ কহিল," দোস্ত আজ দেখা করিতে যাইব।" এই বেলা মাহবুব আলী একান্ত ইচ্ছা থাকা সত্তেও রাজেশের সহিত গেল না।
ঘণ্টা ২ পর , মাহবুব আলী যখন গভীর পড়াশোনায় মগ্ন, তখন রাজেশ একেবারে বিধ্বস্ত অবস্থায় লাইব্রেরীতে আসিয়া হাজির হইল।মাহবুব আলী সম্ভাব্য মজার নেশায় রাজেশ কে জিজ্ঞেস করিল,
"দোস্ত কেমন দেখিলে?"
জবাবে রাজেশ কহিল," না দোস্ত দেখা হয় নাই।"
কেন??
"বর্ষা আসিয়াছিল"
"কি বলিল?"
"প্রিয়ংবদা আসলে আমার সহিত দেখা করিতে চায় না। কারন সে হিন্দু নহে"
তবে?? বর্ষা তো হিন্দু। একে অপরের খালাত বোন হইল কি করিয়া??
রাজেশ বলিল," প্রিয়ংবদার মা ধর্মান্তরিত হইয়াছেন।"
এখন উপায়?? মাহবুব আলীর মুখে নিখাদ বিস্ময়
ইহার পর রাজেশ বিদায় নিয়া চলিয়া যায়।
তারও মাস খানেক পর রাজেশ এর সহিত মাহবুব আলীর দেখা হয় লাইব্রেরীতে।রাজেশের সেই রমণী মোহন চেহারা খানা কেমন যেন ম্লান দেখায়। মুখে দেবদাস মার্কা দাড়ি। মাহবুব আলী অত্যন্ত আন্তরিকতার (??) সহিত জিজ্ঞাসা করিলে, রাজেশ এক নিঃশ্বাসে যাহা বলিল তাহা হইল,
"দোস্ত প্রিয়ংবদা নামের কোন মানুষ নাই।" শুনিয়া মাহবুব আলীর মুখ খানা হা হইয়া যায়।
"তাহার মানে?"
"মানে কিছু নহে। যে মেয়েটা এতদিন পিয়নগিরি করিত সেই আসলে প্রিয়ংবদা নামে আমার সহিত প্রেমালাপ করিত।"
মাহবুব আলী জিজ্ঞাসিল," তুই বুজিতে পারিস নাই এতদিন?"
"না দোস্ত , এতদিন তো বুঝি নাই। কিন্তু এখন মনে হইতেছে দুই জনের গলার আওয়াজ একই।" [ মাহবুব আলী মনে মনে বলিল, ছাগল আর কাকে বলে]
"তুই বর্ষাকে কিছু বলিস নাই?"
"জিজ্ঞেস করিয়াছি। বলিল, তাহার নিজের পরিচয় দিলে আমি নাকি তাহার সহিত প্রেম করিতাম না। তাই সে মোবাইলে আরেক মেয়ের ছবি পাঠাইয়া আমার সহিত ফোনে প্রেমালাপ করিত।"
এই কথা শেষ করিবার পূর্বেই রাজেশ হু হু করিয়া কাঁদিয়া উঠিল "
মাহবুব আলী বুজিতে পারিল " পচা শামুকে পা কাটা" কাকে বলে ।।
আগের পর্বের লিংক
Click This Link
Click This Link
Click This Link
চলবে-----------------------------