somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারী -পুরুষ একজন আরেকজনের সহযোগী নাকি প্রতিদ্বন্দ্বী ?!

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সম্প্রতি হাতিরঝিলের পারফর্মিং আর্ট ''হিউম্যান ডগ'' কনসেপ্ট নিয়ে চারিদিকে বেশ হৈ চৈ পড়ে গেছে। পুরুষেরা এর বিপক্ষে জোড় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। ফেইসবুক, ব্লগ সবখানেই লিখালিখি চলছে। কেউ কেউ বিষয়টিকে ‘মধ্যবিত্ত পুরুষের করুণ জীবনকাহিনী ফুটে উঠেছে’ বলে মনে করছেন। ব্যাপারটি এমনও হতে পারে যে পুরুষশাসিত সমাজ নারীদের অবলা ভাবতে পছন্দ করলেও নিজেদের নিরীহ গোছের কিছু একটা (সেটা কল্পনায় অথবা প্রতীকী হলেও) ভাবতে নারাজ, সেজন্য প্রতিবাদ করেছে।

যাই হোক, নারী হোক আর পুরুষ ই হোক তাকে মানুষ না ভেবে পশুর মতো, সাধারণ পণ্যের মতো বিবেচনা করা হবে তা কখনোই প্রত্যাশিত হতে পারেনা। একটি ব্যাপার লক্ষ্য করুন, অধিকাংশ মানুষ ই পুরুষকে নারীর অথবা নারীকে পুরুষের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এমনটি কখনো সুন্দর ও স্বাভাবিক ভাবনা হতে পারেনা। পারিবারিক/সামাজিক ভূমিকা অথবা শারীরিক গঠনগত দিক থেকে কেউ কারো প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। বরং নারী- পুরুষ একজন আরেকজনের সহযোগী হবার কথা ছিল। একসাথে মিলেমিশে এগুবার কথা ছিল। সেটাই শোভনীয় এবং তাতে সার্বিক উন্নতিও সম্ভব। কিন্তু কিছু মানুষের একপাক্ষিক মনোভাবগুলোই বৈষম্য তৈরী করেছে এবং তা অনাদি -অনন্তকাল থেকেই চলে আসছে। আগে আমাদের নানী -দাদীরা অশিক্ষিত, অজ্ঞ ছিলেন জন্য সবকিছু মেনে নিয়ে চলেছেন। তখন শুধু পুরুষের দাপট দেখা গেছে। যেই না আমরা নারীরা শিক্ষিত হলাম, অমনি শেকল ভাঙতে চাইলাম। আর তাতেই মুখোমুখি দাঁড় হয়ে গেলো নারী -পুরুষ নামের দুই মানবীয় সত্তা। যেখানে যার ক্ষমতা বেশি, সেখানে সেইজন দাপট দেখিয়ে চলেছে।

আপনি যেমন নির্যাতিত পুরুষ দেখাতে পারবেন, আমিও তেমনি অসংখ্য নির্যাতিতা নারী দেখাতে পারবো যারা- স্বামী দ্বারা, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দ্বারা প্রতিনিয়ত নিগৃহীত হয়ে চলেছেন। তাই আমার মনে হয়, এমন বৈপরীত্য বাদ দিয়ে হাতে হাত রেখে পাশাপাশি এগিয়ে চলার মনোভাব গড়ে তোলা উচিত। কেননা, সম্পর্ক যদি একটি রশি হয় আর আমরা যদি দুইপাশ থেকে সর্বস্ব শক্তি দিয়ে টানতে থাকি, তবে রশিটিই ছিঁড়ে যাবে, যেটা আধুনিককালে হচ্ছে। এর বাজে পরিণতি হিসেবে দেখা যাচ্ছে যে, বিচ্ছেদের হার বেড়েছে। স্বামী -স্ত্রীর মধ্যে বড় ধরণের মানসিক দূরত্ব তৈরী হচ্ছে। বিবাহ বহিৰ্ভূত সম্পর্কে জড়াচ্ছে এবং সেইসাথে একে অন্যের উপর দিয়ে কর্তৃত্ব দেখানোর চেষ্টা করছে। ফলশ্রুতিতে, সম্পর্কগুলো শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার না হয়ে অতিমাত্রায় ডমিনেটিং টাইপ হয়ে গেছে। সম্পর্কে ফাঁটলের আরো কারণ হতে পারে - অযাচিতভাবে একজন আরেকজনকে ছোট করা, হেয় করা, সঙ্গীর শ্রম /কাজকে অবমূল্যায়ন করা ইত্যাদি।

আমার মতে, একপেশে মনোভাব পোষণ না করে এমনভাবে লিখা উচিত যেখানে নারী -পুরুষ দুইপক্ষের ই কথা উঠে আসে, সুন্দর সমাজ গঠনের প্রয়াসে হাতে হাত রেখে দৃঢ় প্রত্যয়ে সামনে চলবার প্রেরণামূলক মেসেজ যেন তাতে থাকে।

যেহেতু নারীকে ছাড়া পুরুষ অথবা পুরুষবিহীন একজন নারীর জীবন কখনো পূর্ণাঙ্গ অর্থবহ হতে পারেনা, সেহেতু মুখোমুখি অবস্থান থেকে সরে আসা উচিত। ইগো, জেদ আর দাম্ভিকতা তো কেবল আমাদের থেকে ভালোকিছু কেড়ে নেবে ও নি:সঙ্গ করে তুলবে। একটুখানি কম্প্রোমাইজ আর স্যাক্রিফাইস যদি সম্পর্ককে সুন্দর করে তোলে, পরিপূর্ণ জীবনবোধের তৃপ্তি দিতে পারে এবং একটা সুন্দর গঠনমূলক সমাজ বিনির্মাণের সহযোগী হয়ে থাকে তবে কেন আমরা সেসবের চর্চা করতে দ্বিধান্বিত হবো !! আমরা সবাই সহনশীল আর সহমর্মী হতে শিখি, তবেই না আমাদের সম্পর্কগুলো সুন্দর হবে, সামাজিক বন্ধন আরো মজবুত হবে।

ফটো, গুগল থেকে সংগৃহীত
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১:৫৭
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×