somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাংসদ রনি, সংবাদ মাধ্যম ও জবাবদিহিতা

২২ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দুজন সাংবাদিককে মারধর করে হাসপাতালে পাঠানোর পরে গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, তাকে এই সাংবাদিকরা তাকে চারদিন ধরে অনুসরণ করছিল। তারা দশ বারোজন লোক নিয়ে তার উপর হামলা করতে এসেছিল, তখন তার অফিসের লোকজন তাদের মেরেছে।

একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে মি. রনি এই একটি ঘটনা নিয়ে নানা ধরণের ভাষ্য দিয়েছেন। একজন জনপ্রতিনিধি যদি ফ্রুটিকা টাইপের ক্রমাগত মিথ্যা কথা বলেন, তাকে কতটা বিশ্বাস করা যায়, জনপ্রতিনিধি হিসাবে তার গ্রহণযোগ্যতা কতখানি থাকে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়।

কিন্তু এখানে আর সেই প্রশ্নটা তুলছি না। বরং এখানে মি. রনির ব্যক্তিগত স্বাধীনতা আর সংবাদমাধ্যমে স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলব।

সংবাদ মাধ্যম অবশ্যই যা ইচ্ছা তা করতে পারে না। আরেকজনের অফিসের ভেতরে অবশ্যই তারা প্রবেশ করে সংবাদ মাধ্যম বসে থাকতে পারে না। কেউ কেউ বলছেন, তারা অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান তৈরি করছিলেন। কিন্তু অনুসন্ধানী মানেই তো যা ইচ্ছা তা করা না। তাদের্ও অবশ্যই এথিকস মেনে, অন্যের গোপনীয়তা, ব্যক্তিগত সম্মান মেনেই কাজ করতে হব।


কিন্তু গোলাম মাওলা রনির ব্যক্তিগত গোপনীয়তা এখানে কতটুকু? তারা কি তার বেডরুমে আড়ি পেতেছে? না। কি করেছে? তাকে অনুসরণ করেছে? তার অফিসের সামনে ক্যামেরা বসিয়ে রেখেছে।


মি. রনি যদি একজন সাধারণ ব্যক্তি হতেন, তাহলে এতেও তিনি অবশ্যই ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গর অভিযোগ তুলতে পারতেন। কিন্তু তিনি তো একজন জনপ্রতিনিধি। তার জবাবদিহিতার বিষয় আছে, স্বচ্ছতার বিষয় আছে। তিনি কি করছেন, তার কর্মকান্ড, ব্যবসা বানিজ্য, চলাফেরা কিন্তু জনগণ দেখতে চাইতে পারে।

তার বিরুদ্ধে যদি দুর্নীতির কোন অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই গণমাধ্যম সেটি পরীক্ষা করে দেখতে পারে।

একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে তাকে অবশ্যই স্বচ্ছতার মধ্যে থাকতে হবে। এবং সেজন্য ক্যামেরা তাকে অনুসরণ করবে, তাকে সবাই নজর রাখবে, এটুকু তো তাকে মানতেই হবে।

একটা সময়ে বাংলাদেশে জনপ্রতিনিধিদের ধরা ছোয়ার উপরে ভাবা হতো। কিন্তু সেই যুগ তো পাল্টে গেছে। সভ্য হতে হলে আমাদের সেটা পাল্টাতেই হবে।

এ কারণেই পাপারাজ্জিদের এতো অত্যাচারের পরেও লেডি ডায়না কিছু করতে পারেননি। মি. ক্লিনটনকে তার অনেক ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে জবাবদিহি করতে হয়েছে।

কিন্তু মি. রনি বলছেন, তার অফিসের সামনে ক্যামেরা বসিয়ে রাখায় তার সমস্যা হয়েছে। যদি ধরেও নেই যে, সাংবাদিকরা এথিকস ভেঙ্গেছে, তিনি তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে পারতেন। কিন্তু একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে কি তিনি তাদের গায়ে হাত (নাকি পা বলাই ভালো) তুলতে পারেন? এটাতো ছাত্রলীগের মাস্তানির মতো হয়ে গেলো না?? একজন আইনপ্রণেতা যদি নিজেই আইন ভঙ্গ করেন, তাহলে তিনি কি আইন তৈরি করবেন?

যতই গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগ করা হোক না কেন, কোন ভাবেই গায়ে হাত তোলার বিষয়টি যুক্তসঙ্গত করা যাচ্ছে না। সে শুধুমাত্র সংবাদকর্মী বলে নয়, কোন সাধারণ ব্যক্তির গায়েই কেউ হাত তুলতে পারেন না, আর একজন জনপ্রতিনিধি তো কখনোই নয়ই।

মি. রনির এই আচরণ শুধূ যে তার জন্যে ক্ষতিকর হবে তা হন, এটি সংসদ সদস্যদের ইমেজ, আওয়ামী লীগের ইমেজের জন্য সমস্যার তৈরি করবে।

আওয়ামী লীগের উচিত, এই বিষয়ে সরাসরি বক্তব্য দেয়া এবং ব্যবস্থা নিয়ে এটা পরিষ্কার করা, যে দলটি এ ধরণের কাজ সমর্থন করে না। সেটা করা না হলে, এর দায় কিন্তু শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের উপরই এসে পড়বে।

নির্বাচনের মাত্র কয়েকমাস বাকি আছে, এত কমসময়ে মানুষ এটা ভুলতেও পারবে না।


৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×