somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কলিকালের প্রজন্ম সমাচার

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৮:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হঠাৎ আমাদের হাতে যদি কালির কলম ধরিয়ে দিয়ে বলা হয় কলিকালের কল্যাণকর দিক গুলো নিয়ে লেখ তবে আজ আমাদের প্রজন্মকে হতাশায় হাতড়ে ফিরতে হয় । কি এমন কল্যাণকর দিক নিয়ে লিখব আমরা ? যেদিকেই দৃষ্টি যায় হতাশার ধোঁয়াশায় সব কিছু আবছা হয়ে আসে ।

আজ রাষ্ট্র ব্যবস্থা আমদের ক্যারিয়ার বা মাদকের নেশায় নিমজ্জিত করে সৃষ্টিশীলতা বিসর্জন দিয়ে অর্থের পেছনে ছুটতে তাগিদ দিচ্ছে । প্রতিবার পরীক্ষার মাধ্যমে ছাটতে ছাটতে উচ্ছিষ্ট বানিয়ে ছেড়েছে, তবুও যারা শেষ পর্যন্ত এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ন তাদেরো ছেটে ফেলা হচ্ছে বিশ্ব মন্দায় “ কর্ম খালি নাই ” সাইনবোর্ড দেখিয়ে । ছুটতে ছুটতে তাই পথের শেষে ক্লান্ত হয়ে হতাশ চোখে দেখতে হয় ভাগফল শূন্য । তাহলে সৃষ্টিশীলতা বিসর্জন দিয়ে এই ছোটার মানে কি ?

অন্যদিকে আবার গোদের উপর বিষ ফোড়ার মত প্রবীণরা তীর্যক ভাবে বলেই চলেছেন, “সবকিছু একদিন নষ্টদের অধিকারে যাবে ।” আমাদের প্রজন্মকে নষ্ট বলা হয় । কারন ?
আমারা নাকি উড়জাহাজে করে উড়ে এসে জুড়ে বাসা সংস্কৃতির দালালি করছি !
প্রবীণরা কি জানেন না কারা আমদের নষ্ট করছে ?
কারা আমদের পায়ের নিচ থেকে খেলার মাঠ ছিনিয়ে নিয়ে হাতে জয়স্টীক ধরিয়ে গৃহবন্দি করছে ?
কারা আমাদের মুঠোফোনকে ভাতের চেয়ে জরুরি বানিয়ে তার নিত্যনতুন সুবিধা দিয়ে আমদের নিশাচর বানাচ্ছে ?
কিসের স্বার্থে কারা আমাদের হাতের বই কেড়ে নিয়ে বন্দুক তুলে দিচ্ছে ?

প্রবীণরা জানেন এবং বোঝেন কিন্তু পুঁজিবাদের জুজুর ভয়ে ঋজু হন না । তাই দোষ বর্তায় আমাদের প্রজন্মের উপর ।
হায় পুঁজিবাদ কি বিশাল ভাবেই না আমাদের গ্রাস করেছে !
আজ আমাদের সংসদে আমাদের সাংসদরা যখন প্রত্যন্ত গ্রামে একটি ব্রীজ বানাবার স্বপ্ন পেশ করেন , তখন আমরা সেই সাংসদের ফিকশনের ফিউশনে পরে কনফিউশানে চলে যায় । কারন ব্রীজের সুখ সুবিধার ছবি ছাপিয়ে আমাদের চোখে ভাসে একজন মাঝির মায়াবী চেহারা । সে খেয়া পারাপার করে দুবেলা দু মুঠো ভাতের খোরাক জুটাতো, সে এখন ব্রীজে করে বয়ে আনবে বিলাস দ্রব্য । মাঝি পত্নীর কাছে দুদিন পর দুমুঠো ভাতের চেয়ে মেকাপ হবে বেশী কাম্য ।
পুঁজিবাদ শুধু আমাদের আপ্রয়োজণীয় বস্তু ক্রয়ের শিক্ষা দিচ্ছে তাই নয় বরং ছোটবেলা থেকেই আমাদের লোভী করে গড়ে তুলছে ।
ছোটবেলাতেই আমারা শিক্ষা পাচ্ছি,“ লেখাপড়া করে যে গাড়ী ঘোড়া চড়ে সে ।”
ভাবা যায় আমাদের জন্মের পর প্রথম পাঠ পড়ছি গাড়ী ঘোড়ার লালসায় ।
আজ পুঁজিবাদের দালাল প্রচার মাধ্যমগুলো আমাদের দেখায় বোরোর বাম্পার ফলন কিন্তু এত ফলনের পরেও কেন ফলাফল সেই দ্রব্য মূল্যের লম্ফঝম্ফ তা দেখায় না । তারা নিজেদের পকেটের দিকে তাকিয়ে আমাদের প্রচারের প্রদীপের অন্ধকারে রেখে কৃষকের পেটে লাথি মারতে দ্বিধা করছে না ।

অবশ্য একতরফা দোষ দিয়ে লাভ কি? আমরাও ধোয়া তুলসী পাতা নই ।
আজকাল আমরা আর রাজনীতি করি না বরং কষ্ট করে পষ্ট ভাষায় বলি রাজনীতি করে নষ্ট ও দুষ্ট লোকে । তাই ভোট এলে ভাতের অধিকারটাও এই নষ্ট এবং দুষ্টু লোকেদের কাছেই ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য ভর্তী করে আসি । আগে থাকতে ভেটো দেই না ।
আমরা শিক্ষা ব্যবস্থার দাপটে পাঠ্য পুস্তককে পাস করবার জন্য কণ্ঠস্থ করে ফেলি কিন্তু জানবার জন্য তার জ্ঞান কে আত্মস্থ করি না ।
অন্যায় দেখলে প্রবল আতঙ্কে তার প্রতিকার না করে অন্যকারো আঁচল খুঁজে বেড়াই আড়ালে থাকবার জন্য ।
আমারাই পুঁজিবাদের মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির জব কে রবের চেয়ে আরাধ্য করে ফেলেছি ।
পুঁজিবাদ একটি প্রজন্মকে নষ্ট হাবার যত রকম ইন্ধন দেয় তার প্রতিটি আমরা লুফে নিচ্ছি । কিন্তু আমাদের এবং একমাত্র আমাদেরি ক্ষমতা আছে পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার । প্রবীণরা যতি বলুক একটি সমগ্র প্রজন্ম কখনো নষ্ট হয়ে যেতে পারে না ।
তরুণ প্রজন্ম যে কি করতে পারে তার প্রমাণ আমরা বহুবার ইতিহাসের পাতায় দেখছি । বায়ান্নর তথাকথিত বালকরাই ভাষার সংগ্রাম করতে করতে দেশটাই স্বধীন করে ফেলেছিল , যদি তারা পারে তবে আমরা কেন পারবো না ? আমরা কিসে কম ?
আসুন আমরাও পুঁজিবাদকে পাশ কাটিয়ে পিঠ টান করে ঘুরে দাঁড়ায় ।
আন্দোলনে সংগ্রামে থাকি সবার সামনে , সত্যের সাথে ।
আসুন নিজের জায়গা থেকে নাভীমূল থেকে নাদ করি,

“জাগো বাহে কুন্ঠে সবাই”




১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×