রেজা,
শুধু নামটাই লিখলাম। এর আগে আর বিশেষণ লেখার প্রয়োজন মনে করছি না। কারন, যে শব্দটি রীতিগতভাবে এখানে লেখা উচিত ছিল বলে মনে করা হয় তা তুমি আমার কাছে সব-সময়ের জন্যই ছিলে । তাই লিখলেই কি বা না লিখলেই কি। বরং এখন তা উহ্য রাখাই শ্রেয়।
কাল একটা অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলাম তোমাকে নিয়ে। খুবই অদ্ভুত একটা স্বপ্ন। তুমি আর আমি একইসাথে থাকছি। যেটা বাস্তবে কখনোই হবার নয়। কারন, প্রথমত , আমাদের এই একসাথে থাকাটা কোনো সমাজস্বীকৃত প্রথা অবলম্বন অথবা বলতে পারো সংসার করা- ব্যাপারটা এমন ছিল না। বাস্তবজীবনে তুমি কখনো এই স্বীকৃতি পেতে চাওনি কিংবা পাওয়ার চেষ্টাও করোনি। তুমি চাওনি কোন বন্ধনে বাঁধা পড়তে। শৃংখলহীন জীবনই ছিল তোমার সবসময়ের কামনা। দ্বিতীয় কারনটা হচ্ছে, এখন আর এরকমটা হবার কোনোরকম সম্ভাবনাও নেই। সেই সুযোগটা তুমিই দূরে ঠেলে দিয়েছো। সময় থাকতে আমাকে কোনও বাঁধনে বেঁধে রাখোনি। আজ তাই অন্য কেউ এসেছে আমাকে তার সাথে বেঁধে নিতে।
স্বপ্নে আরো অদ্ভুত লাগলো তোমার একটা প্রশ্ন শুনে। তুমি আমার ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কে আগ্রহ দেখিয়েছিলে, যা বাস্তবে তুমি কখনোই করতে না। বরং সবসময় তুমি তোমার পছন্দ-অপছন্দটাকেই প্রাধান্য দিতে। তোমার আগ্রহ ছিল শুধু আমার সান্নিধ্য পাবার। আমাকে তোমার লেখা-লেখির একটা ইন্সপিরিশন হিসাবে তুমি দেখতে সব-সময়। আমাদের কথোপকথন থেকে তুমি তোমার লেখার বিষয়-বস্তু খুঁজে নিতে। সেই কথোপকথনে পার্থিব সব বিষয়ের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।
কিন্তু শুধু গল্প-কবিতা লিখে বা পড়ে জীবনটা কাটিয়ে দেয়া যায় না। অন্তত আমার মত খুব সাধারনভাবে বাঁচতে চাওয়া কোন মানুষের পক্ষে তো নয়ই। তুমি সমাজকে উপেক্ষা করে বাঁচতে পারো, সামাজিক প্রথাগুলোকে অবজ্ঞা করতে পারো; কিন্তু আমার পক্ষে এগুলো উপেক্ষা করে বাঁচা সম্ভব না। তাই হয়ত আমরা একসাথে পথচলার প্রতিজ্ঞা করতে পারিনি কখনো।
আমার পাশে আজকে যে দাঁড়িয়ে আছে, সে হয়ত তোমার মত করে কবিতা, গান লিখতে পারে না, হয়ত দৈনন্দিন জীবনের কিছু বাঁধাধরা হিসেব আর রুটিনমাফিক জীবন যাপন ছাড়া সে আর কিছুই পারে না ; কিন্তু সে যা পারে তা তুমি কখনোই পারতে না বা তোমার সেই ইচ্ছাও ছিল না। তা হলো, সে অন্তত আমার চাওয়া-পাওয়াগুলোর মূল্য দিতে পারে। একতরফাভাবে সে শুধু নিজের সুখটা খোঁজে না , আমি কিসে খুশি হবো অর্থাৎ আমার ছোট ছোট চাওয়াগুলো আর কাছে অবহেলিত নয় কখনো।
তোমার কাছে সবসময়ের জন্যই একথাগুলো ছিল একঘেঁয়ে। তাই আর কথা বাড়িয়ে তোমাকে বিরক্ত করতে চাই না।
জানি, তোমাকে তোমার মত করে থাকতে দিলেই তুমি ভালো থাকবে। তাই তুমি তোমার মত করেই থেকো, সব-সময়ের জন্যই ভালো থেকো।
তনুজা

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




