শাহবাগ স্কয়ারে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর প্রথম দিকে সরকার এবং বিরোধীদল কেউই ততো পাত্তা দেয়নি। কিন্তু দিন যত গড়াচ্ছে, এ আন্দোলন তত জোরদার হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে রাজনৈতিক দলগুলোই শুধু নয়, সারা বাংলাদেশের নজর এখন শাহবাগে। এরফলে রাজাকারের উত্তরসূরীরা নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এরকম কিছু অপপ্রচার এবং এর জবাব:
আন্দোলনকারীরা এ ট্রাইবুনালের উপর আস্হা রাখতে পারছে না এবং ট্রাইবুনাল ভেঙে দিতে বলছে।
এটা একটা ডাহা মিথ্যা অপপ্রচার। ট্রাইবুনালের বিপক্ষে এ আন্দোলন নয়। বরং ট্রাইবুনালকে যেন আরো শক্তিশালী করা হয় তার জন্য এ আন্দোলন। সরকার যেন কোন গোপন আতাত এই রাজাকারদের সাথে না করে তার জন্য এ বিক্ষোভ।
এটা সরকারের লোক দেখানো আন্দোলন।
যেই সব রাজাকারের উত্তরসূরীরা এই বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে তারা ভালো করেই জানে যে যারা এ আন্দোলন করছে তাদের বেশীর ভাগই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়া তরুন-তরুনী। যাদের বেশীর ভাগই জীবনে কখনো শ্লোগান দেয়নি। এ আন্দোলন ইতিহাসের কলংকমুক্তির আন্দোলন। এমনকি সরকার দলীয় কিছু নেতা এ আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করতে এসে উল্টো লান্ঞিত হয়েছে।
যদি এটা সরকারী লোকদের আন্দোলনই না হয়, তবে "জয় বাংলা" শ্লোগান কেন দেয়া হয়?
রাজাকারের উত্তরসূরীরা যে মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাস জানবে না এটাই স্বাভাবিক। জয় বাংলা আমাদের মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম শ্লোগান। যে শ্লোগান কন্ঠে ধারন করে মুক্তিযোদ্ধে ঝাপিয়ে পরে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এ দেশটা মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীন করেছিল। এই শ্লোগান কারো নিজস্ব সম্পত্তি নয়।
এই আন্দোলনের খাবার দিচ্ছে সরকার থেকে।
রাজাকারের দল যে এই ধরনের অপপ্রচার চালাবে এটাই স্বাভাবিক। যারা এ আন্দোলনে যাচ্ছে তারা তাদের সামর্থ অনুযায়ী চাদা তুলে খাবার খাচ্ছে। এমনকি এক রুটি দুইজন ভাগ করে খাচ্ছে। নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানাভাবে সাহায্য করছে। শাহাবাগের আশে পাশের হোটেল গুলোও অল্পদামে খাবার সরবরাহ করছে।
পাশে দু্ইটি গুরুত্বপূর্ন হাসপাতাল। এ আন্দোলনের ফলে রোগীদের নানা অসুবিধা হচ্ছে।
আরে রাজাকারের দল, তোমরা যখন নিজেদের বাপদের বাচানোর জন্য হরতাল দেও তখন কি রোগীদের অসুবিধা হয় না। যখন বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা কর তখন তোমাদের মানবতা কোথায় থাকে। আন্দোলন স্হল দিয়ে কোন অ্যাম্বুলেন্স যেতে চাইলে তাদের আন্দোলনকারীরা সহযোগীতা করে। এছাড়া রোগীদের যেন অসুবিধা না হয় তা নিয়েও চিন্তা ভাবনা চলছে।
এই আন্দোলনের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মকে নানাভাবে হেয় করা হচ্ছে।
জামাত-শিবিরের নব্য রাজাকারেরা এধরনের অপপ্রচার যে চালাবে তাতো জানাই ছিল। দেশের প্রতিটি ইলেকট্রিক এবং প্রিন্ট মিডিয়া প্রতিনিয়ত এ আন্দোলনের খবর প্রচার করছে। কিন্তু এধরনের কোন খবরই এখন পর্যন্ত কোন মিডিয়াতে আসেনি। জামাত-শিবিরের মিডিয়াগুলো ওত পেতে আছে এ আন্দোলনের ভিতর। এধরনের অপপ্রচারের কোন প্রমান তারা দেখাতে পারে নি।
এ আন্দোলনের কোন ভবিষ্যত নেই।
যখন ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধে সাধারন মানুষ ঝাপিয়ে পড়েছিল তখনও একই কথা বলা হয়েছিল। যদি এ অপপ্রচারে মুক্তিযোদ্ধারা যোদ্ধে ঝাপিয়ে না পড়তো তাহলে আজও এদেশটি পাকিস্তান থাকতো। এদেশের তরুন যখন জেগে উঠে তখন তারাই ভবিষ্যত ঠিক করে।