somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্যক্তিগত রুপকথা:'তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রণে'-(প্রথম পর্ব)

১৯ শে জানুয়ারি, ২০০৭ রাত ১২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

#(উৎসর্গ:করমচা-রঙ বউ কে..)

---'আমার সকল নিয়ে বসে আছি সর্বনাশের আশায়'..

ছোট্ট স্টেশন।বালক ট্রেন থেকে নামে;দ্যাখে -প্ল্যাটফর্মের এককোণে র বেঞ্চিতে বালিকা বসে আছে..

:পথে কষ্ট হলো?
::তেমন না;তবে আপনি অনেক দেরী করলেন..
:সরি!আরে,তুমি দেখি সত্যিসত্যি কলাবেণী করে আসছো!খুকী-খুকী লাগতেসে..
::হাসবেন না, প্লীজ!আপনিই না এভাবে চুল বাঁধতে বললেন..আমার বেণী শুধু খুলে যায়..
:আবার দেখি নেইল-পালিশ ও দিসো?
:উফ!আপনি না বড্ড জালান!
:পায়ের এই রুপার আঙটিটা আমি কিনে দিসিলাম না?হাতে পরে আছো কেন?
::কি করবো?হাতের আঙটি কিনে দেয়ার মতো তো কেউ নাই..

বালক-বালিকা পাহাড়ী রাস্তার ঢাল বেয়ে বেয়ে সমুদ্্রের দিকে নেমে যায়..কেউ কাউকে ছোঁয়না কিন্তু..সমুদ্্রের পারে বাঁধানো উঁচু পাথরে তারা বসে..বালক পা ঝুলায়ে দিয়ে সমুদ্্রের জলে
ভিজায়ে বসে থাকে..বালিকার ছোট্ট পা প্রশান্ত মহাসাগরের নাগাল পায়না..সে তার নরম হাতে ভর দিয়ে একটু উঁচু হয়ে পা দিয়ে জল ছোঁয়ার চেষ্টা করতে থাকে..

:নাও,তোমার জন্য এইটা আনছি..
::ওমা,চকলেট!আমি ভাবসিলাম,আপনি আমার জন্য হাতে বানানো কিছু আনবেন..(কপট রাগত: স্বরে)
:তুমি কি আনছো?

বালিকা হলুদ রঙের একটা খাম আগায়ে দ্যায় বালকের দিকে..তারপর একটু দূরে বসে চকলেটে কুটুস-কুটুস কামড় দিতে থাকে..বালক দুরুদুরু বুকে জীবনের প্রথম সুগন্ধী খামটা খুলে..সূর্যমুখী ফুল আঁকা একটা ছোট্ট হলুদ চিঠি,গোটা গোটা মেয়েলী অক্ষরে লেখা..
'..রাজপুত্র,আমি কি আপনার চুলে একটুছুঁয়ে দেখতে পারি?..'
বালক এক মূহুর্তের জন্য নি:শ্বাস নিতে ভুলে যায় কি?

আবার দু'জনে র ছোট ছোট গল্প,ছোট ছোট খুনসুটি চলতে থাকে..বালক অন্যমনষ্ক ভঙ্গিতে একথা-সেকথায় সায় দিয়ে যায়..অনেকদিন আগে হলুদ শাড়ি পরা বালিকার ছবি দেখে 'মুনিয়া পাখি' বলে ভ্রম হওয়ার কথা মনে পড়ে..চিম্বুক পাহাড়ের চূড়ায় উঠে কার জন্য যেন বুকে মোচড় দেয়া কষ্টের কথা মনে পড়ে..একজোড়া সস্তা রুপার নূপুর মনে পড়ে..একটা নিতান্ত সাধারণ,কিন্ত সাহসী প্রথম গোলাপ মনে পড়ে..
হঠাৎ বালিকার উচ্ছল চিৎকারে সম্বিত ফিরে পায়..

:দ্যাখেন,দ্যাখেন! রঙধনু..আমি দেশের বাইরে আসার পরে এই প্রথম রঙধনু দেখলাম..আপনি?
::আমিও।এই দেশের বৃষ্টির দেবতা বোধহয় খুব কৃপণ!বৃষ্টিই দ্যায় ভিক্ষার মতন,রঙধনু তো দূরের কথা..
:আজকে তাইলে একটা অদ্ভুত বিকাল,তাইনা?
::হমম।কিন্তু বেগুনীর চাপে আসমানীটা তো দ্যাখাই যাচ্ছেনা..
:রঙধনুর সব রঙ দেখতে হলে সেরকম চোখ লাগে..
::আমি তো ভাই ছোটবেলা থেকেই চশমাওয়ালা। কোনদিন না জানি পুরা কানা হয়ে যাই..
:সত্যিই!সো এক্সাইটিং!আপনি আসলেই শুভ্রের মত কানাবাবা হয়ে যাবেন?
::কেন?হইলে তুমি খুশি হও নাকি?
: অবশ্যই!শুভ্র যখন একদম অন্ধ হয়ে যায়,তখন সে চশমা খুলে রেখে রুপার হাত ধরে সমুদ্্রেনেমে পড়ে..রোমান্টিক না,বলেন?
::বিশ্বাস করো,আমি না চোখে কিছু দেখতে পাচ্ছিনা..মনে হয় এখনি অন্ধ হয়ে গেলাম..
:ধুর! ঢং করবেন না তো..

বালক-বালিকা প্রশান্ত মহাসাগরের পাড়ে কিছুক্ষণ এলোমেলো হাঁটাহাঁটি করে..আসলেই সে এক অদ্ভূত বিকেল!কন্যাসুন্দর আলোর(নাকি আলোসুন্দর কন্যার) প্রভাবে চারদিক বড় মোহময়,বড় প্রগলভ লাগে..বালক ব্যাকুল হয়ে সন্ধ্যার জন্য প্রতীক্ষা করতে থাকে.. নিজের অনিবার্য অন্ধত্বের জন্য মনে মনে প্রার্থনা করতে করতে..

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
২৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×