somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন বামপন্থিনী'র খোঁজে, , ,

০৮ ই মে, ২০১১ সকাল ৭:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একজন বামপন্থিনী খোঁজে রাখতে চেয়েছিলাম জীবনসঙ্গিনী করব বলে। বলা তো যায়না কখন মা বলে বসেন 'এখনি বিয়ে-টিয়ে করে ফেলতে হবে।পছন্দের থাকলে বল না হয় আমিই করে দিচ্ছি।'
মা পছন্দ করে দিবেন তাতে আপত্তি নেই কেননা তাতে আমার সে-জনা পরিবারের সবার কাছে ভালো-মন্দ যেভাবেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করুন না কেন আমি কিন্তু দায়ভার মুক্ত।
কিন্তু ভয় হচ্ছে তার 'পন্থা' নিয়ে। বামপন্থা,দানপন্থা,মধ্যম্পন্থা,উপরপন্থা,নিচপন্থা।

হয়তো দিন কয়েক পরে দশ দিকের নামে দশ আদর্শ পন্থা নির্দিষ্ট করিয়া প্রশ্ন করা হইবে আপনি কোন পন্থা'র লোক কেননা এই দশের বাহিরে আর কিছুই নাই আর যদিও কিছু থাকে তাহা কপটতা,অসারতা আর সংকীর্ণ মনের পরিচায়ক।একজন কোন দলের অথবা মতের হইবেননা তাহার অর্থ কি এই দাঁড়ায় না যে তিনি সকল দল-মত-আদর্শের উর্ধে উঠিয়া আমাদের এই সমাজকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাইতে উদ্যত হইয়াছেন।আমরা যাহা জানি তাহার বাইরে কিছু থাকিতে পারেনা, , ,

এখন বামপন্থিদের গালি দিলে ডানপন্থিরা বন্ধু ভাবে আর মধ্যমপন্থিরা স্বাগতম জানায় তাদের অনেকটা কাছে চলে আসায় আর মধ্যমপন্থিদের গালি দিলে কেউ গায় উদারতার জয়গান আর কেউ আউড়ে মৌলিকত্ত্বের শাশ্বত বাণী। আমি কোন আদর্শের তা এখনও বুঝে উঠতে পারিনি তবে আদর্শ দশ প্রতিষ্ঠিত হলে অবশ্যই নিজেকে কোন ছাঁচে তুলে গা ভাসিয়ে দেব সেজন্য প্রস্তুত হয়ে আছি। আমার আদর্শ নির্দিষ্ট করতে পারলে তার সনদ-টিকার জোড়ে অন্য কোন আদর্শে আশ্রিত মানুষগুলোর বারাবারি বা আদর্শচ্যুতির কথা মুখে এসে গেলেও বাকি অষ্টকোণের বাসিন্দাদের নানামুখী হ্যাচকা টানে বিব্রত হতে হবেনা।

যাই হোক নিজের আদর্শে জলাঞ্জলী দিয়ে পরের পন্থায় আস্থা রাখার সাফাই অনেক হল এবার আমার কথায় আসি।
মেয়েরা নাকি প্রচণ্ড আবেগি হয়। ঘরের লক্ষ্মী মেয়েরা বাইরে না গিয়ে কারোও উপর ভরসা করে আজীবন কাটাতে পারবে এমন কেউ একজন হয়ে উঠতে না পারলেতো ছেলের বিয়ে করার যোগ্যতাই হয়না। সংসারের জটিল-কঠিন হিসেব আর নিজের ভবিষ্যত নিরাপত্তার ভাবনা থেকে মুক্তি দেওয়া একজন মানুষ অনেক আবেগপ্রবণ হবেন এটাই স্বাভাবিক কিন্তু এই আমরাই বাস্তবতাজ্ঞানহীন এই মানুষদের থেকে মুক্তি চাই। সবাই মুক্তি চায় বিয়ের পর আর আমি চেয়েছিলাম বিয়ের আগেই এর একটি সমাধান।
ভাবলাম বামপন্থি মেয়েগুলো তাদের জীবনের আর সব অহেতুক আবেগ ঝেরে ফেলে দিয়ে গণমানুষের মুক্তির পথান্বেষণে আন্দোলন করতে এসে যে বাস্তবতার মুখোমুখি হয় তাতে একজন ঘরকুনো ছেলের থেকে ঢের বেশি বাস্তবজ্ঞান তার মাথায় বাসা বাঁধে।আর মহা-উদারতার শিক্ষাতো থাকলই।
বন্ধুদের বলে দিলাম একজন বামপন্থি মেয়ে খোঁজে দিতে যাকে নিয়ে ঘর-সংসার করব কিন্তু তাকে অর্থাৎ তার আবেগ-ভালোবাসা বাদে আর সবকিছুকে বিদায় জানাতে হবেনা। দ্বিতীয় বিভাগে সম্মান ডিগ্রি নিয়েছি তবুও বাঁধা-ধরা নিয়ম থেকে মুক্তি পেলে নিজে নিজে এইসব কাঠখোট্টা বিষয় নিয়ে কিছুটা মাথা ঘামানোর ইচ্ছে রয়েছে।

ঘন্টা না পেরুতেই ফোন করে বামপন্থি সঙ্গিনী পছন্দের কারন জানতে চেয়ে অস্থির করে তুলল সবাই মিলে। জানলাম ফেসবুকে আমার জন্যে বামপন্থি মেয়ে খোঁজে বেড়াচ্ছে বন্ধুরা।ভাবলাম এবার বুঝি একজন রীতিমতো সংসারি,বাস্তববোদ্ধা মেয়ে পেয়ে যাচ্ছি শীঘ্রই যার সাথে জীবনের সব সুখ-দুখ ভাগ করে যেমনটি হয় ঘনিষ্টতম বন্ধুটির সাথে।

আজ রাতের আড্ডায় মধ্যমণি আমি। সবাই সারাদিন হন্যে হয়ে অনেক বামপন্থি মেয়ের খোঁজ এনেছে। এবার সবার বর্ণনা শুনে আমাকেই বেছে নিতে হবে সবচেয়ে উপযোগি একজনকে।
আহ ক্লাসে পড়াশোনা,থিসিসের কাজ আর বামঘরানার পাঠচক্র ছাড়া আর কিছুতেই সময় দেয়না মেয়েটি, আমার দেখা ও মেয়েদের সাথে মেকআপ-লিপস্টিক এর কথায় কখনই যায়না, আমি যার কথা বলছি সে মেয়েদের সাথে কখনই আড্ডা দেয়না যেটুকু দেয় ছেলেদের সাথে সুতরাং অনর্থক আবেগের প্রশ্নই আসেনা, খুব সাধাসিধে চালচলন-পোশাকে আসা মেয়েটি একবারেই নিরহংকারি আর কেমনভাবেই টিফিনের সময়টা কাটিয়ে দেয় একটিমাত্র সিঙ্গারা খেয়ে, আমি তাকে যতদিন দেখেছি লেনিন,মার্কস'র বই ছাড়া কখনই দেখিনি আর যেভাবে যুক্তি দিয়ে কথা বলে কোন ছাত্র-ছাত্রি তো দূরের কথা কোন শিক্ষকও তার কথায় তর্ক বাঁধায়না, আমারটি স্টেজ বা তা না পেলে ক্লাসের বেঞ্চের উপরে দাঁড়িয়ে এত সুন্দর বক্তৃতা করতে পারে যে ডানপন্থি ছেলেগুলোও এসে ভিড় জমায় আর দেখতেও হেব্বি, , ,

কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে, আমি কার কথা শুনব।বললাম,
-তোরা যত গুণের কথা বলেছিস তার সব কয়টিই আমার একসাথে লাগবে।
এবারও দেখছি কারোও আগ্রহে কোন ভাঁটা নেই। বামপন্থি মেয়ে মাত্রই নাকি এই সব বৈশিষ্ঠ থাকে;কিছু কম আর বেশি।
একজন বললে,
-দোস্ত একজন আছে যার এই সব বৈশিষ্ঠই আছে, কোন রকম আবেগই সে বিশ্বাস করেনা আর রীতিমতো বামপন্থি। আমি চিন্তায় আছি তুই মানিয়ে নিতে পারবি কিনা, , ,
-এমনটিইতো চাইছি, মানিয়ে নিতে পারবনা কেন ভালোবাসা দিয়ে সব জয় করে নেব।
-না দোস্ত এই মেয়ে কোন ভালোবাসা-টালোবাসা বিশ্বাস করেনা।
-সে কী কথা, ফোন নম্বরটা দে দেখি ওকে বিশাস করাই___
-ওর তো ফোনই নেই। এটাও নাকি আবেগের বস্তু, একসময় মানুষ এইসব ছাড়াই চলত।
-আচ্ছা ফেসবুক একাউন্ট-টা তো বলবি?
-না না, এই মেয়ে ফেসবুক-টেসবুক এই জাতীয় সোস্যাল নেটওয়ার্কেও বিশ্বাস করেনা।
-তাহলে উপায়, , , !!??
-বস্তিতে,গার্মেন্টে,পতিতালয়ে ঘুড়ে বেড়ায়,মানুষের জন্যে কাজ করে।এছাড়া ডিপার্টমেন্টের ল্যাবেও কদাচিৎ দেখা মিলতে পারে। তবে পল্টনের কোন সভায় কিংবা মিছিল-টিছিল শেষে টি.এস.সি'র কোন চা এর দোকানে তাকে পাবেনা এটা নিশ্চিত।
-তুই একে বামপন্থি বলছিস কেন?, , , চল আজকের মতো ইতি,এ নিয়ে পরে ভাবা যাবে।

৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×